প্রশ্ন
রাজন্য রুহানি
গমের ভাঁজের
চিহ্ন শরীরে তোমার
তাই তুমি নারী?
নিষিদ্ধ গন্ধমে সিদ্ধ প্রাণের কুমার
আমি নই, কে তবে সংসারী?
..........
তাই তুমি নারী?
নিষিদ্ধ গন্ধমে সিদ্ধ প্রাণের কুমার
আমি নই, কে তবে সংসারী?
..........
ছায়াকথা
রাজন্য রুহানি
ছায়া তো
ছায়াই, কে
বলেছে এই কথা!
পা থেকে মস্তক, হাত থেকে মুখের গড়ন এতটাই ভিন্ন
আলোর প্রতিসরণে তা বিভিন্ন রূপে
শিল্প হতে পারে, ধরো হাতের কথাই-
আঙুলে আঙুল বুনে দেখো
জাগছে হেলেন, সাথে নিরোর বাঁশিটা
কিংবা মার্কসবাদের বিচিত্র পুতুল,
চে'র সাইকেল কিংবা হিটলারের চতুর গোঁফ।
পা থেকে মস্তক, হাত থেকে মুখের গড়ন এতটাই ভিন্ন
আলোর প্রতিসরণে তা বিভিন্ন রূপে
শিল্প হতে পারে, ধরো হাতের কথাই-
আঙুলে আঙুল বুনে দেখো
জাগছে হেলেন, সাথে নিরোর বাঁশিটা
কিংবা মার্কসবাদের বিচিত্র পুতুল,
চে'র সাইকেল কিংবা হিটলারের চতুর গোঁফ।
ক্লোজ এবং
লং শটের রোদে
হাঁটতে হাঁটতে কিছু একটা ধরার ভান করো
দেখবে সত্যিই ছায়া তা ধরে ফেলেছে
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হতে হতে, ছোট হতে হতে
তুমি যা ধরতে চাইছিলে, ব্যর্থ হলে,
কিন্তু ব্যর্থতা মানে নি ছায়া
শূন্যবৃত্তধামে।
শূলের উপর ছায়া রক্তাক্ত হয় না, তুমি হও...
হাঁটতে হাঁটতে কিছু একটা ধরার ভান করো
দেখবে সত্যিই ছায়া তা ধরে ফেলেছে
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হতে হতে, ছোট হতে হতে
তুমি যা ধরতে চাইছিলে, ব্যর্থ হলে,
কিন্তু ব্যর্থতা মানে নি ছায়া
শূন্যবৃত্তধামে।
শূলের উপর ছায়া রক্তাক্ত হয় না, তুমি হও...
দেহের
ব্যাসার্ধে
নভোফুল আঁকো, জলে নেমে নেমে
মীনদেশ খুঁজো, ছায়ার উপর ছায়া
চড়ে আছে, স্বচ্ছ, গোলাকার, স্রোতস্বিনী;
ছায়ারও ছায়া আছে বাতাসের মতো,
আছে বাষ্পীয় কাহিনী, অন্ধকারে।
সমস্ত ছায়াছবিতে রঙিন ছায়ারা প্রাণময়;
অথচ ছায়ার স্বরগ্রাম নেই, আছে অঙ্গমুদ্রা,
যার স্বেচ্ছা ড্রাইভার তুমি।
নভোফুল আঁকো, জলে নেমে নেমে
মীনদেশ খুঁজো, ছায়ার উপর ছায়া
চড়ে আছে, স্বচ্ছ, গোলাকার, স্রোতস্বিনী;
ছায়ারও ছায়া আছে বাতাসের মতো,
আছে বাষ্পীয় কাহিনী, অন্ধকারে।
সমস্ত ছায়াছবিতে রঙিন ছায়ারা প্রাণময়;
অথচ ছায়ার স্বরগ্রাম নেই, আছে অঙ্গমুদ্রা,
যার স্বেচ্ছা ড্রাইভার তুমি।
কখনো কখনো
এই ছায়াকেই তোমার ঘাতক করে তোলে
প্রতিবিম্বের ভয়ার্ত রোদ,
যে রোগের স্পর্শে
সকালদুপুররাত, কিছুই থাকে না।
প্রতিবিম্বের ভয়ার্ত রোদ,
যে রোগের স্পর্শে
সকালদুপুররাত, কিছুই থাকে না।
...................
