মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০১৯

দেবাশীষ কোনার


দেবাশীষ কোনার

ফুল ফুটলে আনন্দ

নিজেই নিজেকে সাজাই প্রতিদিন ফুল দিয়ে
ফুল ফুটলে গাছের তাই বোধহয় এতো আনন্দ
না ফুটলে ভাবি কত কাজ বাকি রয়ে গেল
বুঝে বা না বুঝে কত ভুল করে গেছি আমি
নিদেন অফিস বাদ দিলেও ঘর গৃহস্থালি - - -

কত কি বোঝার বাকি থাকে ! দ্বন্দ্বযুদ্ধ
সোনাঝুরির মতো ডালপালা মেলে টিকে থাকা
দিগন্ত দেখছে শুধু বিপুল জনগণ - - -

শিখেছি যত তার থেকে বেশি শিখতে চেয়েছি
গুহার ভিতরে যে নিঃসীম অন্ধকার, আবেগ
সেখানে কোনও এক গাছের শিকড় নেমে আসে
টান মেরে ঝুলে পড়ি - - - আলো অন্ধকারে
সেখানে বাজে রবীন্দ্রসংগীত আর জ্যোৎস্না খেলে মায়াবী হোলি

নিজেই নিজেকে বলি, ফুল ফুটেছে তাই আনন্দ






ডালপালা
কোনোদিন আমি ডালপালা মেলিনি সে ভাবে

অন্ধকার গাঢ় হলে আমাদের গ্রামের পুকুর পাড়ে
ঘুমন্ত গাছের ডালপালা ধীরে ধীরে প্রসারিত হয়ে যায়

অগ্রাহ্য করে সকল বন্ধন

তারপর ছোট ছোট পরিবার নিয়ে উড়ে যায়

চলে যায় দূর দিগন্ত পার হয়ে

আমরা তখন বুঝি এভাবে একে একে সব ভেঙে যাবে


ছোট গ্রাম আরও ছোট হয়ে যায়
আকাশের নীল আরও গভীর

অনেকক্ষন একা একা ভাসে নিখিল নব বঙ্গের এক একটি নিলয়ে

পূর্ব আকাশের একনিষ্ট শুকতারাটির সুরে
একসময় ডালপালাগুলি তার পাশে বসে চিহ্নিত করে অবস্থান

সে সময় নতুন এক জ্যোতিষ্কর দেহ থেকে
ধীরে ধীরে ধাবিত হয় লোহিত বাষ্প ঘ্রাণ

সেই দেশে ডালপালায় এসে বসে কাক,
মাছরাঙা আর পানকৌড়ি - ওরা সব বৈমাত্রেয় ভাই


ডালপালার কাছাকাছি যত পুকুর নদী খাল বিল
শান্ত হয়ে এলে
তিন ভাই বাসা বাঁধে
স্ত্রী পুত্র কন্যা সহ তারা কলহ করে

নদী শান্ত হতে পারে
শাস্ত্রবাক্য পাঠে যত গৃহকর্মনিপুণা নারী
প্রাচীর ডিঙিয়ে আসে ভিড় করে
নদীকূলে দক্ষযোগ্য শুরু হয়ে যায়
তারা সক্রিয় হয়ে ওঠে লার্ভার মতো

কোনোদিন আমি ডালপালা মেলিনি সে ভাবে
আহা, এ মহাজীবন !
আমি যদি ডালপালা মেলতে পারতাম !






মেঘের সাথে খেলা

আমাদের সব খেলা ভুলে চল যাই
একমাত্র মেঘের সাথেই খেলি
কেন না সেই আমাদের সরাসরি বৃষ্টি দেয় ।

এখন সকলেই ভুলে মেরে দিচ্ছি
সেই সব উপকারের কথা , উপকারীর কথা ।
অথচ আমরা এক পাও এগোতে পারব না
এই সব বন্ধুদের ছাড়া ------- ।

ভাবছি এবার থেকে পাপস্খলন করব
যত অকৃতজ্ঞতায় ভরিয়েছি নিজেকে
সে সব ঝেড়ে ফেলে দেব গা থেকে
তারপর নতুন পোশাকে নিজেকে বদলাবো ।

মেঘের সাথে খেলব জলখেলা
নীল আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে অঝোর ধারায়
ভেজাব নিজেকে পরিশুদ্ধ হব বলে ---- ।







অবয়ব

দেখতে চেয়েছি নিজেকে সর্বদা
নায়কের মতো,অথচ কখনও  ভাবিনি
সত্যিকারের নায়ক হব একদিন
আমার চেতনায় ফাঁক ছিল
মাঝে মাঝে এসে দাঁড়াতাম
আয়নার সামনে নিজেকে দেখব বলে
চেনা হয়ে ওঠেনি সেভাবে
কেবল আমি, সেখানে কেউ ছিল না
চেয়ে দেখেছি বহু দূর পর্যন্ত
সেখানে ধাববান মেঘ ছুটে যায়
মা ফুল বেলপাতা সহ পুজো সারেন
স্ত্রী অনুক্ষণ কি পায় নি তার হিসাব কষে
এখানে গতির জন্য গতি নয়
পুত্রের জন্য পিতা নয়
বন্ধুত্বের জন্য জীবন নয়
তাই মনে হল যা দেখেছি আয়নায়
তা আসলে ছলনাময়ীর দৃশ্যশরীর
আসবাবে নিজেকে দেখে মেতে উঠি
বৃথা সমাপাতনে তাই আর পিছুটান নয়