" যজ্ঞ "
কৌশিক গাঙ্গুলি
অলৌকিক শক্তি নেই ,
আছে মাটির ওপর পা ,
বুজেছি বেঁচে থাকাই সার কথা এ
সংসারে ।
প্রতিদিন বিবেকের কবর খুঁড়তে
বসি –
যুগাত্মা ক্ষমতাবানদের পায়ের
তলায় ।
তবুও মাথা উঁচু করে থাকার
ইচ্ছে জাগে ।
আমার তূণীরে কোনো ধাতুর
অস্ত্র নেই ,
আছে বিবর্ণ পান্ডুলিপিময়
রক্তাক্ত কবিতা ,
তাতে লেখা অসহায় মানুষদের
জীবনকথা ,
আর এক প্রতিরোধ যজ্ঞের আয়োজনে
মাতে এ যুগের পরশুরাম ।
'স্বয়ংসিদ্ধ '
কৌশিক গাঙ্গুলি
বেশ করেছি গড়েছি ,
বেশ করেছি ভেঙেছি -
বেশ করেছি হাত কেটে রক্তপাত ,
আসলে আমি স্বয়ংসিদ্ধ , কবি ও কারিগর ।
নেই হুশ , নেই খেয়াল
সব স্বপ্ন দিয়েছি তোকে ,,,
অভাবের আগুন আর স্বভাবের ঝড়
জ্বালিয়ে দিয়েছে তোকে পাই
আনন্দ ,
তুই যন্ত্রনায় কাতরাবি , বাতাসে পোড়ার গন্ধ ।
বিচিত্র উল্লাসে উড়িয়ে দিয়েছি
পান্ডুলিপি ,
ছিঁড়েছি যত চিঠি আর একমুঠো
সোনারোদ .....
আয় দুজনেই কাঁদি , দুজনেই হাসি ,
সব শোধবোধ ।
'ক্রীতদাস '
কৌশিক গাঙ্গুলি
এ কেমন দ্বীপ ,এখানে জল নেই শুধুই দীর্ঘশ্বাস ,
দাসপ্রথা নেই তবু হাতে তোলে
শৃঙ্খল ।
স্বেচ্ছাচারী বৃষ্টিকে করে
আহ্ববান নারী ও জঠরের সন্তান ,
বেদনায় কাঁদে মাটি , ক্ষত- বিক্ষত শরীরে প্রলেপ পড়েনি কতোদিন ?
মাতৃস্নেহধারা বাঁচায় শুকনো
শরীর যেন বটগাছ ,
অ্যাতো ভাঙা উনুন , রেশন আসেনি এখনো লকআউট ।
এ যুদ্ধে পরাজয় লেখা হয় গোপন
চুক্তিতে ,
ব্যর্থ গর্জন মানুষখেকো
মানুষের হাসি গদিতে গদিতে দুঃশাসন ।
এ দ্বীপে যদি বাঁচার ইচ্ছে
থাকে
তবে গলায় পরো বকোলেশ নাগপাশের
বন্ধনে দেখো না প্রিয়জনের লাশ ,
নতজানু হয়ে থাকো । দীর্ঘশ্বাস
শুধু শোনো ।
"কৌশক গাঙ্গুলির কবিতা "
ক-
দলতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদী
জীবনে খালি রঙ বদলায় ।
প্রতিবাদ এখন আমবাতের মতন চুলকায় , ক্ষমতায় যেই থাকে , সেই রাবণ হয়ে যায় ! উন্নয়ণ ঢপে হোঁচট খায় যাত্রাদলের বিবেক
মাষ্টার.... গাঁজা ,মদ না । দাঙ্গা বা
রেপ নয় , অরাজক মাতৃভূমি না , শুধু গণতন্ত্রের আর কথা বলার স্বাধীনতা চাই ।
খ -
সক্রেটিস বলেছিলেন তিনি জানেন
; তিনি কিছুই জানেন না আর এদিকে
চায়ের দোকান বেঞ্চিতে আলোকিত করে বসা সবজান্তা পবিত্র পাপীরা । রাস্তায় কুকুর ,কাক ও আবর্জনা বাড়ছে আর এদিকে কাজের বদলে অকাজ , শান্তির বদলে সন্ত্রাস , উন্নয়ণের বদলে করের টাকায় খয়রাতি বাড়ছে ,
আমাদের
বেগুন ভবিষ্যতে শুধূই অন্ধকার .....
'
যন্ত্রনা
কৌশিক গাঙ্গুলি
আলথালু বেশে সারা
কুরুক্ষেত্রে অসংখ্য শবের পচা মাংস ঘাটে শিয়ালেরা ,
আজ মহাভোজ উল্লাস নারকীয় ।
রক্তস্রাব , রক্তস্রাব ঝরুক তোর জংঘা থেকে ওরে প্রেতিনী ,
প্রসব করবি যখন মৃত সন্তান
দাহ বিনা ভাসাবি নদীর জলে
হিংস্র কামট খুবলে নেবে তার হৃদপিন্ড ,
যন্ত্রনা শুধু যন্ত্রনা উঠুক
নাভিশীর্ষে ,
আঁকাবাঁকা শিরায় , রক্তকণিকায় ,
তবু পাবিনা শান্তি এই
পোড়াদেশে
ধর্ষিত সমাজের লজ্জিত ফলাফলে
জন্ম নেয় বেজন্মারা আর কেঁদে চলে অসহায় ধরিত্রী ।