নির্বাসিত স্বপ্নমন্থন
রাজন্য রুহানি
শেষ বিকেলের
বিষাদ ভেঙে ছুটে আসে রেলগাড়ি
মনের নগরে তখন ব্যস্ততা চরম
এই বুঝি এলো!
মনের নগরে তখন ব্যস্ততা চরম
এই বুঝি এলো!
সারাদিন
চোখে চোখে ঘোরে চাতকপাখি
যুগল পায়ের বন্দনা পথেরাই শুধু শোনে
ধুকপুক কলজে পায় না বল যে
আর ইঁদুরকেই বা কী দোষ দেওয়া যায়
মাঝরাতে বেজে ওঠে যখন তালপাতার বাঁশি
যুগল পায়ের বন্দনা পথেরাই শুধু শোনে
ধুকপুক কলজে পায় না বল যে
আর ইঁদুরকেই বা কী দোষ দেওয়া যায়
মাঝরাতে বেজে ওঠে যখন তালপাতার বাঁশি
বেহায়া বেশরম
মৃদু হাওয়া এসে রহস্য করে হরদম
চশমায় কুয়াশা প্রিয়মুখ ধোঁয়াশা
আর প্রকৃতিও যখন বিরূপ বসন্তের খেয়ালে
কী মেজাজটাই না খারাপ হয়ে যায়
মৃদু হাওয়া এসে রহস্য করে হরদম
চশমায় কুয়াশা প্রিয়মুখ ধোঁয়াশা
আর প্রকৃতিও যখন বিরূপ বসন্তের খেয়ালে
কী মেজাজটাই না খারাপ হয়ে যায়
ধুশ্ শালা, আমারই তো
পড়েছে দায়;
কাকতাড়ুয়ার মতো দণ্ডায়মান
কার জন্য এতোটা প্রতীক্ষা
সবুজ সাধের বাগানে?
কাকতাড়ুয়ার মতো দণ্ডায়মান
কার জন্য এতোটা প্রতীক্ষা
সবুজ সাধের বাগানে?
..............
বিজ্ঞাপনী আয়ু
রাজন্য রুহানি
বিজ্ঞাপনসভা ছেড়ে যেই না পথের ডানা ধরি, পায়ে পায়ে
উড়ি; কী
ভজনালয় কী তপোবন, সবখানে
ছড়িয়েছে সুর এই চতুর পবন। বণিক পদবি তার মর্মে মর্মে জানি, কূলহারা
জীবনের করি কুলখানি;
তবুও বিজ্ঞপ্তি ভরা আত্মার বিলাস, ঘটা করে বলে দেয়া আমি ধর্মদাস।
পূজনে ঈশ্বর তুষ্ট পিতামাতাভাই, আমিষ
ব্যঞ্জনে বাধ্য তেল থাকা চাই; তেলের প্রকার দুই এই কথা মানি, ভোজ্য আর
সেব্য নিয়ে চলে হানাহানি,
অগ্নিগল্প হাড়ি জানে আর জানে চিতা, পাকুড় গাছের এই জীবন ষড়রিপুর মিতা।
বিজ্ঞাপনী আয়ু গিলে হাঁটছে নাটক, চৌদিকে
নাটের গুরু পাতছে ফাটক;
কে যে দর্শক কে অভিনেতা, ক্যাঞ্জামরা সব্বে কয় কে-বা তবে জেতা! জেতা হরি
জেতা কড়ি জেতা নেতারাই,
জেতার খেতাব পেতে মাথাটা বিকাই।
.............
