সোমবার, ২১ মার্চ, ২০১৬

মৌ মধুবন্তী


ভালোবাসা নিরন্তর বহে
মৌ মধুবন্তী

দুপুর রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে  যখন তোমাকে খুঁজি
তখন, জানি তুমি বাধা আছো অন্য কারো আলিঙ্গনে--

ঐ বুকে জমা আছে আমার হাজার চুম্বন ও বাণী
তুমি ভুলতে পার না আমাকে, সে কথা আমি জানি
এতো কাছাকাছি আছি, তবুও আমরা প্রেমের
ওপারে কি নিথর নীরবে বাঁচি,
তোমাকে আজো ভালোবাসি--
তুমি আমার জীবনমন্ডল-
বাজিয়েছে কত গান, কত সু্‌র, তোমার সুরমন্ডল-
ভালবাসি, তোমাকে  কত ভালোবাসি-
বুকের গভীরে জমাট করে তোমার মুর্তি আঁকি।

আজো জেগে আছে আমার সিঁদুরের কৌটা
একদিন পরাবে এই কপালে দিয়েছিলে কথা
ফেলে দিতে পারি না সেই সিঁদুরগুলো মাটিতে
একদিন আসবেই তুমি আমার কাছে ফিরে-
এই আশ্বাসে;
জেনে রাখো তুমি, আজো তেমনি ভালোবাসি
সিঁদুরের কৌটায় আজো সুখ লুকিয়ে রাখি।
ভালবাসি-খুব বেশী ভালোবাসি।
বড় বেশী ভালোবাসি-

যুগের উপরে হলো
আমি অপেক্ষায় আছি-ভালোবাসি,
কবে আসবে  আমার কাছে ফিরে?
সুরের আলিঙ্গনে তোমাকে বেধে রাখি
ভালবাসি।।






পলেস্তারা
মৌ মধুবন্তী

এক রোখা দিন
উলটো করে ভাজছে
সোনামুগ ভাবনা
কাহারবা পদক  খামছে ধরেছে
জাতিস্মরের আস্তিন।
কিলবিল করছে
নিত্যদিনের বাজার দর
এমন সময়  ভেতর থেকে কে
এসে চিৎকার করে বলে, থামা, এই বাজনা
আমাদেরকে নিয়ে যাচ্ছে
সমুদ্র থেকে খালের দিকে-- মাথায়
রক্ত উঠে বমি করে মরে
যাবে এই অবুঝ দিন। অবাধ্য
করিস না; যা কিছু নিজস্ব,
লোটা কম্বল নিয়ে
সেখানেই বসত গড়- চিৎকার
শুনে থেমেছে কি একটি ও পদক্ষেপ?


তবে কেন এইসব বাহানা?
ক্ষয়িষ্ণু এই সমাজ ধারায়
চলতে চলতে পৃথিবী ও একদিন
হাতের পিঠ চেটেপুটে লোনা
ঘামের স্বাদ পাবে না।
চারিদিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং-- নাচ
দেখে কি আতংক মনে হয়নি?
নুসরাত ফাতেহ আলীর
গানের মাঝে ডুবতে ডুবতে
সকাল সহ আমিও ডুবে গেছি।
কীটদংশিত সমাজ,
কাদা মাখা ভাবনা --কোথায় চলেছি ?
কার হাত ধরেভেজেই যাচ্ছে মুগ,
অথচ আবহ সঙ্গীত আবেগহীন,
গন্ধহীন দিনের বি্লাপ যেন
শ্বাশত ভাবনায় এক বিয়োগান্তিক
কঠোরতা। কুঠার
যেমন কাটে, দিন কেটে যাচ্ছে।
একরোখা!






