শনিবার, ২১ মে, ২০১৬

মঈন চৌধুরী





মেঘ
মঈন চৌধুরী

একটা কবিতা লেখার অনুমতি চাই মেঘ
অনেক কষ্টে আছি, অণু ভেঙে পরমাণু হয়,
এনাকোন্ডার মতো এক সাপ প্যাঁচায় আমাকে
ভেতরে এখন প্রচুর ইদুর উৎপাত করে।

আমার নিজের হাত হৃৎপিণ্ড চেপে
বসে থাকে চুপচাপ, ঝড় বয়ে যায় মেডুসার দ্বীপে,
মনে পড়ে জুলিয়েট এখনো কফিনে
আমাকে এখন একটা কবিতা লিখতেই হবে।

ক্যাপেলায় দেখি কবিতার আলো
কালো অক্ষর এসে আমাকে বাজায়,
তবে কি তুমিই অনুমতি দিলে কবিতা লেখার
না ছোঁয়া আকাশ থেকে জল হয়ে ঝরে?

এই মেয়ে, তুমি তবে মেঘ।





পরাবাস্তব থেকে বাস্তবে
মঈন চৌধুরী

একটা বিড়াল সমুদ্র দিয়ে হেটে হেটে
আমার কাছে এসে বলল ম্যাও!
আমি তখন ট্যাবাসকো সসে কবিতা চুবিয়ে
প্যারিসের ম্যাপ দেখছি। হঠাৎ
উত্তর মেরু এসে আমার পাশে বসে
আইসক্রিম খায়, উড়ে যায় শত চিল,
আর আমি দেখি চারদিকে বিবস্ত্র আগুন।

আগুন উসকে দিয়ে নিজেই পুড়েছি খুব
উড়িয়ে দিয়েছি ছাই আকাশের ঘরে
যে জ্বালা আগুন দিল, সে আগুন আমিই নিজে
এ সত্য বলার মতো ছিলনাতো কেউ।

এখন মেঘের খোঁজে বারবার চেনা-অচেনায় যাই
যদি তুমি মেঘ হও আমাকে বাঁচাও,
আমি তোমাকেই চাই।






ছবিহীন আমি বড় একা
মঈন চৌধুরী

পথ চলতে চলতে দূরে ঐ নদীটা পেরিয়ে কাঁঠালের বন,
তারপর তুমি। একটা হলুদ শাড়ি উঠোনে শুকায়,
মনে পড়ে যায় আজকাল ফেলে আসা ঐ দিন, ভাসা ভাসা
কুয়াশার মত স্মৃতিকণা যত ভীর করে পুকুরের পারে,
ভাবি, যারে ভুলি নাই তারে দৃশ্য চেনাবে কে? মনে হয়
সময় সত্য নয়, শুধু অপচয় টিকটিক ঘড়ি, মন শুধু একা।

যদি হয় দেখা আমাকে চিনবে তুমি? ভেসে তিতাসের জলে
তোমার কাজলে চোখে চোখ রাখা, আঁকাবাঁকা কামনায়
কতকিছু ভাবা, মনে আছে? তুমি কিছু ভাব নাই? আমি কি
একাই সময়ে একেছি ছবি! যদি তাই হয় তবে তুমি শোন,
আমি কিছু চাই নাই, শুধু চাই সময় শূন্যতায় পূর্ণতা এনে
তুমি মনে থাক, আর মনে রেখ, ছবিহীন আমি বড় একা।






দেখা
মঈন চৌধুরী

ওভাবে জানালা খুলতে নেই, মনে রেখো আবছা অন্ধকারেরও প্রয়োজন আছে। আমাদের সব স্বপ্ন আর আশার জন্ম কিন্তু আধো অন্ধকারের জোনাক আলোতে, এ সত্য তুমি মেনো। গহীনের সূর্য লালে হঠাৎ ইচ্ছের বিপ্লব থাকতে পারে, কিন্তু হৃদয় জাগানো আবছা জ্যোৎস্না আলোতেই থাকে শেষহীন সৃষ্টির নেশা, অসংখ্য কবিতা। তোমাকে নিয়েও তাই খুব সহজ ভাষায় অণু কবিতায় বলা যায়

সূর্য আল্ললোত মধু নগ্নিকা তুমি এক্স এক্স এক্স,
জ্যোৎস্নার তুমি ব্যঞ্জনা হয়ে এক্স ওয়াই জেড।





আজকের চাওয়া
মঈন চৌধুরী

তুমি যা ভাবছো, আমি কিন্তু তা চাইছি না
চাঁদের ছায়া সূর্যে পড়ুক কিংবা পৃথিবী চাঁদকে ঢাকুক
এমন এস্ট্রনমিক্যাল চিন্তা করার ক্ষমতা আমার নেই,
আমি যা চাইছিলাম, তা অনেকটা সন্ধ্যা মালতির মতো
দখিনা বাতাসে সুগন্ধ বিলিয়ে উত্তরে চলে যাওয়া।

আমি প্লেট টেক্টনিক্স জানা লোক
ভূকম্পনের বিরোধিতা করে আধুনিক হতে চাই,
তবে হ্ঠাৎ কখনো নাগরদোলায় দোলা খেলে মন্দও নয়
এমন একটা বিশ্বাস বুনে আমি গেছি মথুরায়
ফিরে এসে ছবি নয় ছবি আঁকি, ডুবে গেছি মিছে কবিতায়।