শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯

শতরূপা চক্রবর্তী


শতরূপা চক্রবর্তী

দীপাবলি

তোমায় নিয়ে লিখতে গিয়ে একের পর এক
শব্দ জুড়ি
অভিমানের অনুরণন ছিন্ন সুতো কাটছে দেখো
খেয়াল ঘুড়ি
ক্লান্ত পায়ে পেরিয়ে আসি ভালোবাসার
অলিগলি
পথ ছিল না তোমায় ছোঁয়ার নদীর বুকে
জমছে পলি
জোৎস্না রাতে আলসে বেয়ে চুঁয়ে পড়ে
চাঁদের আলো
ক্ষতের ওপর সহানুভূতি ভুলেছি কবেই
বাসতে ভালো
একলা ছাদে চাঁদের বাসর মুখোমুখি
দুই খিলাড়ি
শতরঞ্জের নেশায় মগ্ন স্থগিত আজ
সব শায়েরী
কেউ হারে না কেউ জেতে না চলতে থাকে
আজব খেলা
গালিব যখন এগোয় বোড়ে গুলজারের যে
চিন্তা মেলা
রাতের পরে রাত কেটে যায় কৃষ্ণপক্ষে
প্রদীপ জ্বালি
নাই বা তুমি থাকলে পাশে তোমার আশেই
দীপাবলী






হঠাৎ দেখা

‘রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা’ তোমার সাথে..
চুপ কথার সেতু পেরিয়ে আমাদের স্মৃতি গুলো
একে অপরকে ছুঁয়ে যায়...তুমি আমি চুপ থাকি।
নীরবতা ভেঙে কাজের অকাজের আলাপচারিতা করাই যায়
কি জানি এসুযোগ আর আসবে কিনা
তবু চুপ থাকা...স্মৃতির সরণি বেয়ে
বারবার ফিরে যাই সেই ফেলে আসা আদরবাসার দিনে...
যেখানে ভালোবাসা নিয়ে কোনো প্রশ্ন চিহ্ন ছিল না
শুধু আঙ্গুল ছুঁয়ে এক উপন্যাস প্রেম
উজাড় করে দিতাম আমরা...মনে পড়ে ?
একবার মনে হলো উঠে যাই... পাশে বসে বলি
“আমাদের গেছে যে দিন
একে বারেই কি গেছে ?”
কি জানি বললাম কিনা.
তোমার আচরণেও অস্থিরতার স্পষ্ট ছাপ..
হয়তো অনেক প্রশ্ন তোমারও আছে
অনুচ্চারিত সেই সব উদ্বাস্তু প্রশ্নেরা
কাঁটা তারের দুদিকে মুখোমুখি দাঁড়ায়।
ফ্লাস্কের চায়ের ধোঁয়ায় আবছা হই তুমি আমি
আলাদা আলাদা গন্তব্যের জন্য আমরা একই স্টেশনে নামি
নাহ্, ওয়েটিং রুমে কোনো ‘ইজাজত’ এর গল্প
লেখা হয় নি তোমার আমার জন্য
ট্রলি ঠেলতে ঠেলতে ক্লান্ত জীবন
দৈনন্দিন আবর্তে ঢুকে পড়ে।







বৃষ্টি ঋণ

বহুদিন পর আবার মুখোমুখি তুমি আমি
নানা দুর্যোগে আমরা হয়ে ওঠা হয়নি এ জন্মের মতো,
তাতে কি...
আমার সমস্ত সত্ত্বা জুড়ে আজও তোমার উপস্থিতি
ক্ষণিক বিরতি নেই স্মৃতির মিছিলে
মস্তিষ্কে যানজট
সেই প্রথম দেখা, প্রথম ছোঁয়া ঠোঁটের চুমুক..
তারপর, আসছি বলে আর না ফেরা
অতীতের কোলাজ চোখের পাতায়
বাইরে বিরামহীন বর্ষণ..কি চায় বিধাতা পুরুষ ?
আমাদের এই হঠাৎ দেখার আয়ু
আরো একটু দীর্ঘায়িত হোক?
মনের কোণে ক্ষীণ আশার ঝিলিক ...
জানলার বাইরে বিদ্যুতের চমক
তুমি আজ বড়ই সপ্রতিভ...
যেন এই মাত্র উঠে গেছিলে কাউন্টারে
ফিরে এলে দুটো ক্যাপাচিনো হাতে...
প্রায় আট বছর পরে
“এতো দেরি করলে কেন”
অবাক তুমি, কিছুটা অপ্রস্তুত ..
কফি শপের দেওয়ালে টাঙানো
মস্ত টিভিটা বলছে প্রলয় আসছে
জানি এ দুর্যোগ যাবে কেটে
তবু বৃষ্টিঋণ আলগোছে ভালোবেসে.