মৃত্যুর প্রচ্ছদ
রাজন্য রুহানি
অশ্বত্থের রোগে ভীত রোদ্দুরের কর্নিয়ায় মাঘের কুয়াশা।
ছানিপড়া দিন। মার্কিন থানের কাছে বসা আঞ্জুমানে মফিদুল। যে পোশাক পরিধেয় তার বুক
বরাবর ফাড়া। এখানে সেলাইযন্ত্র ও গারদ অভিন্ন বলেই পেট্টির যোজনা শ্রেয়। অনৈচ্ছিক
দৃশ্যে সবার মাথাটা গোল গোল সাদা। এত সাদা যে ভয়টা কাশফুলের ছোঁয়ায় কী এক মায়াবী
টানে চলে বিজয় মিছিল ঘোর। অবোধ বিজয়ে গোটা নিউরোনসেল গলে গলে মদ হয়ে যায় এমন আকাশ।
পানপাত্রের অভাবে মুখটা ঘষটে চলে মেঘমালা। চুষে চুষে খায়। স্তন্যদাত্রী যেন সমস্ত
শূন্যতার ঝি। এতিম বলেই ভাঙা সিঁড়ির কঙ্কালে এই ঝুরঝুর শ্বাস। শ্বেতরোগীর নিনাদে
তীক্ষ্ণ বরফের তালিম হাড়কম্পন খুব। উষ্ণ ঋতুর সন্ধানে পাহাড় ডিঙ্গানো ভোরটাই তুষার
ঝড়ের অভিশাপ। স্থানাংকের বাতায়নে উৎসবমুখর বন্দনা সন্ধিশান্তির কোনো মুচলেকা নয়।
সাদা চাদরে লটকে থাকা এই পুষ্পযাত্রা মূলত আত্মার সমর্পণ।
জালালি খতম ঘিরে ওড়ে পোড়া সংসারের ধোয়া। আমিন আমিন বলা সবার
মুখোশ চিংড়িরক্তে ধুয়ে গেলে চেনা হয়ে ওঠে প্রেতের চেহারা। ধবল বেহারা পাল্কি নিয়ে
আসবে ত্রিকাল ছিঁড়বার পর। করাল হয়েছে। বিড়ালের মতো পিটপিট মুন্সিরা তাকায় এদিক
ওদিক। সর্পজিহ্বাধারী। তাদের হা হয়ে থাকা পকেটে বেড়ে উঠছে আগাছাকাল। ইহকালের
মুজিযা ইন্দ্রজাল বুঝে হেসে ওঠে লালনের সাগরেদ। আশ্চর্য নজরে সবে চাওয়া চাওয়ি করে।
চাপা স্বরে ধমকায় কেউ। মুরতাদ, বিধর্মী, বাউদে, কলেমা পড়ো আর ফুঁ দাও। সহি সালামতে কেটে যাক ইহকালের আযাব।
............................
পথ
রাজন্য রুহানি
পথেরও পথ আছে, কিরণ যেমন কেন্দ্রে ফেরে না আর
মহাশূন্যের টানে, মৃত
পাখির মতন; পায়ের
গূঢ়ার্থে সেই ভগ্নাংশের ছায়া, কতদূর হেঁটে গেলে মানুষেরা মুসাফির, কতটা জিরিয়ে
নিলে খরগোসনিদ্রা চেনে ভাটির পৃথিবী, রাতকানা ভায়োলিন।
বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধা ইঁদুরের বিচিন্তা, গৃহস্থের
হাতে এটা ঘটলেই কূটনীতি,
সারি সারি পথের ভিতরে টুংটাং শব্দ তখন অারেক পথের ইশারা; ইঁদুরকলের
দিকে প্রহরীর চোখ, গোঁফের
উঠোনে হাসি, সাম্রাজ্যবাদের।