কন্ঠ যে রোধ করে
মৌ মধুবন্তী
তোমাকে নিয়ে পাহাড়পুরে বেড়াতে গেছি
ঝর্ণার জলে ভাসব, ফোয়ারার জলে নাচব
পাহাড়কে ডিঙ্গিয়ে নদীর সাথে সখ্যতা করব
কিন্তু তুমি অচেনা আতংকে পাহাড় থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে খাদে পড়ে গেলে-
উদ্ধারবাহীনিতে এখনও কেউ নাম লেখেনি, তালিকা শূন্য।
আমার কাছে রাতের শেকড় আছে কোন রশি নেই
আমার কাছে বিবেক আছে, কোন ব্যবস্থা নেই
আমার কাছে প্রাসাদ আছে, কোন পানিসম্যান্ট নেই
আমার কাছে জল আছে, জলাতঙ্কের কারণ নেই
মাটির দেয়াল বেয়ে বেয়ে উঠে আসো কেঁচোর জীবন
ঢালের উপর সবুজ চত্বর বিছানো-বিছুটি পাতায় রঙ ধরেছে
ভয় কিসের? ভুল না করলে সে রঙ্গিন করবে না।

আপাদমস্তক ভুলের কম্বল পরো না;
একবার মানুষের মত নিজেকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেখ
ফোয়ারা ছুটে পায়ে নূপুর বাধে কিনা
একবার মানুষ হয়ে দেখ
ঝর্ণা চঞ্চল চপলা ভঙ্গিতে কোমর দুলিয়ে নাচ করে কিনা।
জীবন সুন্দরের পশমি আদরে এখনো
আদুরে কিশোরী- শুধু নবীন যৌবনের মত উথালি পাথালি  উঠানে
ধান শুকায় না।
একবার মানুষ হয়ে  দেখ
ধান খুটলে যুবতী চাল এখনো খলবল খলবল করে কিনা--
শুধু
একবার মানুষ হয়ে দেখ
নিজেকে নিজে চিনতে পারো কিনা।


পাহাড়ের চারিধারে পরিভ্রমণ এখনো বাকি---







পার্থক্য
মৌ মধুবন্তী

বয়েসের ছড়ি ঘুরাতে পারো মাথার উপরে
বলে রাখি, আমারও আছে কিশোরী লেমুন চুষ
একদিন চলে গেলে, সেদিন মাইনাস করো না
জমা রাখো প্রভিডেন্ট ফান্ডে- আখেরে ভাঙ্গাতে হবে
ছড়িটা এবার সরাও।

আমার কবিতার  পা আছে
হেটে যাবে পদ্মার পাড়ে- কিংবা কাগজের মিলে
তারপর দৌড়ে একদিন দৈনিক পত্রিকায়--
ঝলক দিয়ে উঠে বড় হবে;
বলবে,এই দেখো বুড়ো,
তোমার মত আমার কবিতা বুড়ো হবেনা।
আমি এখনো কবিতায় চেঙ্গিস খান, গজনবী
আখতারুজ্জামান মুকুল, বাদশাহ আকবর
মীরার ভজন-প্রীতম মুকুল
শব্দবালিকার কণ্ঠে নীলমণি হার
ফুটেই আছি
ফুটেই থাকব
কবিতার তাজমহল!






পদ্মপাতা
মৌ মধুবন্তী

সাদা পায়ে গ্রীষ্ম নামেনি।
ওজন স্তরের বেগুনি রশ্মি
বাদামি পায়ে
পরিয়ে দিয়েছে কালো রঙের স্যান্ডাল- আহা! প্রাচ্য পায়ে পশ্চিমা রোদের সুনজর-।

সাদা পায়ে ঝলমল করছে
ওল্ড নেভী দুই ফিতা-ফ্লিপ-ফ্লপ
এখানে রোদেরা গুড়ো করে ঢালে
প্রাণের রস, মখমল চাদর- বেশ মানিয়ে যায়
মামুলি দুই ফিতার স্যান্ডেল- ।

এখনো পায়ে পরে আছি পেডিকিউর,নেইল পলিস, জুজুবা অয়েল, ইউক্যালিপটাস লোশান
তবু বোঝা যায় না
পা ?
না ধুলাবালির ঘর-বসত-পায়ের উপর গ্রীষ্মের বর্ণ বৈষম্য।
উইকিপিডিয়াতে নতুন নিবন্ধন।
থমকে যেতে যেতে দেখি
পৃথিবী ঘোরায় বিশ্বায়নের চাকা
কোন রঙ-এর রঙ দিয়ে
পায়ে দেই ঢাকা?
নিষুতি অন্ধকার
দু'পায়ে মাখা।
কোন সে মানব তুমি তুমি
নাম নিয়েছ 'বি ধা তা'!