কবিকল্প
অদিতি চক্রবর্তী
কবিরা মানুষ
নয়, মানুষের
মতো/
অভিনীত
সোয়েটারে বোতাম নামক এক ঘূণপোকা ঘর/
সম্ভাব্য
প্রকল্পে ঠোক্কর দেওয়া এক গাল দাড়ির দিব্যি।/
স্তন খোঁজ
জারির হাঁটুভাঙা ভবঘুরে পাখিচোখের দল/
মায়ের শরীর
ভেঙে আলো নিয়ে আঙুল নেড়ে ছিল/
আঙুল ডুবিয়ে
ছিল কবির কোঁকড়া চুলে একদিন/
অজাত ভোরের
ঘুমে ঢুলেঢুলে শব্দ বীজ পুঁতে চলা কবিকে বুঝিয়েছিল,/
'পণ্ডশ্রম
ছাড়া বসন্ত আসে না কোনদিন।'/
নিজগর্ভে
জন্ম ধারণ করা কবির মাথা সেই থেকে পা হয়ে যায়/
জঠরে ঘুঙুর
নাচে, জঠরে
ঘুঙুর বাজে,বিভোর
জাগায়।/
মৈথুন শেষ
হলে ঝুরঝুর খসে পলেস্তারা/
কুর্চিপাড়া
হারানোর কপালের ভাঁজ লেখে চিত্ত-ঘরামী/
কবিতার
ফিচলেমি,আর্তনাদ,ভৎসনা, দেহস্বপ্ন , গর্জে ওঠে
যত/
সহবত বলে
চলে-
কবিরা মানুষ
নয়, মানুষের
মতো।/
হ্যাংলাপুরুষ
অদিতি চক্রবর্তী.
এই যে তুমি
বধ্যভূমি পাঁজর ভাঙা
রোজ আদরে ঐ
সুদূরে আমায় কেমন লালন করো
ধারণ করো
পালন করো ঝগড়া করো তীব্র রাগে
তবুও জানাও
অন্ধতা সুখ
বায়না কর
বন্ধুতা মুখ
বীজের রসে
আপ্ত করো
গুন্ গুন্
গুন্ সুর -সোহাগে
।
এই যে তুমি
দিনযাপনের ফুল-বাতাসা
হৃদপ্রবালে
ভীষণ মায়ায় -
ভুল বয়সের
কষ্টস্মৃতি চোখের তারায়
অনন্তকাল
বুকের ভেতর শীতলপাটি
পা হেঁটে
যায় পিছন দিকে
মনে করায়
সেই সেদিনেরশেষকথাটি ।
এই যে তুমি
আমার সাথে পাড়ি জমাও বাউণ্ডুলে
বিষুবরেখার
নোনতাজলে
এরপরে সব
ব্যক্তিগত,
মুখফুটে আর
বলব কত ?
স্বপ্ন বুনে
মরণ ডাকি,
হ্যাংলা
পুরুষ আমার নাকি ?
ইচ্ছে যত দশ
আঙুলে
আগুনজ্বলা
পলাশফুলে
সবটুকুতে লেপতে
থাকি
তীর্থে
যাওয়ার পথের মাটি ।
সোনা বলে
ডাকলে যদি
হঠাত জেগে
চমকে ওঠো
রঙ-বেরঙের পাথর
সাজাই ,
বারণ ঢালি
এক-দু'মুঠো ।
তবুও কখন
ফুল ফুটে যায় ইচ্ছেচারায় !
ফোঁটায়
ফোঁটায় জল মেপে যায়
শাশ্বত
প্রেম চাতকমুখী
এই বুঝি ঢের
এতেই সুখী
একটা জীবন
কাঙাল ভীষণ পাপড়ি খোলে
অবাক সকাল
রোদ গোধূলী
ভুল ঠিকানার
জারুল তলে
পাতায় পাতায়
বাস্পমোচন উতল হাওয়ায়
তোমায় যে
চোখ বেশতো চেনে
বয়স আঁচে
নিভু নিভু পলতে কাঁপায় ।
প্রেম যে
হাঁপায় হ্যাংলাপুরুষ
বুকপকেটে
সুখ পুষে যাও সবপেয়েছি চোখের তারায়
দুই কুড়ি এক
বছর ধরে ধিক্ কিনেছো,
কি আসে যায় !
চিলেকোঠার
প্রেমের তুফান , বৃষ্টিফোঁটার
অলস সে ভোর
কোঁচর ভরা
ফুল কুড়িয়ে ফুলশাখাতে মনের দোসর
হাজার ফুলের
নির্যাসে আজ
ধিক্ দিয়েছি
বাদল মনে
আর জনমের
আশায় আছি
তখন না হয়
নোঙর - কাছি
আমার তুমি
হ্যাংলাপুরুষ
ওগো ... আমি তোমার
অলক্ষুনে!
চিতা
অদিতি চক্রবর্তী
একখানি চিতা
জ্বালিয়ে রেখেছে মন
ধিকিধিকি
করে রোজ সে আগুন খায়
কখনো নিভু
কখনো বা দাউদাউ
জানিস্
চিতাও শান্তির জল চায়!
