অলভ্য ঘোষ
আধার
আমাকে পতঙ্গের মত প্রলুব্ধ করে।নিভিয়ে দাও আঁচ।
পুড়ে মরতে নাদিয়ে। চাঁদপানা হেসে বাঁকা চাউনিতে
আহবান করে এনে মাঝ পথে ফেলে যাও ভোরে।
তারা জাগা রাতের প্রদীপ উসকে দিয়ে কেটে পড়ো চাঁদ।
এবার আমি জোর খাটাবো পাগল মেঘের মত।
দমকা হাওয়ায় ঢেকে দেব তোমার চাঁদ বদন।
মুহূর্তে আমি পূর্ণিমা গ্রাসকরি।ছাতার আড়ালে
চুমু খায় যেমন লোকে।
তোমার কোনও কথাই আমি শুনব না।
একটা কথাও দেব না আর বলতে।।
মুখটা হবে ব্লক আমার ঠোঁটে;
জিব কামড়িয়ে ধরবো আমার দাঁতে।
অক্টোপাসের মত আঁকড়িয়ে তোমায়
আমি আকাশের বুকে খেলব জলকেলি।
শিমুল তুলর মত আমার বুকে
মিশবে তোমার স্নিগ্ধ আলো আছে যত।
খোয়া যাবে তুমি এক উৎভ্রান্ত মেঘে।
ভেসে যাবে তুমি সন্দিগ্ধ চারটে উরুর ফাঁকে ।
এক লহমায় যখন আকাশকুসুম ভেলায় জল খসে পরে।
মহাবিশ্বের ললাটে তখনি কেবল তোমার আধার জুটবে।
তারারা তখন মিটিমিটি করে ফিচেল হাঁসি হাসবে।
বুঝবে তুমি বুঝবে.....তরোয়াল খাপে।খাপ তরোয়ালে
এমনি করে মিশবে।বুঝবে তুমি বুঝবে…..
মেঘকে-পত্র
প্রিয় মেঘ।
বৃষ্টি চেয়েছিলাম এই খরা দগ্ধ ভূমিতে।
ভাল বাসা চেয়েছিলাম মহাভারতের কুরুক্ষেত্রে।
শ্বেত শুভ্র মেঘ কুমারী ব্লক করেদিলে!
মেঘের আস্তরণে ঘনীভূত সম্ভ্রম ধুল কণা যেন ভুলনা।
বরফের কঠিন বর্মে যেন লক্ষ্মীন্দরের বাসর ঘর।
ক্ষুদ্র ছিদ্রও কি নেই যেখান থেকে আমার অভিশাপ
প্রবেশ করতে পারে তথাকথিত লৌকিকতার
কঠিন দুর্গে ঢাকা তোমার অন্দরে।
ধুলোয় নেমে আসতে তোমায় হবেই বৃষ্টি কণা
আমার উদম মাঠটার বুকে তোমার ওই মিথ্যে ভেসে থাকা
আকাশ ছেড়ে; কেবল একদিনের জন্যে নয় জন্ম জন্মান্তর
ধরে;
বার বার।তুমি গলে যাবে আমার চিতার ভস্মে।
বেহুলার মতো ভেলা ভাসাবে মেঘের আস্তে কুড়ে।
ইতি-
ভুবন ডাঙ্গার মাঠ
বৃষ্টি নামার আগে
বৃষ্টি আর অগ্নির মধ্যে ফারাক যদি তুমি জানতে।
বৃষ্টি খরা দগ্ধ ভূমিকে উর্বর করে শ্যামল করে।
তোমার দুচোখ টাই পুড়ে গেছে এই শহুরে জঙ্গলের দাবা নলে।
শুধুই কি চোখ পুড়েছে নাকি মোন ও!
