শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৬

গোপেশচন্দ্র দে



গোপেশচন্দ্র দে

তোমার জন্য

তোমার জন্য ভালবাসার নিমফুল নিয়ে আসবো মেঠোপথ ধরে
গুচ্ছকবিতার চারাগাছে রোজ জল ঢালবো।
তোমার জন্য ক্রিসমাসে পুডিং বানাবো
সান্তাক্লস হয়ে চকলেট ক্যাডবেরি বিতরণ করে মাখাবো দু'গাল।
তোমার জন্য সুকুমার রায় আওড়াব নিজেকে পাগলা দাশু ভেবে।
কাকাবাবু,ফেলুদা,টেনিদা,এমনকি শার্লক হোমসের চরিত্র সাজবো।
তোমার জন্য বোমারু বিমান থেকে ঝাপ দেবো তোমায় নিয়ে
প্যারাসুটে ঘুটঘুটে আঁধারে বেড়াব প্রশান্ত আটলান্টিক বীচে।
তোমার জন্য পৃথিবীর জড়াগ্রস্থ ডালপালায় পাতার সঞ্চার করবো
ব্যারিকেড কাঁটাতার পেড়িয়ে দুঃখিনীর হাতে দেবো ফলমূল।
তোমার জন্য ওয়ার্ডসওয়ার্থের বোন ডরথিকে নিয়ে আরেকটি ড্যাফোডিল লিখবো।
সরল কথার পদ্য লিখে পাথরের বুকে সবুজের আলপনা আঁকবো
শুধু তোমার জন্য....






মধ্যবিত্ত যন্ত্রণা

কিছু মধ্যবিত্ত যন্ত্রণার মাঝে ডুব দেয়
আমার বকের মত সাদা ধবধবে কবিতা।
চষে যায় মাঠঘাট,জলাভূমি,
কিছু মধ্যবিত্ত সুখ খুঁজবে বলে।
আমার ব্যাকব্রাশ চুলের পরে অনেকদিন চিরুনি পড়েনি।
যষ্ঠিমধুর সন্ধানে উড়িয়ে দিচ্ছি ছেঁড়াপালক কাশফুলের কাছে।
অনেকদিন সৌন্দর্যকে লন্ড্রীতে পাঠাই না
অভাব আমার মাঝে মাধ্যাকর্ষণজনিত স্বভাব হয়ে আছে বলে।
রাতের বেলা সকাল আমায় ঘুম পাড়ায়
আর সকালবেলা রাত আমায় আশ্বাস দেয় ঘুম আনবে বলে
বুকের কবিতার রক্ত ছিঁড়ে খেয়ে
ছায়ামারীচের বেশে ঘুরে বেড়ায় রাত।
আমি তবুও কবিতার রক্ত ছিঁড়তে দিইনা
অবিন্যস্ত উপাত্তের বিন্যস্ত ছক হবো বলে।







উত্তম-সুচিত্রা

সেলুলয়েডের ফিতার নাচনে সেলিব্রেটির কদর বাড়ে
জম্পেশ কথাবার্তা
স্বর্ণযুগের মহানায়কের বাচনভঙ্গি....
সিগারেট মুখে পুরে সেই টান ভুড়ভুড়
হারানো সুর....
আবেগ বাড়িয়ে তুলে রমা।
বাইফোকাল বুড়োর সাথেও দেখে রেব্যান চশমাও।
ঢোলাপ্যান্ট সাদাকালো,
ডেনিমের আধুনিকতার সমান তালে চাওয়াপাওয়া....
ইন্দ্রাণীর যুগলচাউনী আরো কত কিছু.....
সব যেন জীবন্ত কারুকাজ
প্রেমিকার দেখা নিতে বাইকে বাউন্ডুলে ছেলে এখনও
বলে ফেলে
পথে হল দেরি....







একটি বিবাগী জীবন

দুটো ভাঙা জানলার শার্সি
তেল চিটচিটে পর্দার হাসি
টিকটিকির ঘণ্টা ভুলে টিকটিক ধ্বনি
পোকামাকড়ের সাথে অভিযোজন।
পলেস্তারা খসে পড়ে
মাঝরাতে এফএম বাজে
দশ ফুট বাই দশের গুদামে
সাসপেন্স চলে
ভূত,প্রেত,ভ্যাম্পায়ার নৃত্য করে
একা শ্যাওলার গন্ধে থাকেনা ভয়
চাঁদের আলো জানলা গলে বিবাগী সুরে
মানুষটিকে সান্ত্বনা দেয়
সিগারেটের ধোঁয়া উড়ে
একফালি আলোর আঁচে।








যাও ঘরে ফিরে যাও

কে তুমি এখানে বসে আছো?
যাও,ঘরে ফিরে যাও
ওই রোদ্দুরের পানে ফিরে চাও
মনটাকে স্যাঁতসেঁতে করে রেখোনা
তাতে শ্যাওলা,ছত্রাক জন্মাবে।
ভিজে মাটির সোঁদাগন্ধটা নাও
বড্ড উদাসীন আর কাতর করে দেয়
কারুর জন্যে মনটা কাঁদিয়ে দেয়।
কিন্তু এই খানে
বড্ড বেমানান বসে থাকা
একটু হাস্যময় হও অবেলায়।
যাও ঘরে ফিরে যাও

ওই রোদ্দুরের পানে ফিরে চাও।