শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯

কাকলি দাশ ব্যানার্জী


কাকলি দাশ ব্যানার্জী

অপ্রচারিত

ধর্ষণ হলেই
তাৎক্ষণিক আবেগ দিয়ে
আলো জ্বালার কাজ করবে বলে
যেসব পুরুষ এগিয়ে আসে
তাদের মধ্যে অনেকের
চোখের পাতায় লেগে থাকে
সাবেকী অনন্ত অন্ধকার ।

"পাইয়ে দেওয়ার"একটা মলাট দেখিয়ে
ক্ষুধার্ত পশু হয়ে ওঠে তারা,
তাদের জাগ্রত কামনার জিভ দিয়ে
লালা ঝরে,
তারপর নারী শরীর সেঁচে ছুঁড়ে ফেলে দেয় তাচ্ছিল্যে
অথবা করুণা করে
কোন এক নির্জন বারান্দায় মক্ষি করে রাখে ,

এ মারণ রোগের খবর অপ্রচারিত ।







অবশ্যম্ভাবী

একটা জলছবি এঁকে দেবে বলেছিলে ,

তাই নিজেকে বৃত্তের বাইরে এনেছিলাম
ঝুলন্ত স্বপ্নের লেজ ধরে অপেক্ষা করছিলাম
নতুন জন্মের ,

ভেবেছিলাম ভাঙা থালায় এসে পরবে
চওড়া রোদেলা হাসি ,
অসমতার দুরারোগ্য নৃশংসতা থেকে বেরিয়ে এসে
ইতিহাসের পাতায় ছেপে দেবে প্রকল্পিত জ্যোৎস্না,
সমস্ত ক্ষত চিহ্ন পাবে ক্লোরোফিলের সন্ধান ,
কিন্তু তুমি চিৎ করে শুইয়ে দিলে ত্রিভুজ ,
তার এক বাহুতে ভারতবর্ষের কান্নাকে গেঁথে দিলে ,
অন্য বাহুতে চতুর তুমি ,
আর তৃতীয় বাহু থেকে একটা বোতাম তৈরি করে দিলে
স্পর্ধিত ঘুঘুদের ,

তোমার হাতের তালুতে এখন বারুদের গন্ধ

নান্দনিক হবার ঢং কোরো না আর ,
দেখো তোমার দেহের অলিগলি থেকে বের হচ্ছে
বিশ্বাসের লাশ ,

প্রগাঢ় প্রশ্রয় ঢোঁক গিলছে
ওরা বন্য হলে মৃত্যুদণ্ড অবশ্যম্ভাবী ।








প্রস্তরবৎ

নগ্ন দেবী মূর্তির পাশে দাঁড়িয়ে কুমারী এক মেয়ে দুচোখ বুঁজে,
কামুক মোহন্তরা ওকে দেবদাসী বানাবে আজ
নিজের মনটাকে উজাড় করে দেবীকে
অলৌকিক এক আবর্ত তৈরী করে দিতে  বলছিল মেয়েটা ।

প্রস্তরবৎ দেবী --

কিছুপরেই হিসাবী মোহন্ত নির্ধারিত নকশায়
আগুন মেপে নিল উরুর ভাঁজে ,
তার বেহিসাবী শ্বাদন্তে মেয়েটার ঠোঁটের রোয়াকে রক্ত,
আড়ষ্ট মেয়েটা ভয়ে নীল হয়ে
দুটো চোখ খুলে তাকালো দেবীর মুখের দিকে

দেবীর দুকষেও লাল রক্ত ,

ঋগবেদের নবম মণ্ডল অব্দি পুরুষ দেবতার মাতন
তবে কি দেবীও এতদিন .....?

মেয়েটিও প্রস্তরবৎ হয়ে রইলো ।