জীবনের স্বাদ
সাঈদা মিমি
---------
জীবনের স্বাদ ঠোঁটে তুলে নিয়েছি বলেই
ভাবতে হয় সে আসবে হেমলক হয়ে ।
প্রায়শই ভুলে যাওয়া দিনেরা আসে, হারিয়ে
ফেলা বন্ধুর কথা মনে পড়ে কিন্তু
গান শোনা আমি বন্ধ করিনি, টবের গাছে
পানি দেই, প্রিয় চলচ্চিত্র...আকাশমুখি হয়ে
ছায়াপথ... তরকারীর লবণ... কনসার্ট
দেখার আয়োজন সাজাই ।
যাবো তো! সময়ের আগে
প্রতিদিন মরে মরে বেঁচে থাকা যায়!
পাভালোভা, তোমার জন্য
সাঈদা মিমি
----------
পাভালোভা, কিয়েভের রাত যেদিন
শুয়ে ছিলো, তুমি স্বপ্ন দেখছিলে-
বরফঝড় কমে গেলে ভোলগার জলে আঙুল রাখবে
দস্তয়েভস্কি পড়োনি, শ্রমিক বিপ্লবের
গল্প শুনেছো… বলেছিলে দেশ টুকরো
হয়ে যাওয়ার পরে তোমার জন্ম, মস্কো স্কয়ারের ঘণ্টি
এখনও কি সময় সংকেত দ্যায়?
ক্যালিফোর্নিয়ায় বসতি চাও, সেটাও বলেছিলে-
সব ইচ্ছে সত্যি হওয়ার আগে
এই পোড়া দেশে আর একবার এসো,
তোমাকে বৈশাখের উৎসবে নিয়ে যাবো…
কাঁদছে বিচার
সাঈদা মিমি
--------
দৃশ্যের স্বপ্নঘুম: মেঘরঙা দেউ আসে,
ডুমো মাছি, স্কন্ধকাটা সাপ-
কালো হলুদের ডোরা, বিষের জারক
ভোরবার্তা বয়ে আনে, আগুনে
ঝলসে গেছে অর্ধেক
দেশ,
হাসি হাসি
অভিজিত, লাশমুখে কাঁদছে বিচার
দেখো, রক্তের প্লাবণ থেকেউঠে এসেছি-
সাঈদা মিমি
--------
আমাকে দেখো, রক্তের প্লাবণ থেকে
উঠে এসেছি-
পাথুরে মাটিতে পুতে রাখা দেহে
সাপেদের আঁচড়, মগজ গলে পড়া
মাথায় কঙ্করের থাবা...
ওরা হাসছিলো আর ছুঁড়ে দিচ্ছিলো
আবর্জনা! অচ্ছুৎ মেয়েমানুষ! অন্ধকারে
তাকে তোমরাই বুকে নাও বুঝি?
রক্তের বন্যায় আমি আমরা হয়ে যাচ্ছি,
নিস্প্রাণ চোখ সব সত্যই
বলে গেছে যদিও সত্য আজ মৃত
আমার কোনো ঘর নেই
সাঈদা মিমি
--------
আমার কোন ঘর নেআমাই, ভিন্নমাত্রাকে
জিজ্ঞেস করো, উৎপলের মাসিমাকে;
কাঠকলের মিস্ত্রীও জানে--
কখনই ছিলো না, একটা ছাদঘেরা
বাস্তুশাস্ত্র মানা দেয়াল কিভাবে ঘর হবে?
উত্তরটা নির্মাণশ্রমিক জানে না,
আমিও তত বিজ্ঞ নই--
চারটে গলিরমুখে এসে মাতালেরা দিক ভুলে যায়