শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

তাপসকিরণ রায়


তাপসকিরণ রায়

স্টাচু

বিকৃত গন্ধগুলি সবার দেহ থেকে উরে যাচ্ছে

অন্ধকার দৃষ্টিপাত হয়ে যাচ্ছে, রাতের মাঝে 

দ্রুততম কিছু কথা শুয়ে থাকে--

স্তব্ধতার মাঝে তোলপাড় ভাঙচুর হয়ে যায়।

অভ্যন্তরে তুমি এখনো স্বেচ্ছায় বিষের নীল পেয়ালা তুলে নাও--

মুখের কাছে চায়ের চুমুক দেবার পূর্বমুহূর্ত,

তুমি দেখলে তোমায় এক স্বর্ণলতা ছুঁয়ে আছে।

আমার দুর্ধর্ষ কবিতা শুনতে শুনতে তুমি ধূসর হয়ে যাচ্ছিলে

তারপর একটা স্ট্যাচু হতে গিয়ে

তুমি আঁচড় ভঙ্গিতে খুঁজে নিতে চাইলে

দেহের পবিত্রতা কোথায় কোথায় হারিয়েছ তুমি।

তোমার মন বাধা পড়ে থাকে,

তাই ভাবনাগুলি তোলপাড় হতে হতে

প্রতি রাতে স্ট্যাচু থেকে বেরিয়ে আসছ।

তুমি আবার ফিরে আসো স্তব্ধতায়।

ছুটে আসো তুমি, তুমি জানো নারীর সতীচ্ছদ ছিঁড়ে ছিঁড়ে যাচ্ছে

বাস্তব দেবীরা তারপর আবার ঘুমিয়ে যাচ্ছে

তার সাজানো পালংকে দু দিকে পাখির দুই উড়াল পাখা

তারই মাঝ খানে তোমার স্টাচু।









পাখির অস্তিত্ব


টুকরোগুলি জুড়ে যাচ্ছে,

আবার কার্যকারণ ভেঙে উরে যাচ্ছে ভাবনা--

সেখানে কি রকম পুড়ে যাচ্ছে নীল আকাশ !

এক ঝাঁক পাখির অস্থিত্বের একটা চিত্র

তোমার দু'চোখের আদলে,

বেশ বদলে বদলে ঠিক তোমার রঙে কবিতা হয়ে যাচ্ছে। 

বস্তু ও মনে তোমার পৃথিবী ঘূর্ণায়মান

আর তুমি সময়ের মাপ হারিয়ে ফেলছো--

পৃথিবীর গোলক ছেড়ে ভাবনাগুলি সশব্দে ভেঙে পড়ছে,  

অন্তরীক্ষের  একটা গান প্রকৃতি থেকে উঠে আসছে।

সেখানে অনবরত হরিষেবিষাদের গান চলছে--

জীবনের টিউন মেপে মেপে একটা বৃত্ত শেষটা,

আর কেন্দ্রবৃত্তের দিকে টেনে নেবার সশক্তি

নিউটনের আবিষ্কারকে ব্যর্থ করে দিচ্ছে,...

দেওয়াল ভেদ করে উঠে আসছে ছায়াবৃত্ত, 

জানি সেখানে কেন্দ্র নেই, ঘূর্ণন নেই,

নিয়ম ভাঙার খেলাই বুঝি সব কিছুর শেষ।









সমর্পণ


একদিন সময়ের কাছে বশ্যতা স্বীকার করতেই হয়

বেড়ে ওঠার ক্রমগুলি বয়সের ধারায়

কখন যে  পার হয়ে যায় শিশুকাল,

কৈশোর ও যৌবনের ব্যবধানের উচ্ছ্বাগুলি

সময়কে পেছনে ফেলে ছুটে যাই।

সে ছুটে যাওয়া টের পাই না।

কখনও বুঝি এগিয়ে যাই--

বাতাস ও ধাবমান সময়ের গতিবেগ ছাড়িয়ে।

এবার মধ্যজীবন--বাড়বাড়ন্ত শরীর  ও মানসিক স্থবিরতা।

এবার বাতাসের গতিবেগ টের পাই--

চলমান সময়ের গতিবেগ ধরা পড়ে মন ও  শরীরের সান্নিধ্য

তারপর নিজেকে আলগা করে দিই--

নিজেকে পালের হাওয়ায় দিকে ছেড়ে দিই--

চেয়ে থাকি সমুখ পানে--ভাবি যে পারেই নিয়ে যাও প্রভু,

আমি তো তোমাতেই সমর্পিত হয়েছি।