মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২০

স্বাগতা ভট্টাচার্য্য


স্বাগতা ভট্টাচার্য্য

সময়ের কারিগরি

কেমন যেন আবছা লাগে তোমার কাছে আসা
কেমন যেন ঝাপসা তুমি ঝাপসা ভালোবাসা
কফির কাপ ঝুল বারান্দা একই রকম আছে
পুরোনো আমি হারিয়ে যাচ্ছি সময়ের কাছে।
বুকের মাঝে তিলটা চেনা চেনা ভুরুর ভাঁজ
খাতা কলমে আঁকিবুকি অচেনা লাগে আজ
মেঘটা যদি কলম পায় লিখবে সে আজ গদ্য
ভুলেই গেছে লিখতে বোধয় পদ্য অনবদ্য ।








মাঝখানে কাঁটাতার

যেতে যেতে থমকে দাঁড়াই
এ পথের শেষ কোথায় জানি না
পিছন ফিরে তাকাই
দেখি কোপাই নদীটা এখনো শুয়ে আছে
সোনাঝুড়ির পায়ের কাছে
আল পথে ভেসে আসে বাউলের সুর।

সব তো একই রকম আছে!
শুধু তুই নেই
আর নেই সেই মন খারাপ করা দুপুরে
কচুরিপানার ঝোপে ডাহুকের ডাক।

আমি চলতে থাকি
নৌকা ভেসে যায় ভাগীরথী থেকে পদ্মায়
নোঙর করে এক অজানা অচেনা ফেরি ঘাটে
আমি থমকে দাঁড়াই
পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি
চাঁদটা দুধের বাটি উপুর করে
হেসে গড়িয়ে পড়ছে শুকনো চড়ায়
ওপারে রাত অন্ধকারের চাদর জড়িয়ে
দাঁড়িয়ে আছে একা
পাংশু মুখ ছলছল চোখ
ঘাসের শরীর ভিজে যাচ্ছে ক্রমাগত
সেখানেও তুই নেই
কোথাও তুই নেই।

আজানের সুরে তোকে খুঁজেছি বহুবার
খুঁজেছি শঙ্খের ধ্বনিতে
পাইনি কোথাও ।

দূর থেকে দেখেছি একা পড়ে আছে
আমার সাড়ে তিন হাত জমি
হাতে হাত রাখার আগেই
রক্তের অক্ষরে লেখা হয়ে গেছে
কাঁটাতারের ইতিকথা ।








ধীর লয়ে এসো

আমারও তো লাগবে কিছুটা সময়
এসো তুমি ধীর লয়ে তাড়া নেই কোনো
সময়ের ব্যবধানে জমবে ধুলো পাপসের গায়ে
আমারও তো লাগবে কিছুটা সময়
সব কাজ সেরে এসো তুমি ছুটে কোনো অবসরে
জোয়ারের জলে কিছু নুড়ি বালি ভেসে যায় জানি
তবু আশা বুকে নিয়ে পড়ে থাকে পলি
তৃণাঙ্কুরে নতুনের ঘ্রাণ নেবে বলে
সব কাজ শেষে কিছুটা সময় রেখো
তোমার আঙুলের ভাঁজে
দু জোড়া শুষ্ক ঠোঁটে লিখে দিও
প্রেমের স্বরলিপি ।
সব কাজ সেরে এসো তুমি ধীর লয়ে
কোনো অবসরে ।