শনিবার, ২১ মে, ২০১৬

সোনালি পুপু




অগর তুম সাথ হো
সোনালি পুপু
আমায় শতদল ফোটাও উত্তাপে
জীবন, হে মাদল বাদক
হৃদয় পদ্মে লাব ডুব তালে ছন্দ ফোটাও
তাল
তুমি তুলির টানে হিজিবিজি আঁকো
আমার এক জীবনের এলোমেলো ক্যানভাস জুড়ে
খসখসে আস্তরে আচমকা লাল
কালো বীভৎস মধুর রঙ রস
ভিতরে ছবির খোঁজে ইতি উতি মন
দাঁত চিপে লাইফ লাইনের দড়ি
কেটে বসা হাতের তালুতে জড়িয়ে রাখি
চাহিদা ছাড়িনা
ফোটাও ফোটাও ফোটাও আমায়
শতদলে
স্থির হয়ে ঋজু শিরদাঁড়ায়
আমি ইহাসনে ত্বক অস্থি মাংস
গলিয়ে বসে আছি জ্বলন্ত পরীক্ষায়
ফোটাও কোরক শতদলে
একটি একটি পাপড়ি আগুনের
উন্মেলিত হোক রক্তে প্রানে
বেদনায়
আনন্দে পূর্ণ আনন্দে
হর গম ফিসল যায়ে
আমি যে তোমারি ওপর
বীরাসনে স্থির হয়ে আছি






অভিজ্ঞান
সোনালি পুপু
কিছুতেই তুমি আর চিনতে পারলে না আমাকে
কোনো কথা আদরের ছিট
স্মৃতি গান ডাক নামে
মনেই পড়লোনা সে সময়
রিস্টোর হল  না তো মেমোরি
আমার  এই একলার মুঠোকরা আঙুলের ফাঁকে
থেকে গেল সোনা গলা  মউ
রিমঝিম শ্রাবণের হিরে পান্না চুনি
জড়োয়ার ঠুংরি ঝিলিক
বোকা হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম
মহারাজ দুষ্মন্ত সভায় আসীন।

টুপ করে পড়ে গেছে
নিখাদ সোনায় মোড়া দিন
গহীন অতল গাঙে কালো  জল
তলাচ্ছে গভীরে আগুনসোনার  আংটি
মহাকাল শ্যেন  দৃষ্টি রাখে
তোমার শকুন্ত পাখি
তপোবন ফেলে উড়ে গেলো
বহ্নি শিশু সাথে নিয়ে
যে বোয়াল ব্যাদিত গহবরে গিলে খেলো
অভিজ্ঞান  প্রেম
তারি নাম এখন জীবন।
তারি আঁশ গন্ধী অন্ধকারে
ডুবে গেলো হীরন্ময়
আকুল ইমন শুদ্ধ পূরবীর রেশ
ডুবে গেলো সব চিহ্ন  তার
অভিজ্ঞান শকুন্তলম।






একলা আরাম
সোনালি পুপু
একাকিত্বকে চাদরের মত জড়িয়ে রাস্তা  হাঁটি
সবাই পালায় একলা থাকার থেকে
আমি কিন্তু বেশ আছি
রাস্তা পথ চড়াই উতড়াই
দিব্বি আছি নিঃশব্দে
মানুষজন চারদিকে হাঁচোড় পাঁচোড় করে
পালাচ্ছে কেবলি
একলা থাকার  থেকে
আমি খাদের ধারে দাঁড়িয়ে কুয়াশা দেখছি
আমার কোন তাড়া নেই
পৃথিবীর যেখানেই  যাই
সেই তো একলা আমি
ঊর্ধ অধঃ ঈশান নৈঋত
ওকেই লণঠন করি হাতে
ওই একা একা থাকা
পকেটে রাখি টমেটোর মত টক মিসটি দুটো ছোটটো মুখ
সংসারের কাজ
তার পর পথ হাঁটি
একলা থাকা আমার হাত ধরে পাশে পাশে হেঁটে চলে।





ঘ্রাণ
সোনালি পুপু
আমি খুঁজতে যাচ্ছিলাম আমার মনেরমত শব্দ
কিছু মিষ্টি কিছু টক ঝাল এদিকে ওদিকে পড়ে থেকে থাকে যদি
চানাচুর ঝাল মুড়ির মত টুকরো আদরের কুচি
চিকচিক করে জ্বলে ওঠে  নিখাদ হীরের ফোটা
হেমন্তের ধূসর গোধূলি  মেঘ ছায়া  নিয়ে নামে
বাতাসে  সুরের গন্ধ অনুরোধ আসরের গান ছুঁয়ে আসে ছোট বেলা।
সন্ধ্যে নামা শাঁখের আওয়াজ ঘরে ধূপ আরামের ঘ্রাণ ফিরে আসি এসো রেশ
এসো প্রাণ পাপড়ি  মেলে বোসো পেতে রেখে দিয়েছি রিদয়
শিশু প্রাণ স্থির হবে বলে।জিরোই  দু দন্ড আজ
ভালবাসা  চাদরের নাম।






কাব্য
সোনালি পুপু
একটা ভিড় বাসের পাদানি তে আমার কবিতাকে দেখতে পেলাম।
কন্ঠার হাড় ফুটে উঠেছে ঘোর কৃষ্ণ চামড়ার নীচে থেকে
কোথাও চামড়া আর চওড়া হাড় ছাড়া বাড়তি কিছু দেখা যায়না।
উস্কোখুস্কো চুলগুলো শস্তার ক্লিপ দিয়ে তুলে কায়দার খোঁপা করার চেস্টাটা কার্যকরী হয়নি।
এলো মেলো চুলগুলো ঘাড়ে ঝুলছে।
কাঁখে ততোধিক রোগা কংকাল সার ঘুমন্ত মেয়েটা আঁকড়ে রয়েছে মাকে
আর মা খিমচে ধরে রয়েছে
সামনে দাঁড়ানো পুরুষ টির নোংরা স্যান্ডো গেঞ্জি
লোকটি অবাংগালি।কালিঝুলি মাখা এক গাল দাড়ি।
মাঝবয়সের ক্লান্তি সারা গায়ে।
মেয়েটির পরনে অজস্র শস্তার জরি মাখামাখি টকটকে লাল একটা শাড়ি।
অমন শাড়ি দেখলে আমরা হ্যাক থু বলি
কিন্তু বাস থেকে তাকে নামাচ্ছে তার আদমি যেন সে আর ওই হাড় জিরজিরে বাচ্ছাটা কোহিনুর হিরে মানিক
কি নির্ভরতা সংসারের সব রং মাখিয়ে দিয়েছে ধারালো কাল মুখ খানায়।
আমি অবাক হয়ে দেখলাম বিশ্বসংসারএর সব চেয়ে উজ্জ্বল রোমান্স তেরো  নম্বর বাসের সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে গেলো।