শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৬

রিয়া রিয়া



রিয়া রিয়া
স্ফুলিঙ্গ

একজন চিৎকার করে উঠলো
প্লাবন এসেছে।
আমি কাঁধ থেকে নামিয়ে রাখলাম
আমার মৃতদেহ।
কেউ বলল মুখে জল দাও।
কেউ বলল চোখ বোজ।
শ্মশানে সাজানো কাঠের চিতা,
লক্ষকোটি স্ফুলিঙ্গের
আহির ভৈরব।
ঊর্ণি গুহায় রোদ্দুর এসে পরেছে।
সেই তখন থেকেই ভিসুভিয়াসে
আগুনের নদী।
সেই তখন থেকেই পৃথিবী
কক্ষচ্যুত হয়েছে।



আগুন নদী
সময়ের আলিঙ্গনে আমি
মুহুর্মুহু শিহরিত।
আমিই ভরা বর্ষা
ক্রোধে নুয়ে পড়া যৌবন।
হাতের মুঠোয় নেচে ওঠে
আমার  নগ্ন কৃপাণ।
আলোও নই, অন্ধকারও নই
আমি সেই আগুন নদী
ছুঁয়ে এসেছি সুদুর দক্ষিনে
আরোরা অস্ট্রালিস।





শবের শহর
একদল মৃতদেহ চিৎকার করতে করতে
আমার দিকেই এগিয়ে আসছে।
উল্লাসে ঘুরে ঘুরে নাচছে তারা।
আমিও মিশে যাই মৃতের সারিতে।
আমার কোন জীবন নেই,
বুকের বাঁদিক থেকে হৃদপিণ্ডকে
উপরে ফেলেছি অবলিলায়।
বুকের হাড়ে শুনি কর্কশ এক
করুন মর্মর ধ্বনি।

আমি জ্ঞান হারাই,
চোখে উড়ে আসে ধুলো।
মৃত চোখে নিজেকে দেখি
আর দেখি সিংহের শিকার।
আমি পড়ে থাকি অশনাক্ত স্ফীত,
গলিত, অপ্রয়োজনীয় ভাবে।
আমার চোখে এসে জড়ো হয়
কিছু মরা মাকড়শা।
রাস্তায় ছড়িয়ে আছে মৃত্যু।
আর ধোঁয়া উড়িয়ে চলে যায়
কর্পোরেশনের দুর্গন্ধ ময় ট্রাক।





যাওয়া আসা
আমার জ্যোৎস্না বেলা শেষ।
এখন বুকের মাঝে অমাবস্যা।
এখন প্রস্তুত আমি, হাতে খোলা
তরোয়াল নিয়ে এগিয়ে এসো।
বেদনা যে তরোয়ালের ধার।

শ্মশানের মাঝামাঝি আমি
তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।
আমার ঠোঁট, আমার চোখ,
আমার আকাশ লাল করা
সর্বস্ব নিয়ে অপেক্ষা করছি।

হাতে খোলা তরোয়াল নিয়ে এসো
কষ্ট যে তরোয়ালের ধার।






নীল রোদ
অতল জলরাশির কল্লোলের মতো
অন্তরীক্ষ বিশ্বচরাচরে দাঁড়িয়ে
দুজনের ছাড়াছাড়ি হয়েছিল।

লাল মাটি, কালো পাথর সেদিন
কষ্টের শ্বাস নিয়েছিল।
মাটির তলা থেকে তাদের আর্তনাদ শুনেছি।

আমি আমার গায়ে জড়িয়ে নিয়েছিলাম
একটুকরো লাল মেঘ।
তোমাকে অনুভব করি আমি তাতে
একটা শঙ্খের ভেতরে আর একটি
শঙ্খের গোপন অভিসার।
ওপারে তুমি ছিলে, হলুদ, বেগুনি
রং এ ফুটে ওঠা স্নিগ্ধ উদ্যান।

এখন দুজনের রক্তস্রোত বয়ে গেছে
দুই মেরুর দিকে।
এখানে এখনও নীল রোদের আলো
বৃষ্টির কথা বলে।





ধুলো
এক কোণে পরে থাকা ধুলো।
চিরকালীন সেই বিনম্র ধুলো
যার নিজের ছায়াকেই ভয় পায়।
একটু আশ্রয়ের জন্য স্বপ বুনেছিলো।

একা এখন সে, তার সূক্ষতা,
অপরিসীম মসৃণতা তার গণ্য।
আর এক দুর্নিবার ধৈয. শূন্য

আয়তনের সাক্ষী হয়ে থাকে সে।