বৃহস্পতিবার, ২১ মে, ২০২০

কল্পদেব চক্রবর্তী


কল্পদেব চক্রবর্তী

বুদবুদ

নিস্তরঙ্গ জলে উদ্ভূত বুদবুদ
তরঙ্গে হিল্লোলিত ক্ষণিকের অতিথি 
তারপরেই বলে আমি যাই
মিলিয়ে যায় সুদূর বহুদূর
চোখ বাঁধা ভালোবাসার কানামাছি খেলা
আলেয়ার ভেলায় হাসিখুশি সমুদ্দুর।

জলতলের গভীরে কে তুমি স্থিতি
তুমি কে ? তোমার নাম কি,
যাতনা ছলা-কলা কিংবা চেতনা ?
ওখানে কার উপস্থিতি
বুদবুদ কাহারি বা নির্যাস!
মন খোঁজে ফেলে আসা দিনগুলোর স্মৃতি
প্রশ্ন ভেসে বেড়ায়,
ও মন তুই একা একা এই সান্ধ্য জোছনায়
কার কারনে কেন হতাশ!
কি বলে গেল তোকে বাতাস?

অধরে নিসিক্ত শিশির ভেজা ঘাসে প্রেয়সির চুম্বন
শীতের শেষে হলুদ পাতা ঝরে ঝরে পড়ে
ঘরে ফেরা পাখির কূজন বলে,
ও মন দুঃখ কেন অকারণ
কিছুই হারায়নি সব আছে
তোর অন্তরে ডুবসাঁতার দাও গভীরে।

সবথেকে বড় পাওয়া হারানো
দরজা খুলে দেখ হারানো সুখ রয়েছে দাঁড়ানো
হারিয়েছে সে তাই প্রতিক্ষণে ফিরে ফিরে আসে
মনকে বোঝায় একান্ত চেতনা
হয়তো এরই নাম
বাসনা কামনা যাতনা
তোমরা যারে কও ভালোবাসা  
সেই অতি প্রিয় অপরিচিতা,
অবগুণ্ঠিতা একজনা।






নিস্তব্ধ সময়

অসহনীয় নিস্তব্ধ এক সময়
কবিতার শব্দগুলো
প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে ফিরে আসে
বলে,
এখানে শুধু আমি আর তুমি আর কেউ নেই।

তুমি তখন বিদুষীর বেশে
অপ্সরা নৃত্যরতা কামিনী স্বপ্নে বিভোর
স্বপ্নীল রাতের ইতিহাস।

দাঁড় কাক এক, আমার প্রাঙ্গণে
কখনো আসেনি তো আগে এমন অসময়ে
কিছু একটা আমায় বলে
বোঝাতে পারে না তাই কর্কশ তিরস্কার।

মস্তিস্কে মাকড়সার জালে আবদ্ধ স্বপ্নগুলো
ছটফটে কোটি পতঙ্গ
অন্তিম জিজ্ঞাসা,অকাল মরন কেন ডাকে!
তবে কেন এসেছিলাম পৃথিবীতে?

নিস্তরঙ্গ জলে ভেলা ভাসাই
তুমি এস কবির কবিতায় অক্ষর হয়ে
কেউ জানবে না,
ভোর হবার আগেই
ছায়ামানবী হয়ে মিলিয়ে যেও।

যদি বারণ করো আমি সঙ্গ  নেবনা।।







অপেক্ষা

চৈতী হাওয়া আমায় ডেকেছে
কপট রাগ দেখিয়ে সুরাপাত্র হাতে 
নিষিক্ত নিবিষ্ট চাহুনিতে বলে,
আমি মহুয়ায় মাতাল অলি।

হিংসুটে ভ্রমর সেই সময় বড়ই অস্থির
আমায় ঘুম পাড়ানি গান শোনায় 
যখন আমি ঝড় হতে চাই।

প্রজাপতি বলে,
আমি বেশি দিন বাঁচবো না জানিস
আয় তোকে রং মাখাই।

মন পাখিটা তখন গাছের ডালে বসে
দোল খায় ভাবখানা এমন
এখন আমি যা ইচ্ছে তাই করতে পারি।
টুপটাপ ফুলগুলো মাটিতে ঝরে পড়ে বলে,
আয় তোর জন্য ফুলশয্যা সাজিয়েছি।

আমার প্রেয়সি তখন বধু হবে বলে
রাত জাগা চোখে মালা হাতে বসে।
আমি পৌঁছে দেখি নিশুতি রাত চলে গেছে
ভোরের আলোতে প্রেয়সির অভিমানী মুখ
মেঘ হয়ে হাওয়ায় ভাসে।

স্বপ্ন ধরবো বলে স্বপ্ন না ভ্রম
ভাবতে ভাবতে আলেয়ার পিছনে ছুটছি
কে যেন বলল,
তোমার তোমার প্রেয়সি আঁধী ওখানে নেই
প্রজাপতির হয়ে স্বল্প আয়ু নিয়ে এসেছিল
ও চিরতরে চলে গেছে।

সেই থেকে অপেক্ষা আর অপেক্ষা
আমি জানি ও আসবে।