মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২০

সঞ্জয় চক্রবর্ত্তী


সঞ্জয় চক্রবর্ত্তী

মানবিক অমানবিক

এমন উদ্দিপ্ত মানুষের চোখে ধ্বংস কতটা কাম্য?
ব্যঞ্জকে শ্রোতা উপসর্গহীন, নীরব ।
অসম্মত দন্ডিত নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র ।

অপারেশন থিয়েটার কিংবা মর্গ,
কাটাকাটি আর রক্তের খেলা ।
চোখের চামড়া ছুঁয়ে মেঘলা মরণ চাঁদমুখ দেখে ।

তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়ায় ভদ্রলোকের মতো সামাজিক হতে হয় ।
নিজের জন্য নয় ।

মতিভ্রমে শরীরের জ্যামিতি বাঁক নেয় বারবার ।
বাউল-ভিক্ষুক ব্যবহার ।

অঝোর দুঃখস্মৃতি একটা রক্তপাতের বিভ্রম,
মতিঝিলে কর্ণিয়া,
দৃশ্যটা অমানবিক, কাব্যের আঙিনায় অচ্ছুৎ ।

এমন অন্ধ অযাচিত সমস্যা সাক্ষী হয়ে ওঠে,
দিবারাত্রি নারী পুরুষের মৃত্যুমুখর পদযাত্রা ।

মনের পরাভূম ব্যতিক্রম ত্রিমাত্রিক ।
বনস্পতি এখানে পূর্ণ কম্পনের জল উৎস খোঁজে ।
চৌম্বক আকর্ষণে বাঞ্ছনীয় বক্রতার স্পর্শতল ।
চাকভাঙা সময়ের একক স্থির, মানবিক ।







সামাজিক সূর্যে জ্বলেছে

বাকলবিহীন স্মৃতিতে ত্রিরত্ন সাজানো অঙ্গুরী ।
তাল সুপারির পত্রে ফিনিক্সের ঠোঁটের নীলাভ ঢেউ মৃদু ।
আগুনের ভিজে ওঠা মহুয়ার নেশা,
বীজের মতোই অসংখ্য হরিণী খিদে, কচি ঘাসে ঘাসে ।

নিরক্ত যত ধবল
বাজ দুন্দুভি অথবা কোলাজ সারি গান ।
যন্ত্রনা আজ পাহাড় সমান ।

উলঙ্গ সুন্দরে চুমু, যেন যৌনতা নেই ওতে ।
কী অতলান্ত অভিসার, শরীরের নন্দন-রাতে ।
বিভাজনরেখা উৎসবে পরকীয়া-লোভে একত্র হয়,

বকুল মাঝির ঘরে একরত্তি কামনাটা তুলশী প্রদীপে নিভু নিভু,
কিছু বলো তুমি প্রভু, জেগে ওঠো যদি কভু
নষ্ট ছেলেবেলার গঙ্গামাটিতে ।

একটাই প্রেম তবে পাশ্চাত্যের নিয়মে ।
পলল মাটিতে যে-দেহ পড়ে থাকে,
তার দুর্গন্ধেও ভিন রাজ্যের মাছি ভন-ভন ।
অশোকের তলে বারবনিতার আলোকিত হৃদয় হরণ ।

দারুচিনি বন থেকে আসা বেনেবউ জবাবের সামাজিক সূর্যে জ্বলেছে ।
মধ্যরাতের আতরজান
আলতা মেখেছে অর্থহীন ঘুঙুর নাচিয়ে ঘোরা দুই পায়ে ।






প্যান্ডোরার বাক্সে কিছু নেই

এসো, তুলে ধরো সুন্দরী কাঠের সেই এসরাজ ।
তোমার পাপড়ি ইতিহাস
মেঘের অজস্র কান্নাভেজা আওয়াজ লিখে রাখে ।

সেখানে সভ্যতার ধুলো জমলেই সব স্তব্ধ ।
বর্মে ঢাকা ধর্মের আয়োজন, তৃষিত গিরগিটি ।

ডোডো অথবা অস্ট্রিচের মতো বিলুপ্তপ্রায় বর্তমান
ভেসে যাবে ।
খেলা অবশিষ্ট রয়েছে এখনো, শূন্যস্থান খাঁ খাঁ ।
চিল শকুনের ব-দ্বীপ বাহিনী জেগে উঠলেই পুরোদমে শুরু হবে ।

অন্ধকার অনাথ, তার শেষ হওয়ার তো কিছু নেই ।
তুমি শিক্ষানবিশি, শুধুই খাদ্য ছিনিয়ে নিতে শিখেছ ।

উত্তরে বলবে : "বহু বৎসর খিদে নিয়ে বেঁচে আছি"।
জানি, সব জানি ।
এখানে গানের সুর ভেঙে টুকরো টুকরো করে তাদের লাইনে দাঁড় করাও ।

সাম্রাজ্যের সাজানো ঘরটাকে দূর থেকে দেখো ।
ভুলে ভরা চাঁদের অস্খলিত কোনো গর্ভ,
স্নায়ু ছেঁড়া রক্তাক্ত নিথর আদিম জীবন ।

কচিহাতে তোলা দায়িত্বের গোলাপটা বেঁচে থাকবে নিশ্চিত ।
এতটুকু বুঝতে কী অনন্ত সময় চলে গেল ?

ওগো রূপ সোহাগের মনুয়াপাখি,
আর কত বোকামি মস্তিষ্কের শুকনো ঘিলুতে আগুন জ্বালবে ?
প্যান্ডোরার বাক্সে কিছু নেই ।