বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০১৬

নুরুন্নাহার শিরীন



নুরুন্নাহার শিরীন
শ্রাবণজলের কবিতা।।
*************

এক।।
প্রিয় শ্রাবণ, তুমিতো জানো আজজাল
আকাশের মতিগতির নেইতো তাল।
দারুণ মেঘগুলিকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে
অনায়াসেই গুমোট আসে নিয়ে।
কে বোঝায় আকাশকে এই তামাশা ভালোনা -
কে তার ধরতে পায় মতিগতির ঠিকানা!
সাধ্য থাকলে দিতাম তারে জরুরী তলব -
যাতে সে তোমার শ্রাবণিয়া জলে করে কলরব!








দুই।।
এই দেখোনা আষাঢ় মাসেও সে জ্বালিয়েছে দেশ -
মেঘ যতই ঝরতে চেয়েছে সে পুড়িয়েছে বেশ।
কাঁহাতক এত ফাজলামো সহ্য হয় -
কাল বদলে গেলেও বদলায় চাঁদ বা হৃদয়!
এদিকে অদিনে ঠিক আকাশফাটা জলের তোড়ে -
কোকিলাদের বসতি দেয় লণ্ডভণ্ড করে!
কি বলি তাহার উল্টোপাল্টা খামখেয়ালির কথা -
আষাঢ়েও লেখা হয়নিগো একটা কবিতা।







তিন।।
ধকধকে দিনগুলি রাতগুলি বেশ হতো যদি আজ -
বৃষ্টিকাব্য হয়ে ভেসে যেতো ফেলে সব কাজবাজ।
যদি শুকনো নদীর ধারে তিরতিরে জলরেখা -
দেখেই হঠাৎ মনে আসে সেই সে প্রথম দেখা! 
প্রথমালোকের ছিপছিপে আভাময় ছবি -
আজও কারও কাছে সোনাঝুরি রবি!
কত কি বদলে গেছে সময়ের স্রোতে -
শুধু একটি কবিতা হয়ে আছে নদীটি কোনওমতে।







চার।।
অথচ এমনওতো হতে পারতো হঠাৎ -
না চাহিতেই দুয়ারে আকাশের করাঘাত!
বাতাস বলতো হেসে - কিগো, মন ভালো হলো?
আকাশও হৃদ্যতায় শুধাতো সঘন - আজ কি কবিতা হলো?
আমিও এমন দিনে তারে মন খুলে বলতাম  -
সাধগুলি ডানাময় ধূসর মেঘলা করে তুলতাম।
অথচ এমন হয়নাতো আর।
ওগো ও ঊষর মেঘ কি হলো তোমার!







পাঁচ।।
তাই কি শ্রাবণে -
পঞ্চতপা দগ্ধতার বনে -
প্রেমিক-প্রেমিকা ধায় ...
যেন কবেকার মুগ্ধতার গান গায়!
গানগুলি চারপাশে রেশ রেখে যায় ...
ছুটন্ত পৃথিবী তোমার কি তাহাতে তেমন আসে যায়!
শুধু শ্রাবণ চেয়েই কারও-কারও হৃদয়ের দিন যায়।
তাপিত জলের মতো চোখের অধিক চোখ ভেসে যায়।

  আষাঢ়। ১৪২২ বঙ্গাব্দ।

    ঢাকা। বাংলাদেশ।