ড্যাফনে ওডোরা
সীমা
ব্যানার্জ্জী
টেক্সাস
বরফেতে ঢেকে আছে সারা পথ
ডাল থেকে ঝুলে আছে
জিগজ্যাগ কত কৌশল
স্তব্ধতা মিলেমিশে অজস্র হয়ে
ওতপ্রোত মিশে গেছে
রঙীন হৃদয়ে।
মৃদুভাষিণী ড্যাফনে ওডোরার সংজ্ঞাই ছিল
যৌবন সংহতি – প্রেম নয়।
বসন্ত উদ্যানে ঠাঁই হবে কিনা
তাই প্রত্যয় ।
অনর্থ নূপুরের কলরব
পূর্ণ থেকে উড়ে যাবে শূন্যতার তারে
নিছকসম্পর্ক শূন্য করে
পুরোনো ল্যান্টার্ন সেজে
হৃদয়ে হৃদয়ে ।
আমার প্রবাস
সীমা
ব্যানার্জ্জী-রায়
কি দেব তোমায় বল এ পোড়া প্রবাসে
চড়া রঙ ক্ষরা মাটি মূর্তি গড়ে না
গোপন প্রেমের মত কলমী লতাটি
শেষ কবে ছুঁয়ে গেছি মনেও পড়ে না !
এখানে মেঘের নাম রিশিসান গ্লোরী
মন খারাপের ছুটি কাটা গেছে তাই
গান লিখি গান শুনি, থাকাও একাকী
ছায়া নদী পাড় ভাঙে মানস খোয়াই ;
শুনেছি তোমরা নাকি এখনো গোঁয়ার
বনধ ডাকো, আশা কর পাল্টাবে দিন
কফি হাউসের সেই ছোপ ধরা ঘরে
আড্ডার ধোঁয়া মাঠে খেলছে শচীন...
জান, আমি ভাল নেই বহুদিন হল
যদিও ভালতে আছি রুচি সম্মত
ছুটি পেলে একবার ঘুরে যেতে পারো ?
যদি পারো, ঘুরে গেলে বড় ভাল হত......
***********
ফড়িং ডানা...
সীমা
ব্যানার্জ্জী-রায়
আমার জানলার বাইরে যে
ক্যামেলিয়া ফুলের গাছটা...
তাতে কুঁড়ি ধরেছে আনমনে
বরফ রঙ্গের রোদে ডানা ভাসিয়ে
দুটো ফড়িং শুধু ভালবাসাবাসি
করে দিনভোর।
আমার আনমনা চেয়ে থাকা
জানলার বাইরে দিয়ে...
বাতাস বয়ে যায়,
ভালবাসার গন্ধ নিয়ে।
একদিন আমিও ফড়িং ডানায়......
একদিন আমিও বরফ রোদে-
গা ভাসাবো তোমার দিকে চেয়ে ।
শুধু একবার বলো,
তুমি আমাকেই ভালবাসো।
সত্যি বলছি সোনা, কোনদিন আর
কিছু চাইব না......।।
শিল্পের স্পর্শ
সীমা
ব্যানার্জ্জী-রায়
খাদ্যের সামনে খিদে নিয়ে
দাঁড়ালেই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে -
প্রতিরোধের ভাষা শুধু ঠাস-বুনোন
অন্ধকার । আবার তৃষ্ণা নিয়ে
জলের মুখোমুখি হলেই মুখ
ফিরিয়ে নেয় অনন্ত স্বর্গ ।
আমিতো নিজেও আমার সাথে
কথা বলিনি – বেশ কিছু রাত্রিদিনমান ।
শুধু পিছটান কিছু দ্বন্দ্ব,
কিছু বা ঘূর্নিপাকের ছন্দ,
কিম্ভূত ভাষার সংযোগ
মেঘ বৃষ্টি রোদ শস্য হাওয়া
হয়ে মনের বানপ্রস্থে
এসে হুটোপুটি করে স্বভাবী অভ্যেসে ।
শিল্পের স্পর্শ পার হয় শুধু উষ্ণ নিঃশ্বাসে ।
*********************************
দ্বৈরথে থাকো
না তুমি
সীমা
ব্যানার্জ্জী-রায়
আজকাল দেখি তুমি কবিতায় আছো বুঁদ হয়ে
কত কিছু বলে চলো সরলরেখায় –
আঁকা বাঁকা শব্দেরা হেলেদুলে
স্বেচ্ছাচারী কিছু ভাষা বেঁধে নেয় ।
মনটাকে নিঙরে যা বলার তা লিখে দাও –
আশপাশ ভাবে শুধু ‘কঠিন বড়ো’ !
তুমি নিজে বোঝো শুধু সেই তাল লয়
আপনার হৃদি মাঝে চরম তরো ।
কখনো বা সুখে হাসো কখনো বা দুখে
কখনো বা আনমনে কখনো বা রুখে।
স্বপ্ন ঘেরা লেখাগুলো দেখো শুধু চেয়ে
কখন, কারা কি যে বলে গেল
সে নিয়ে দ্বৈরথে থাকো না ছেয়ে ।
তুমি পূজ্য তোমার কাছে অমলতরুর মত
বিশ্বাসময় সুরভির হৈ্মন্তিলতায় ।
লেখাগুলো ফিরে আসে না কখনো
উন্মুক্ত সদরে ভুলতে পরাজয়।
সাবলীল ভাবে উড়োজাহাজের মতো
শুধু বাকচিত্রহীণ কিছু কবিতা খেলে যায় ।