বৃহস্পতিবার, ২১ মে, ২০২০

সুরজিৎ পোদ্দার


সুরজিৎ পোদ্দার

শীতল

একটা মৃত গাছ, শহরের মাঝে হা করে দাঁড়িয়ে
ফুরিয়ে গেছে আজ পাতার প্রয়োজন
শুধু শহুরে পাখীদের ভিড় তার ডালপালায়

একটা মৃত গাছ এই বুকের মাঝে আজও ঠায় দাঁড়িয়ে
পাতায় পাতায় কেঁপে ওঠার অভ্যেস এই বাতাসশূন্য সভ্যতায়






মধ্যযুগ

আমাকে প্রশ্ন করেনি কেউ,
সূক্ষ্ম প্রনালীর মতো আকাশ
আমাদের গলি ছাড়িয়ে চলে গেছে অন্য গলির পেটে
আমাকে টুকরো টুকরো করেছে অন্ধকার
যেভাবে নর্দমায় ছড়িয়ে থাকে চাঁদ সর্বনাশের রাতে
যেভাবে আমাদের প্রেম ভেঙে কবিতা হয়,
দৃশ্য ভেঙে জন্মায় সুর, অলৌকিক আলোকবিন্দু
রক্তচিহ্নহীন, রক্তাক্ত।

আমাকে প্রশ্ন করেনি কেউ,
আশ্রয় থেকে আশ্রয়ের মাঝে, আশ্রয় দিয়েছে সময়, ঈশ্বর,
হাজারো প্রশ্ন আর প্রকাশ্য রক্তাল্পতা
প্রশ্ন করেনি কেউ, আশ্রয় হয়নি কেউ, নিরাশ্রয়ে শব্দ নৈঃশব্দ হয়েছে
টুকরো চাঁদ আর টুকরো আমি গত শতাব্দীর একটা বুলেটের ঘায়ে
ঝুলে আছি ওমকার হয়ে, নিমডালে, শহুরে আগন্তুকের মতো
সূক্ষ্ম প্রনালীর মতো আকাশ কাশীদাসী লক্ষণরেখার মতো
ঘিরে ধরেছে, অবিকল মধ্যযুগ।






এসো প্রাণ

এসো প্রাণ, এসো মৃত্যুর আগুনের জন্য প্রস্তুত হও
সারাদিনের দহনের পরে, এই তো জল
জুরিয়ে নাও সমস্ত জ্বালা, জুরিয়ে যাক প্রাণ
এইবার অন্তহীন সন্ধ্যা,
 দক্ষিণের বারান্দার আবেশ আর চিরসখা আগুন

এসো প্রাণ, এসো নৈঃশব্দ্যের জন্য প্রস্তুত হও
এইবার অন্তহীন শান্তি।
শান্তি, শান্তি, শান্তি আর শাস্তি নয়
নয় অনন্ত শব্দব্রহ্মে হারিয়ে যাওয়ার ভয়
জড়িয়ে ধর সমস্ত ক্ষতদাগ, সমস্ত স্মৃতির অক্ষর...

এসো প্রাণ, এসো উদযাপন কর এই পথ
অক্ষমের অসহায়তায় বিপন্ন হই চলো
মনে রেখো, আদতে প্রতিটি সন্ধ্যা বিষন্ন, নির্বোধের নির্মাণ
এসো প্রাণ, এসো আজ বৃষ্টির গান গাই
অনন্ত বৈশাখী ক্ষতে নিজেদের কবিতা সাজাই

এসো প্রাণ, এসো আজ রাতে, আরও একবার
এসো, মৃত্যুর আগুন জ্বালাই