শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৬

নুরুন্নাহার শিরীন



নুরুন্নাহার শিরীন
কাশবনের সনে উড়েছি শিখাময়।। 
       
           *************
এক।।
আশ্বিনের গন্ধ সবে সরতে লেগেছে ... 
তখনই হাওয়ায় হঠাৎ উৎসবের ধুম লেগেছে ! 
আমারও কাজ নাই তো কেবল খই ভাজা ... 
অসুখের জের টেনে চলা যতসব মরাহাজা ! 
এদিকে এষণাময় কাশবন ডাক দেয় শিখাময় -
কে কবে বলেছে আমাদের ঘর আশালতাময়।
সেসব ওড়াতে ভালোবাসি বলে বেঁচে আছি -
কার্তিকের স্বপ্নের মাঠে খেলি কানামাছি।
জানি খেলা ফুরাবে অচিরে -
তখনই হুটহাট চলে যাবো ঋতুদের বুক চিরে।





দুই।।
রোজই ভাবায় বটে দুনিয়াদারির বাহাদুরি।
তথাপি ভাবনা সুদ্ধো আশ্চর্য ওড়াউড়ি।
কিছু কম তো দেখিনি দখলদারির বাড়াবাড়ি।
তাইতো কুয়াশামাখা ধান্দাবাজদের সঙ্গ ছাড়ি।
আমাদের আজওতো স্বপ্নকাব্য লেখা বাকি।
অগ্রহায়ণ আসার আগে কিছু লিখে রাখি।
পৌষ কি মাঘ শীতের কবিতা ভুলে গেলে যাক।
যেসব আঁকেনি কেউ সেসব স্মৃতিতে থাক।
চলে যাবার অনেক পরে কারও পড়বে মনে।
মনের গভীর ভাষা কথা বলবে ছবির সনে।






তিন।।
কত ছায়াময়-মায়াময় ছবিদের মুখ।
শিকড়ে-শিখরে পল্লবিত জীবনানন্দীয় সুখ।
একদিন খুঁজেও পাবে না কেউ আমাদের আঁখি।
তাইতো এমন করে তারে কবিতায় আঁকি।
কবিতা না হয়ে সে হতেও পারে ঝুর্ঝুরে ব্যর্থতা।
শুকনো পাতারা বোঝে তার অলিখিত কথা।
কত যে হারানো সুর চুরমার হাওয়ায় ভাসে।
কিছু তার নতুন পাতার সনে ঘরে ফিরে আসে।
না ফেরা ব্যথার কথা কে আর হৃদয়ে রাখে !
সে কি ধূসর কালের পদচিহ্ন রক্তজলে আঁকে !






চার।।
এইতো একটু আগে আমারই হাত চিনলে না।
এসব এখন বয়সের ধর্ম  মোটেও দোষ না। 
আগে যা ভাবাও যায়নি তা স্বাভাবিক আজ।
এমন কি এমন যে কার্তিক ভুলে গেছো আজ।
তাই বলে কি কালের চাকা ঘুরবে না ! 
  তাই বলে কি হাড়েও ঘুণ ধরবে না ! 
পায়েপায়েই উধাও প্রেম শিখাময় ছিলোই না !
কোথাও কোনও প্রেম নিবেদন ছিলোই না ! 
এইতো এখন দিনলিপিকার কপাল লিখন।
এইতো একটুখানি কার্তিকের মতোন।







পাঁচ।।
একদিন সামান্যতম শূণ্যতাও শুনতাম ঠিক।
দেয়ালের টিকটিকি সব বলে দিতো ঠিক।
একদিন পাখিদের নীড়ে ফেরা দেখতাম খুব।
দিগন্তময় হৃদয় একদম শব্দহীন চুপ।
ষড়শ্বৈর্যে আশ্চর্যের সীমাহীন সমারোহ।
বহুদূর পেরিয়ে আসতো অপেক্ষিত আনন্দ।
বেদনার উপাখ্যান সেও অনন্য হৃদয়প্লাবী।
আজ আমরা তাহারে রূপকথা ভাবি।
দ্রুততম বেগবান সময়ের ঘড়ি।

তাহার হৃদয়স্পন্দন চলে যেতেযেতে পড়ি।