শনিবার, ২১ মে, ২০১৬

মোকসেদুল ইসলাম




কবি
মোকসেদুল ইসলাম
...................
সভ্যতার নগ্ন বিছানায় শুয়ে সোনালী প্রভাতের আশায়
ধূসর আঁচড় একেঁ দিই বিপ্লবী কুয়াশার গায়
অতঃপর মুখোশটা খুলে রেখে মানুষ হয়ে উঠি প্রতিদিন

শহুরে মানুষ, অনেক বীরত্ব দেখেছি তোমার
উনুনে পুষে রাখা আগুনের ন্যায় মৃত্যুহীন চেতনায় কেটেছে জীবন
সাদাকালো চিৎকারে যদি মরে যায় সাহসের বীজ
তবে জেনে রেখ সে জীবন তোমার নয়, পশুর

কথার পিঠে আমিও কথা রাখতে পারি, ঘুমহীন চোখে আঁকতে পারি চন্দ্রঘড়ি
ঘুমশূন্য রাতে আমি কবি দীপ্ত শপথে জাগাতে পারি বিবেক




নাগরিক জীবন
মোকসেদুল ইসলাম

..........................
মাটির হাঁড়ির বিকল্প খুঁজি বলেই এসেছি তোমাদের নগরে
এখানে কেউ শোনে না সংকটে পড়ে থাকা মানুষের গান
নাগরিক ফ্ল্যাটে যাদের জীবন কাটে তারা বোঝে না
এখানে পশু- পাখি আর মানুষের মাঝে কতটা সখ্যতা হলে
একসাথে খাবার খুঁটে খেতে পারে

মেঘ দেখে যারা হাসে সুখের হাসি নীবর থাকার পরেও
কর্ষিত হাতে তারাই দোতরা বাজায় নাগরিক সুখের লাগি
তারা তো পাথরকুচির পাতা, মরতে জানে না সহজে
কালো রংয়ে আঁকে জীবনের সুখ আধার উঠোনে বসে




বন্ধন
মোকসেদুল ইসলাম

..............
তোমার উদোম পিঠের ঝুল বারান্দায় আমার নিত্য আসা-যাওয়া
এতো মিথ্যে নয়, সাধুর সিন্ধুক ভেঙ্গে মুক্ত করেছি বয়সী চাওয়া-পাওয়া
বিষাদ নয়, বিনাশ নয় আমাদের মাঝে ভেদাভেদ নেই কোন
রাশভারি এক অদৃশ্য বন্ধনে আমরা বন্দি হয়েছে যেন

যতোদূর তোমার চোখের সীমানা ততোদূর যাচ্ছি হেঁটে
তুমি শুধু জেনো, হাঁটা কষ্টের নয় বড়ই মধূর লাগে,
মেঘকে করিনি সঙ্গি আমি অসময়ে বৃষ্টি ঝরাবে বলে
আমার বিমূর্ত অঙ্গনে ওঠে যে চাঁদ সেতো ভালোবানার টানে

শব্দের শরীরে শব্দ সাজিয়ে লিখেছি যে সব পদ্য
সবগুলো যে তোমার তরে হয়েছে বিশাল ধন্য
চাইলেও তো টুঁটবে না বিনা সুতোয় বাঁধা বাঁধন
ভালোবাসা মুদ্রিত মূল্য নয়, যাবে না ধূলোয় মিশে




চোখের ভুল
মোকসেদুল ইসলাম

........................
তির্যক রেখা ধরে যে লোকটি হাটছে
সে ঘরের মানুষ নয়
বিচিত্র ফর্মের বিভাজনে পড়ে কাটছে যার জীবন
তার কাছে স্বর্ণভোর কিংবা দেবীর প্রণয়কে মনে হয়
সুদূর অতীতের মরীচিকা ঝড়
সবুজ রাত্রির ভেতরেই ঘটছে সব
প্রণয়
........
প্রেম
...............
বিস্মৃতি
এমনকি ফুটছে বসন্তের ফুল
যা কিছু দেখেছি সব ছিল চোখের ভুল
ধূলির স্রোতে ভেসে যাচ্ছে পথিকের কৃষ্ণকালীন সুখ
আমি মানতে পারিনা এসব বাণিজ্যিক পরিবেশ




অন্ধকারের নামতা
মোকসেদুল ইসলাম

....................................
কুয়াশায় গলে পড়ছে যে সুখ তাকে বাঁধাইয়ের চেষ্টা করিনি কখনো
নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও কিছু কষ্ট পুরে নিয়েছি বুক পকেটে
যে পথে হেটেছি সে পথেই চলে গেছে সব পূর্ব পুরুষ,
সম্পর্ক গড়া কঠিন জেনেও তৈরী করেছি ভালোবাসার ইস্কুল

এসো বন্ধু আজ জোছনা আগুনে পুড়ি
বুকের ভেতর পুষে রেখেছ যে জলমগ্নতার স্বপ্ন
সে এখন খুঁজে ফেরে তৃষ্ণার্ত সুখ
বন্ধু, আমিও ভুলে গেছি সব অন্ধকারের নামতা
আলোতেই এখন আমার সবচেয়ে বড় ভয়