পেইন্টিং
রাজন্য রুহানি
নাকফুল আঁকতে আঁকতে ক্রমশ
একটা মুখ জন্ম নিতে থাকে চেতনার দক্ষিণ পাঁজরে, বাঁ-পাঁজরে লেখা তার জীবন বৃত্তান্ত, সাদা পৃষ্ঠা
আর কিছু দাগ আস্ত মানবী হওয়ার পর মৃতের নদীরা আড়মোড়া দেয়, আমারও জেগে
ওঠে ডানা, হলফ
তোমার, কস্মিনকালেও
আর কারো ডানা ছিল না এই কমিউনে।
আকৃতি গ্রহণ কালে রেডিয়েশনের
ভার দিয়ে মুছে গেছে পথগুলো,
পায়ের তলায় সঞ্চিত গোপন আকাশের বোধি ছুঁতে পারলেই শিরদাঁড়া ইথারের ফুল, তালা দেওয়া
সদর দরজা খুলে বের হয়ে আসেন তখন ইলোহিমপুত্র আর তার
বিষদৃষ্টি জমে যদি ঢিপি হয়
তাতে তুমি-আমি
উইপোঁকা মাত্রা বদলের আগে কারাবন্দী কুহকের।
কৃষ্ণবিবর
রাজন্য রুহানি
ভুলের পেয়ালা হতে বাষ্প হচ্ছে বর্ণীল আসক্তি
কেওকাটা রোদে,
মহর্ষি বেদনাবৃক্ষ ছায়া দিচ্ছে যার হলুদ পাখির রঙ;
ভুল নেই তার, আছে পাপ
শতচোরা ঘোরে।
কেওকাটা রোদে,
মহর্ষি বেদনাবৃক্ষ ছায়া দিচ্ছে যার হলুদ পাখির রঙ;
ভুল নেই তার, আছে পাপ
শতচোরা ঘোরে।
বৃক্ষটার কাছে গেলে সকলেই ছায়া হয়ে যায়
হলুদ পাখির রঙে
প্রস্বেদনে লেগে থাকে তারপর শোষিত বকুল।
হলুদ পাখির রঙে
প্রস্বেদনে লেগে থাকে তারপর শোষিত বকুল।
তারপর বস্ত্র পরিধানের ভূগোলে
রঙকরা নাম,
জানু পেতে বসা; রূপকথা সব, চক্রের ওপাশে।
রঙকরা নাম,
জানু পেতে বসা; রূপকথা সব, চক্রের ওপাশে।
গোলক
রাজন্য রুহানি
পিতৃজন্ম থেকেই গোলক। নিষেধ
অমান্য করে যে হারমোনিয়ামটা বাজছিল তার সুরে পৃথিবীর জন্ম। গোল গোল চোখের মতন
ফুলেরাও গোল জন্মের ইশারা। গোলক গড়িয়ে ঘুরে বেড়ায় তিনমহলা বাড়ি। নর্তকীও নাচতে
নাচতে গোল হয়ে ঘুরতেই থাকে যাতে দশর্কের পঞ্চভুজ কাম গোলাকার হয়। মগজের ভিতরে যে
বড়িটা ক্রিয়াশীল তার দ্রবণও গোল। দিন ও রাতের গোলপথেই মিলন ও বিরহ। বলো কলম্বাস, ফলেরাও কী
কারণে গোল হয় আর আমাদের চিন্তা? গোল ছিল কী গন্ধমটাও!
কর্মকার, আংটির ভিতরে
যে ফাঁক রাখা তা এক ঘূর্ণায়মান প্রহর, গোলকীয় বাগদান। অবশ্য নদীই জানে গোলক-মহিমা। নয়তো
বৃষ্টিকে ঠাঁই দেওয়া কেন বুকের পাঁজরে, সমস্ত বন্ধন ভেঙে একদিন যার পরিচয়
বদলে গেছিলো অনায়াসে।
আপনি কি জানেন জালুয়া, হেঁটে দৌড়ে
বসে বোনা জাল আসলে ফাঁদের শিল্পগিরি?
জন্মান্তরবাদ
রাজন্য রুহানি
গতজন্ম কর্জ নিয়ে করি মহাজনের দাসত্ব;
ইহজন্মে তালপাখা হই,
হলুদ বৃষ্টিতে ধুয়ে গেলে গৃহপালিতের রঙ
সাদাকালো সঙ্গমের জন্মান্তর সাধে
ঘুড়ির মর্যাদা,
পিতার লিঙ্গের নিকট আয়ুর ফুলে
জেগেছে ভ্রমরপতি, চেনাপথের নকশা
বালিশের নীচে রাখে ঘুম।
ইহজন্মে তালপাখা হই,
হলুদ বৃষ্টিতে ধুয়ে গেলে গৃহপালিতের রঙ
সাদাকালো সঙ্গমের জন্মান্তর সাধে
ঘুড়ির মর্যাদা,
পিতার লিঙ্গের নিকট আয়ুর ফুলে
জেগেছে ভ্রমরপতি, চেনাপথের নকশা
বালিশের নীচে রাখে ঘুম।
সে-আমি, আমিই সে, ভ্রমণে
চাবিকাঠি,
পদছাপে গুপ্ত রেখে যাই
পথের বিতর্ক।
পদছাপে গুপ্ত রেখে যাই
পথের বিতর্ক।
পরজন্মে জেগে থাকে হাতের প্রার্থনা
বীর্যের শ্রেষ্ঠত্বে। মৃত নই,
মাত্রা বদলের দৃশ্যে আমি ফাঁক মাত্র
অনন্ত বৃত্তের।
বীর্যের শ্রেষ্ঠত্বে। মৃত নই,
মাত্রা বদলের দৃশ্যে আমি ফাঁক মাত্র
অনন্ত বৃত্তের।
এনিমেশন
রাজন্য রুহানি
কোনটা যে সত্যি, শরীর না
ছায়া? এই
কথা ভাবতেই নাচতে থাকলো অন্ধকার, যে পর্যন্ত না কামনদীর জোয়ারে ভাসলো অথৈ সিঁড়ি, ততক্ষণ সে
ছায়ামানুষ, বাকিটুকু
সুরঙ্গপুরাণ, করায়ত্ত
কৌটার ভিতর।
ছায়াঘরে শুধু সারি সারি
ঘুমচোখ, হলোগ্রাফিক
কিরণে বিম্বটাও নেই,
মৃতকোষে লেগে লেগে আছে কোনো কোনো জন্মের সুতীব্র দাগ, আন্ধারমানিক
যেন, জ্বলে
নেভে জ্বলে রিপুসঞ্চিত আয়না।
বড়শিতে লোভাতুর টোপ গেঁথে
ডাকি, এসো
মীন, ডাঙার
ছায়াটা কুটি।