বৃহস্পতিবার, ২১ মে, ২০২০

সবর্না চট্টোপাধ্যায়



সবর্ণা চট্টোপাধ্যায়

আলো

ক্রমশ পাল্টে যাচ্ছে গ্রহের রঙ

বাড়ানো তালুর ওপর খটখটে রোদ

রান্না হয়না আর কোন ঘরে!

মৃত্যুগন্ধী এক নদী বয়ে যায় জীবনের গা ঘেঁষে

কোনমতে চোখ বুজে থাকা

রাত আসে বাদুড়ের ডানায়

ঘুলঘুলির ফাঁকে জমা হয় ভয়

আমরা ভরাট করি ফাঁক।

আলো নিভিয়ে রাখি।

গা থেকে খুলে রাখি পোশাক।

কে কাকে নগ্ন বলে?

সকলেই কঙ্কালসার, মৃত্যুর পরম আত্মীয়!

তবুও যদি ভোর হয়

আবার চালের সুমিষ্ট গন্ধ

এক গ্লাস ঠান্ডা জল

তুমি কি শুনতে পাচ্ছো না

পৃথিবী সুস্থ হয়ে উঠবে আবার!






দেশ

জল থেকে উঠে আসছে ভিক্ষুক।

সপসপে ছেঁড়া জামা।

এক টুকরো আকাশ খুঁজতে

টলতে টলতে এগিয়ে যাচ্ছে এক মানচিত্রের ভেতর।

কঙ্কালসার কালসিটে শরীর

মুখের ভেতর বিষাক্ত লালা।


পায়ে বিঁধে আছে কাচ।

প্রতিটা যুদ্ধের সময় যেমন ভেসে যায় সবুজ সকাল

হাওয়ায় ভেতর জমে ওঠে বিষ

সারা শরীরে তার রক্তের ঘ্রাণ


ভিক্ষুক বাড়িয়ে দেয় হাত

এক আঁজলা জল

চোখের ভেতর কাঁদছে সহস্র চোখ

ভিজে যাচ্ছে মানচিত্রের নক্সা

যেন লুটিয়ে পড়েছে একটা দেশ, রক্ত নদীর পাশে!







দুঃস্বপ্ন কেটে গেলে

দুঃস্বপ্ন ভেঙে গেছে

দৌড়ে আসছে ঝকঝকে আলো

মৃত্যুর পর যেভাবে হেঁটে যায় শান্ত আত্মারা

কুয়াশার ভেতর ভেসে আসছে মিঠে বাঁশি!


তোমাকেও মনে নেই আর

অগোছালো দাড়ি

ঘরবন্দী হতাশ

ছবি দেখেছিলাম সেই শেষ!


আজ আর ঘাম নেই

নেই অবসাদের রোদ।

দুহাতে মাটি, গাছের দুটো চারা

কুঁড়ি এল বুঝি এই !


থোকা থোকা ফুলে ভরে গেল টব

দুর্বোধ্য ভাষায় আর কথা বলে না শালিখরাও

জল খাবে?

গরম ভাত?

দুঃস্বপ্ন ভেঙে গেলে যেমন হালকা মনে হয় অনেক

আমরাও কুড়িয়ে নিচ্ছি আলোর পূর্বাভাস!