যাপন
চিত্র
প্রণব
বসুরায়
যাপন চিত্র (৬)
যাপনের পোষাকগুলি মালিন্য পায়, যদি তার
যত্নে ত্রুটি থাকে—তাই তার ধুলো ঝাড়ি, ভাঁজ খুলে
রোদ্দুরে দিই। আবার সাজিয়ে
রাখি যেখানে রাখার
#
তাও বুঝি লুকোনোই থেকে যায়
ছোট্ট রুমাল
যাতে কিছু দাগ ও পারসি সুবাস
মোড়া থাকে, সেই ঘ্রাণে
তীব্র হর্ষের লেস !
#
এ রকম যাপনও মনোযোগ দাবী করে
যাপন চিত্র (৫৭)
আস্তানা পাল্টে গেলে সব কী
বদলায়!
বইয়ের ফাঁকে থেকে যায় কিছুটা
সময়
থাকে ফুল, স্টাফ করা, হাল্কা মাদক
গন্ধের
ফেলে আসা দেয়ালে কোন টিপ ছাপ
নেই?
টিকটিকিটাও আত্মীয়ের মতো, টলটলে চায়--
পশ্চিমের জানলাটা সরে গেছে
শুধু,
স্কুল-বাড়িটা চোখের আওতায় নেই
আর,
সেই দিকে অন্য পাড়া
#
তবু তো যেতেই হয়, সেটাই নিয়ম
এ আঁধার বাধা দিক যতো
#
মনে রেখো, যাচ্ছো, কিন্তু সরছি
না
ঠিকানা ঠিক তালাশ ক'রে নেবো—
যাপন চিত্র (৩৪)
ও ভাঙছো—তবে ভাঙো, যেমন জলপ্রপাত
অশ্রু আমার লটকে আছে কাচের
কিনারায়
রাত বহে যাক চতুর্দোলায়, আমার তাতে
কী
সর্বনাশের ক্লান্ত রতির ঘোমটা
টেনে দি
#
এই তো আমার সরলপাঠ, তোমার
ধারাপাত
খেলতে আসুন, করুন দেখি
সহজ কিস্তিমাত !
যাপন চিত্র (৪৪)
জারুল গাছের নীচে বসে থাকি, দু’চারটি শালিখ
দেখি বিদ্যুতের তারে ইতিউতি
কথা কয়, হয়ত
প্রেমের বা কলহের—আমি দেখি ও বুঝি নিঃসঙ্গতা
একাই বহন করার...
চোখ বন্ধ করলে অন্য ছবি ...
পাহাড়ের গা বেয়ে
গড়িয়ে নামছে রাশি রাশি
কমলালেবুর ঢল,
হাত বাড়িয়ে ছুঁতে চাইলে তখনই
সরে যাচ্ছে
কাঁটার আড়ালে—এ যন্ত্রণাও সহনীয় নয়
#
নিকষ রাত্রি থেকে ক্রমাগত
বার্তাহীন থেকে যেতে হয়
যাপন চিত্র (৬২)
কিছুতেই বাধ্য থাকি না আর, কেননা
জেনেছি
সব কিছু ঘটে যায় অন্য নিয়মে, যেভাবে
কাপের নীচে পিরিচ থাকবেই।
শীতের সকালে
কে আর নদী সাঁতরায় বলো ? নিরাপত্তা
খুবই জরুরী—সেইমতো পায়ে পায়ে হাঁটা।
আমি দ্যাখো দূরেই রয়েছি, কেউ তবু
ভাবতেই পারে অবিশ্বাসের
ওভারকোট
কাঙ্খিত উষ্ণতা এনে দেবে !
হাসি পায়,
অন্দরে বধির হলে সব
গান ব্যর্থ হয়ে যায়...