শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৬

মেহেরাব শাহরিয়ার আলিফ



মেহেরাব শাহরিয়ার আলিফ

জিজ্ঞাসা

সন্ধ্যায় পা ডুবানো জলে খুব ভার জমে,
চলেছে স্টিমার ঢেউ তুলে তোর মত কিছু হাহাকার।
বকের লোকালয়ে সব শুভ্রই কি কর্কশ?
.
নীল শাড়ির জমিন পাড়ে সুর্য্যটা
উঠেছিলো না ডুবেছিলো, জানিনা।
শুধু বুঝেছি সুর্য্যটা হৃদয় ছিড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলো
প্রতিটি ধীর সন্ধ্যায়।
আস্ত তুই বেরিয়ে গেছিস তখন সুযোগ বুঝে।
.
দোষ দিচ্ছি না তোকে, সত্যি।
আঁধখানা চাঁদে দু'খানা বসে থাকা যায় না।
এ আমি অনেক আগেই জেনেছি।
.
জেনেছি,
সন্ধ্যাকাল এক মৃতশিল্প,
ভৈরবী সুরে জাল বুনে,
আঁড়ি কেটে যায় দুইটি জীবনে।
.
শুধু জানতে চেয়েছি, ঈশ্বর
একই ছন্দের নিশ্বাস তালে,
দুটি জীবন কেন ভিন্ন হয়?
কেন ভিন্ন হবে?

২১.০৭.২০১৬ ইং





ত্রিভুজ

আশ্রয় কি তবে সকল কিছুর প্রতিপাদ্য-
দেহতেই উদ্ভাবন করে আশ্রম?
আর দেহ মরে গেলে কি হবে, কি থাকবে বেশি;
ক্ষুধাবোধ নাকি ভালোবাসা?
সিলেবাসটা একটু কমিয়ে দাও ঈশ্বর।
অহরহ সমুদ্রে আর এখন বিশ্বাস হতে চায় না।
পশুদের মত জীবিতই মনে হয়।
ভার্মেলিওন লাল খুড়াতো সুন্দর,
সস্তা, প্রেডিক্টেবল বিশ্ব ত্রিভুজ!

ক্ষুধা প্রেম, মৃত্যুর।
আবার
মৃত্যুর, ক্ষুধা, প্রেম।
.
১৯.০৭.২০১৬ইং





পাগলী

তোর এক চিলতে পাগলী ঘুমে যে
নেমে আসে অনেক প্রতীক্ষারা।
নাকের ডগায় ওঠা বক্র চাঁদে
চেয়ে দেখছি বারাবার,
কলম লিখে গেছে;
প্রস্তর বুকে জমা বেঁধেছে
কিংবদন্তি রুপকথারা।
প্রিয় ঘুম-
আজ তো সবাই বাড়ি যাবে।
আজ যে সকল বৃদ্ধাশ্রমে- ছুটি।
.
২৬.০৬.২০১৬ ইং





প্রতিধ্বনি

বেয়ে চলছিলো বিকেল কনক্রিট অট্টালিকায়,
শিরায় শিরায় যে এখানে শূন্যতা জমা।
এসবের মাঝে তুই দ্রুপদী নীল
ফেটছি মেঘের আকাশ আছিস।

তোর অস্তিরতা গুলো যে ছোঁয়াচে-
আমার জানা ছিলোনা।
সেই কবেই ভুলে গিয়েছিলাম
সবেকার সেই অসুখটা।
অতঃপর গুন্ডলি পাকিয়ে গুনেছি
কুন্ডলিত সব সমুদ্র মুহুর্ত।

মনে আছে তুই কটনক্যান্ডি মেঘ চেয়েছিলি,
আমি বলেছিলাম এক সাথে বৃষ্টি খাবো।
কুয়াশার মত সব গা ভিজিয়ে
না হয় পরে আমি একলা কাল্ভার্টে দাঁড়িয়ে
অসমাপ্তর গল্প লিখবো।
তখন সন্ধ্যার বুকে বেজে উঠবে প্রতিধ্বনি।

হ্যাঁ, কথা ফিরে আসে প্রতিধ্বনি হয়ে
কিন্তু প্রতিধ্বনি আর ফিরে আসবে না কথায়।   

০৭.১০.২০১৬ইং






আকাশের মৃতদেহ

ঘড়ি গুলোতে থেকে সময় আজ বিদায় নিয়েছে,
আমি প্রতিক্ষার অবসান চেয়েছিলাম।
চেয়েছিলাম একবুক তোর নি:শ্বাস।
চেয়েছিলাম আমার অস্তিত্বেকে তোর মাঝে।
মানুষ যে বাচেঁ শুধু অস্তিত্বে,
অস্তিত্বহীন মৃতদেহ মানুষ খুব তড়িঘড়ি করে ভুলে যেতে চায়।
তবে কেন আমার এই মৃতদেহ।
কেন এমন হবে যখন প্রতিটা মুহুর্তে আমি ভালোবেসেছি।
চাঁদটাও সেদিন কথা দিয়েছিল,
তুই বলেছিলি হাসতে শিখবি।
এখন শুধু বাষ্প আছে, উবে যাচ্ছি বাষ্পে।
নিখোঁজের পাতায় খবর হয়ত আসবেনা
আকাশের মৃতদেহ আর পাওয়া যাচ্ছেনা।
২৩.০৯.২০১৬ইং