শাশ্বতী সরকার
বহুদিন পরে
বহুদিন পরে
তোমাকে আবার নতুন করে দেখলাম
বহুদিন পরে
তোমার কাছে দুদন্ড বসতে ইচ্ছে হল
যদিও আগের
সেই ভাঙাচোরা রূপ আর নেই
নেই সেই
এলোমেলো সবুজের ফাঁকে রূপোলি ঝিলিক
নেই সেই
কলতান মুখরিত ঘনিষ্ঠ পাড়া
তবুও তোমার
টানটান সুবেশী রূপের কাছে
বহুদিন পরে
অন্য এক মোহে
অন্য এক
ভালবাসা।
ভাঙন
ভাঙন চলতে
থাকে নিরবধি
আমাদের কোন
পুনর্বাসন নেই
আমাদের কোন
ক্ষতিপূরণ নেই
আমাদের কোন
সরকারও নেই
আমরা ভাঙন
দুর্গত...
গোত্র থেকে
গোত্রান্তর হতে হতে
খড়কুটোর মত
ভেসে যেতে যেতে
সারাজীবন
খুঁজে চলি
একটা নিজস্ব
জমি
ভালবাসা
যেখানে অমর হয়ে থাকবে।
ভারসাম্যের খেলা
কি অপরূপ
ভারসাম্য রেখে চল তুমি, কবি
সূক্ষ্ম
দড়ির ওপর গড়িয়ে চলা জীবনকে বাজী রেখে
সমস্ত
মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে
নিজের দিকে
টেনে নিতে নিতে
এগিয়ে চলেছ
গন্তব্যের দিকে
সমগ্রকে বাঁধতে
চেয়ে একের অস্ত্বিত্বকে
নস্যাৎ করে
দিতে পার নিমেষেই।
সাবাশ্
কবি! সাবাশ্!
আজ থেকে
আমিও তোমার শিষ্য হলাম
একলব্যের মত
তোমার সমস্ত জাদুবিদ্যা রপ্ত করে
গুরুদক্ষিণা
দিয়ে যাব তোমাকেই
ইতিহাসের
পাতায় তোমার-আমার নাম
লেখা থাকবে
রক্তাক্ষরে।
কতদিন যাইনি
কতদিন যাইনি
আমার পাহাড়ের কাছে
নৈসর্গিক
খাদের ধারে দাঁড়িয়ে
আমার
দুঃখগুলোকে উড়িয়ে দিয়ে বলিনি
তোমার ধী ও
নৈঃশব্দ দাও
আমি বুদ্ধ
হই ।
কতদিন যাইনি
আমার সমুদ্রের কাছে
আমার চোখের
সমস্ত নোনা জল মিশিয়ে
আকন্ঠ ভিজে
বলিনি
তোমার অতল
গভীরতা দাও
আমি শুদ্ধ
হই ।
কতদিন যাইনি
আমার বনানীর কাছে
সবুজকে শুষে
নিতে নিতে দুহাত বাড়িয়ে
প্রাণচঞ্চল
প্রকৃতিকে আলিঙ্গন করে বলিনি
তোমার সরলতা
দাও
আমি মুক্ত
হই ।
খেলাঘর
প্রতিজন্মে
খেলাঘর গড়া
বর-বৌ পাতান
সংসার হাঁড়িকড়া
প্রতি জন্মে
নব উন্মোচন
কদম্বতল রচে
নব বৃন্দাবন
প্রতি জন্মে
যেই দিয়েছে
চন্দ্রাবলী
ডাক
ভূমিকম্পে
ধ্বস্ত হৃদি
হয়েছে
নির্বাক ।