কান পেতে
শুনি আগুনের প্রিয় নাম
চোখমেলা
চোখে ফুলকির রক্তিম
জিভ গলে গলে
তিতকুটে লালারস
জানিস্
চিতাটা জ্বলে কেন দ্রিমদ্রিম ?
কি নাম, কি নাম, ভেবে হলি
দিশাহারা
নাম জমা আছে
শতাধিক প্রান্তরে
একই জলধারা
যে রক্তদাগ মোছে
সেই জল চোখ
চিবুকে উপচে ঝরে
কালোকালো
ধোঁয়া আকাশের নীল খায়
কালোকালো
ধোঁয়া সবুজ পাতার ক্ষত
কালো ধোঁয়া
ঢেকে রোদ চশমায় মুখ
কালো কালো
মুখ ঠিক মুখোশের মতো।
সমাজ কি
জানে মুখ মুখোশের ভিড়ে
ওলোন কাঁটার
কোন দোলোনের ঘর?
এই প্রশ্নটা
বন্ধুকে করতেই
বন্ধুর জিভ
ও ভোঁতা সেদিনের পর।
বন্ধু আমার
মুক্তমনার দলে
পরিবার নিয়ে
মুক্ত উঠোন ঘর
একাকী সে
রাত রাতভর প্রসাধনে
কন্যা ফেরাল
কর্ণফুলীর চর।
কেননা সে
কিনা মুক্তমনা মেয়ে
কেননা সে
জানে যুক্তির জমি চাষ
কেননা সে তার
দামী বোরখাটি খুলে
বদলে পুষেছে
প্রগতির ভাইরাস।
সেদিন থেকেই
নীল ফুল ঝেড়ে ফেলা
একশো আটটা
চিতার আগুন বরণ
মুঠি ভরে
ছুঁড়ি সহস্র ভাইরাস
উসকে আগুন,চিতায়
সহমরণ।
শুনছিস্ জল?
অদিতি চক্রবর্তী
যদি এভাবেই
করলি অচল উপুড় ঝুপুর
বল আর
কদ্দুর চলি
চুলে কেটে ক্রমাগত
বিলি?
হাঁটুতেউঠিয়ে
শাড়ী বানালি ষোড়শী নারী
তবে শোন্
কান এঁটো করি
দে দেখি
একখান হ্যাংলা পুরুষ
যাকে ছুঁলে
পাপ নেই,নেই
ঘোরানো ছড়ি।
শুনছিস্ জল?
বছর বছর
খালি ছল করে যাস
টুপটাপ, ঝিরঝির,আরো কত ঢং
পলি জমে
বুকের ভেতর বানিয়েছে আশনাই চর
চোখ,ভুরু,ঠোঁট এঁকে ক্লান্ত
সে রং
গড়াগড়ি শুয়ে
আছে ড্রেসিংটেবিল
দে দেখি
একখান হ্যাংলা পুরুষ
যার বুকে
শুয়ে থাকি, থাকি
মতিঝিল।
শুনছিস্ জল?
বুক খসিয়ে
আঁচল সরালি বলে
একদম
ভাবিসনা আদুল হলেম
একগলা জলে
বসে করজোড়ে দাঁত কষে
যে পুজোর যা
মন্ত্র আউড়ে গেলেম
খালি একখানা
পুষে রাখা সাধ
দে দেখি
একখান হ্যাংলা পুরুষ
এ আকাশ
পাল্টাবে মেঘ,মেঘ
নয় চাই মেঘনাদ।
আব্বুলিশ
অদিতি চক্রবর্তী
হাতের মুঠোয়
কন্যে সেদিন তোর ছিলনা দিন
রাত্রি কঠিন
আস্তরণে গহন চেনার ঋণ
কালসিটেতেই
বুকে বুঝি কিছু উল্কি কেটেছিস্
আব্বুলিশ
দুপুর রোদে
একলা যোনী বাউণ্ডুলে ঘাসে
কর্ষণেতে
মাতৃভূমি হর্ষে দানব চষে
আশালতা তুই
ইমান খুইয়ে ফরমান দেগেদিস্
আব্বুলিশ
সময় ঘণায়
ঘড়ির কাঁটায় কাজল অশ্রুনদী
সব দস্যুর
পুরুষ জন্ম খাক্ হয়ে যায় যদি
তখন মেয়ে
তোর শরীরে কস্তূরী মেখেনিস্
আব্বুলিশ
মনুর দেশে
কামদুনি আছে,আছে
বারাসত,দিল্লী
মোম হাতে
মিছিল ও আছে, আছে
নখেদাঁতে বিল্লি
খিল্লি নামক
ক্ষতিপুরণে প্রমাণ সাজিয়েছিস্
আব্বুলিশ
জোড়করে চোখ
বন্ধকরে কারপক্ষে যুদ্ধ আসে
মাও যদি
ধর্ষিতা হন বাপেরবাড়ি আশ্বিন মাসে
দেয়ালজোড়া
ক্যালেণ্ডারে দোহাই লিখেনিস্
আব্বুলিশ