শীলা বিস্বাস
আলোকিত জীবন
মাঠে ময়দানে রাস্তায় বিষণ্ণ সন্ধ্যায় চরম দুঃখেও
আমরা আলো ছড়াই
আমাদের গায়ের রক্ত গরম
আমরা সকলেই আলো
বিকিরন করি
আমৃত্যু আলো ছড়ানো আমাদের কাজ
এটা বৈজ্ঞানিক ও প্রাকৃতিক সত্যতা
আমাদের কাজ দিয়ে জীবন দিয়ে
কতজনের জীবনে আলো ছড়াতে পারলাম
আর নিজের জীবনকে কতটা আলোকিত করতে পারলাম
জীবনের মধ্যাহ্নে এসে এ প্রশ্ন যেন সর্বজনীন ।।
জীবনঅরণ্য
জীবনঅরণ্য ঋতুচিহ্ন দিয়ে যায়
শূন্য মধুকলস শূন্য হলে চাওয়া
দুহাত তুলে দাঁড়িয়ে থাকে গাছ
মাটি জানে বৃষ্টির কান্না হয়ে যাওয়া
অন্ধকারে হীরের দ্যুতি স্পষ্ট দৃশ্যপট
পর্দার আড়ালে হাপর টানে শব্দের জট
ভিনদেশি গুপ্তচরেরা বার্তা বয়ে আনে
লুকোনো চাবি সিন্ধুকে বন্দী কাব্যজান
উপর থেকে সম্পূর্ণ মনে হয়
ভেতর আমি কখন যে খান খান ।।
বিষাদযাপন
বাইরে কালো মেঘের অন্ধকার, সংযোগহীন
ভিতরে অন্ধকার আলোর খোঁজ বৈপরিত্যে
মাথার চুল এলিয়ে মেঘের বৈকালিক ভ্রমন
হরিৎবন অস্থির, মেঘে মেঘে চঞ্চলতা
জলের ছায়ায় একাকী মাছের খেলা
নীরবে গুমরে মরে আত্মবিস্মরণ
এমনি বর্ষা মুখর দিনে আত্মঘাতী প্রেম
ইচ্ছে- মন -কর্তব্যের ত্রিকোণ ছন্দে
দুটি প্রসারিত হাত ছুঁতে না পারার
তুমুল ব্যর্থতা লেগে আছে শিরায় শিরায়
জাম রঙা শাড়ির খুটে বাঁধা যন্ত্রণা
আজ শ্রাবনধারা স্নানে বিষাদযাপন ।
তৃতীয় নয়ন
আমার মায়ের কপালে তৃতীয় নয়ন ছিল
এখন আমার কপালেও দ্যাখে আমার সন্তান
সব মায়েদেরই দিব্য দৃষ্টি থাকে
বুঝতে পারে সন্তানের ভালো মন্দ,লুকানো সব কথা
তৃতীয় নয়নে জলের প্রকাশ থাকে না, ক্রোধও না
থাকে কেবল সাবধান বানী
মা চলে যাওয়ার ৭ বছর পরও শুনতে পাই
ও পথে বাঘ আছে,সাবধানে থাকিস মা ।
চিরহরিৎ দেশ
তোমার মনের চিরহরিৎ দেশটা
আমার কখন বেড়ানো হয়নি
তবুও জানি ওখানে চিরশান্তি বিরাজ করে
ওখানে আকাশে কোন দহন নেই
শুদ্ধ সঞ্চয় ভালবাসার ঘরে
এ বিশ্বাস আমার ভিতর প্রতিনিয়ত
শক্তি সঞ্চার করে উজ্জীবিত করে
একদিন আপন ভোলা হৃদয় সমস্ত বাঁধন আলগা করে
বাউল হয়ে যাবে সব সম্ভারের অংশীদার হতে।