না হলে তুমি বুঝতে আগুন আর জল পরস্পর বিরোধী।
বৃষ্টির ফোটা গুলকে আগুনের ফুলকি বলে ভ্রম হতোনা।
পুড়ে যাবে ভেবে নিজেকে গুটিয়ে নিতেনা ছাতার আড়ালে।
তবুও এই নাগরিক সভ্যতার বুকে একা ধ্বংস স্তূপে
বৃষ্টি নামার আগে যুগ যুগান্ত ধরে কবি দাঁড়িয়ে আছে
তৃষণার্থ চাতক হয়ে।
বৃষ্টি ও খোকা
বৃষ্টি বলল ঈশ ;\কি ছেলে মানুষী করছিস ;\ভিজে হলি কাক ভেজা ।
আমি বলি তাকে থাম\আর বাড়াস নেক দাম ।\গ্রীষ্মে পুড়ে হয়ে গেছি ভাজা ভাজা ।
বৃষ্টি বলল ঈশ ;\কি ছেলে মানুষী করছিস ;\সর্দি হলে বুঝবি ।
আমি বলি তাকে থাম\আর বাড়াস নেক দাম ।\তুই কি আমার নাক মুছবি !
বৃষ্টি বলল ঈশ ;\কি ছেলে মানুষী করছিস ;\মায়ের কাছে খাবি তুই বকুনি ।
আমি বলি তাকে থাম\তুই বাড়াস নেক দাম ।\অনা-মুখ তুই লোকে খুঁজে নেয় ছাউনি ।
বৃষ্টি বলল ঈশ ;\কি আজেবাজে বকছিস ;\আমাকে পেতে ভিজছে শহর কতকি !
আমি বলি তাকে থাম ;\তোতে ভেজে যত অধম \পশু ,পাখি আর মাঠ ,ঘাট প্রকৃতি ।
বৃষ্টি বলল তাই\করছিস বড় বড়াই ।\বুঝবি বটে অনাবৃষ্টি হলে ।
আমি বলি তাকে থাম \তোর দেমাগের বদনাম\ফি বছর জলে ভাসি বর্ষা এলে ।
বৃষ্টি বলল ঈশ ;\কি আজেবাজে বকছিস ;\এতো অপমান তবে আমি যাই চলে ।
আমি বলি তাকে থাম \ভাল লাগেনা রোদ্দুর আর ঘাম ।\তুই এলে শুধু খেলার সাথি মেলে ।
ছত্রপতি
________________________________
আমার বৃষ্টির ওপর ভরসা ছিল ।
ওদের আকাশের ওপর আস্থা ছিলনা ।
মেঘ গুর গুর ধুলো ওরা গা ঘেঁসে বেড়িয়ে যাওয়া
ঝড়
; কাকেদের ছুটোছুটি , দোকানির সাবধানতার
তাড়াহুড়ো , শবের মাঝে থেকে আমি সিক্ত ধৌত প্রকৃতির
সন্তান নির্বিকারে এগিয়ে চলেছিলাম ছাউনিতে । জানি
বৃষ্টি আমার অপেক্ষায় । সকলে ছুটছিল বলছিল ছোটো ছোটো
না হলে মরবে । আকাশের ওপর ওরা ভরসা হারিয়েছে ।
পথ তুমি সাক্ষী আমি ছিলাম অ-সচেতন ওদের থেকে ।
জীবন বিমার প্রত্যহ প্রিমিয়াম দিই পৃথিবীর শোধনাগারে ।
সুরক্ষার ছোঁওয়া ওরা বোঝে ছাতা । আমি জানি সহস্র কোটি
ত্রিপলেও মানুষের মাথা ঢাকবে না ; ছত্রপতির বিরাগ ভাজন হলে ।
আমি যখন স্নিগ্ধ শান্ত প্রশান্তির ছোঁওয়া নিয়ে এ কবিতা লিখছি
আমার নীড়ের চারপাশে আকাশ ভেঙেছে । বৃষ্টি ভিতরে ঝরছে
অঝোর ধারায় ; কবিতার শেষ নিশ্বাস যেদিন বেড় হয়ে যাবে
সেদিনও চাঁদ- সূর্য- তাঁরা -আকাশ ছাড়া শব্দ পাবেনা কবিরা ।
আকাশ তুমি প্রসারিত ; আকাশ তুমি অসীম ; আকাশ তুমি
দিগন্তে বিস্তৃত ; ব্যাপ্ত - ব্যাখ্যা ফুরিয়ে যাবে , আস্থা '' তুমি '' ।