আস্তাকুঁড়ের
ঈশ্বর
সোনালি
পুপু
আমার বাসায় ভাঙ্গা
পাতা,
কাঠি কুটি
আমার বাসায় ছেঁড়া
ফেঁসো,
ফাটা বল।
যত রকমের রঙ্গিন
কাগজ,
বই,
রং পেন্সিল, হাত ভাঙ্গা খুদি ডল।
কত কিছু রোজ জড়ো
হয়
, কি যে করি-
ঝুল জমে রোজ ,আরও জমে রংঝুরি।
ছেলেবেলা থেকে হাঁটি
হাঁটি বলা কথা ,
প্রথম আঁকা সে হিজিবিজি
ম্যাও পুষি ,
সুকুমার রায় ,প্রথম অঙ্ক শেখা ,
যোগ বিয়োগের কঠিন
অঙ্ক কশি ।
বড় হতে থাকা জমে
জঞ্জাল হয়ে
কি করে মুছি সে ছোট্ট
পায়ের দাগ?
নাক সিঁটকবে লোকে
যে
সেটা ত জানি
কারো ওপরেই করতে
পারিনা রাগ।
চকচকে মোড়া বাক্সেরা
কত “স্লিক”
গ্ল্যামার ; তা ছাড়া
গোছানো ইত্যাদিও...
সবই বুঝি ,
তবু আমার পাখির বাসা
ছোট ছানাদের আনন্দে
ভরে দিও।
উত্তাপ থাক আমার
ডানার আর
আদরের ওমে উড়তে শিখুক
ওরা ।
খোলা আকাশের পরিচ্ছন্ন
নীলে
সমস্ত দেশে অবাধ
হোক সে ঘোরা ।
ঘুঁটে কুড়ানিরা চাঁপাদের
বুকে পায়
তাই বলেছে তো আমার
রূপকথারা ।
“ হে ঈশ্বর , হে আস্তা কুঁড়ের ঈশ্বর
ফুটিও আঁধারে অশ্রু
জলের তারা”।
আহীর
ভৈরব
সোনালি
পুপু
"অগর তুম সাথ হো..."
আমায় শতদল ফোটাও
উত্তাপে
জীবন, হে মাদল বাদক
হৃদয় পদ্মে লাব ডুব
তালে ছন্দ ফোটাও
তাল
তুমি তুলির টানে
হিজিবিজি আঁকো
আমার এক জীবনের এলোমেলো
ক্যানভাস জুড়ে
খসখসে আস্তরে আচমকা
লাল
কালো বীভৎস মধুর
রঙ রস
ভিতরে ছবির খোঁজে
ইতি উতি মন
দাঁত চিপে লাইফ লাইনের
দড়ি
কেটে বসা হাতের তালুতে
জড়িয়ে রাখি
চাহিদা ছাড়িনা
ফোটাও ফোটাও ফোটাও
আমায়
শতদলে
স্থির হয়ে ঋজু শিরদাঁড়ায়
আমি ইহাসনে ত্বক
অস্থি মাংস
গলিয়ে বসে আছি জ্বলন্ত
পরীক্ষায়
ফোটাও কোরক শতদলে
একটি একটি পাপড়ি
আগুনের
উন্মেলিত হোক রক্তে
প্রানে
বেদনায়
আনন্দে পূর্ণ আনন্দে "হর গম ফিসল যায়ে"
আমি যে তোমারি ওপর
বীরাসনে স্থির হয়ে
আছি।
চিতোর
সোনালি
পুপু
এক পাত্র হেমলক দিয়ে
লম্বা রাস্তা আমায়
বলল
“লে
পিই”
আমি দু হাতে পেয়ালা
ধরে
নীল কণ্ঠ হয়ে গেলাম।
আমার কালো পাথরের
ঠাণ্ডা মন্দির
টিলার নিচের বিস্তীর্ণ
জন বসতি
পাথরের জাফরি কাটা
অন্দর মহল ।তালাও।
কেল্লার বাইরের মানুষ
গল্প শুনতে ভিতরে
এলো ।
সামান্য সর্দারের
মেয়ে পাটরানী হয়েছে তাই
হিংসা ছিল মুখে মুখে
এবার মজা দেখতে এল
সবাই ।
অন্য কেউ জ্বললে
মানুষের দেখতে ভারি
মজা
আর যারা জ্বালান
তাঁরাও
শক্তিশালী ভাবেন
নিজেকে
তা, মহারানার বিষটা বিফলে গেল ।
আমার ঠাণ্ডা পাথরের
মেজে
মোটা মোটা দেওয়াল
কিছুতেই যুদ্ধ করবে
না বলে
পালিয়ে যাওয়া রণছোড়জি
অপলক তাকিয়ে রইল
আমার দিকে
আর জ্বলতে জ্বলতে
নিচে নামা বিষ
কখন অমৃত হয়ে ফুল
ফোটালো
রাজস্থানের মরুভুমিতে
বর্ষায় ভিজল সুখা
বালিয়াড়ি
লোকে আনন্দে আত্মহারা
হয়ে
জয়ধ্বনি দিল
তোমার শিশমহলের কাঁচে
কত রঙ
প্রাসাদের হাজার
জানালার খোপে
হাজার সুন্দরীর মুখ
চলে যাবার আগে দু
কলম লিখে যাই ?
“প্রেম
না করল রে
শক্তি
শালী
সোনালি
পুপু
চেষ্টা করি এলো
মেলো না হওয়ার-
তাও খুলে যায়
সাংসারিক
বন্ধনের সুতো ।
তোমার, আপনার, তার, নানা সম্বোধনে
যত্নে খুঁজি
পারিপাট্য ।
গিঁট খুলে যায় ।
জলঙ্গি –খোড়ের স্রোত , লাল মাটি ,
ভরা লিচু গাছ; মধু গুলগুলি আম-
স্বপ্ন দেখে
কৈশোরের চোখ।
ছোট ঘরে আতিসয্য
ধূপদানে চেষ্টা
জ্বালি রোজ ।
আর তুমি প্রেম
আমার ।
পর্দা –ওড়া সাদা
আলো প্রেম ।
মায়া হয়ে
ফুলদানিতে থাকো
ডিসিপ্লিন
মানেবই হাতে।
সিঁড়ি ধরে ধাপে
ধাপে কষ্ট করে উঠি
ওপরের আরাম কক্ষ-
গরমের ঠাণ্ডা ,শীতে রোদ ।
রোজ জোর করে খুলে
বুক থেকে ফেলে
দিই অধিকারবোধ
রক্তাক্ত হৃদয়
ছিঁড়ে ।
বড্ড বেশি দাম।
এত ভাল বাসা যায় ?
সস্তার
ডিসকাউণ্টে নেই সেল ?
চৈত্রের গরম , কিংবা পুজোর শিউলির ফাঁকে
একটু যদি আস্তে
পারতে নেমে-
একটু সহজ হতে
যদি
কিংবা আমি আর
একটু সাহসী হলে
ঠিক দেখতে ভেসে
গেছি প্রেমে।
এসো
মাগো
সোনালি
পুপু
শিউলি গাছে
ফুটছে তারা
কাশের বনে ঢেউ
আমার মা আজ আসছে
ঘরে
বাদ যাবে না কেউ
আনন্দ আর আদর
পেতে;
হোক না ছেঁড়া
কাঁথা
মায়ের বাপের
দিদির আদর
গরম ভাতের পাতেই
সব্বাই আজ দেদার
পাবো
ঘুচবে সকল কালো
এসো মাগো সঙ্গে
এনো
সুখ পিদিমের
আলো।