মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০১৯

শাহানারা ঝরনা


শাহানারা ঝরনা

এভাবে জীবন

তারাভরা রাতে রূপকথা বলি জোনাকি মেয়ের সাথে  
তুমি কেন এসে মায়াপাশে বাঁধো নিভৃতে আঙিনাতে
চ"লে গেছে দূরে কানামাছি বেলা বসেনা পুঁথির আসর
মইষাল দিন ডাকে না তো কাছে ভাঙা যে স্মৃতির বাসর
মনু মাঝিরাও পেশা বদলেছে গায়না ভাটির সুরে
গানের পাখিরা ক্ষোভে অভিমানে দূরে চলে গেছে উড়ে
পালকি টানে না বাগদী বেহারা বাজে না রাখালী বাঁশি   
গৃহকাতরতা নিয়ে আজো একা বসে থাকি উপবাসী
ভুল পথে হাঁটি নিয়ে কত শত নিয়মের চারুকলা
বলি বলি ক"রে কত কথা আহা হয়না কখনো বলা
 ফুটপাতে শুয়ে যে কাঁদে কাঁদুক তাতে কিবা কার ক্ষতি
মাধুকী মোহের তড়িকায় ছোটে নিষেধের প্রজাপতি
লীলাচপলার বিজুলী চমকে মেধাতে আগুন জ্বলে
মনে ও মননে আধুনিকতার ডিজিটাল সোনা ফলে
পুষ্পিত দিন আসেনা নায়রে ঋতুর পালকি চ'ড়ে
সমঝোতাহীন মিতব্যয়ী আশা অসময়ে যায় ঝ'রে  
মধ্যবয়সে বসে করে কেউ সমতার বোঝাপড়া
আহা মানবতা তবু কেন তাঁকে দেয়না সহজে ধরা
দিন গুনে গুনে রাত জেগে কেউ স্মৃতিগাথা নিয়ে ভাবে
দূর পরবাস আহারে নিয়তি! কবে আর পাল্টাবে?
এভাবে জীবন ছুটে চলে যায়, যায় না তো বেঁধে রাখা
দু"চোখের পাতা জুড়ে তবু থাকে জোনাকি স্বপন আঁকা                                                                                                     
                        







কবিতা বাড়িতে

কবিতা বাড়িতে দুয়ে দুয়ে মিলে চার হয় প্রতিদিন
কবিতারা নাচে নূপুরের তালে রুনুঝুনু রিনিঝিন
যদি বাঁশি বাজে দূরে বহুদূরে ওরা হাসে নিশ্চুপ
কবিতার কথা সে যে মায়ামাখা আহা বড় অপরূপ।
মনে প্রাণে লাগে অভিসারী দোলা আকুলতা বাড়ে খুব
প্রজাপতি বেলা  নিয়ে হাসিমুখে এলোমেলো দিই ডুব
 শুকসারি  দিন ব্যথা শোক গাথা  নিয়ে হয় একাকার
স্মৃতি বাঁশরিয়া   কতো দূরে আজ মনে পড়ে বারবার
বুকে নিয়ে জ্বালা বিরহী কোকিলা বিচ্ছেদীী সুরে গায়
সেই চেনা ঋতু হারালো কোথায় আর খুঁজে সে না পায়
বাসনা বিলাসী হয়ে তবু করি কবিতার সাথে বাস
কবিতা আমার কখনো তোমার বেঁচে থাকার আশ্বাস
কবিতা বাড়িতে কতোকিছু হয় ফোটে কতো তারাফুল
 মন বাঁশরিয়া বাজায় বাঁশরি দূরে ঠেলে শত ভুল
প্রীতি বন্ধনে মনকথা গেঁথে আসে কতো মালাকর
 আশাময়তায় সুষমা ছড়িয়ে কেউ ভরে দেয় ঘর
চপলা সময় গতি মেনে চলে বোঝে বা বোঝে না কেউ
যুগ যানজটে মায়া হাতছানি আবেশে জাগায় ঢেউ
অতলান্তের মাধুরিমা নিয়ে দিনগুলি বয়ে যায়
কেউ হাসে কাঁদে কেউ সুর সাধে বসে ভাবি নিরুপায়
সাদাকালো  দিন আজো পিছু ডাকে ভরে যায় মনোমাঠ
ইচ্ছে বাঁশরি বেপরোয়া হয় শিখে নিতে শিশুপাঠ।    









মিথ্যে অভিযোগে

দুই চোখে তোর ইচ্ছে সুখের ছন্দগুলো নাচে
ঘোমটাখানি খুলে দিতে কেউ কি আসে কাছে?
নদীর জলে নৌকো ভাসে পাল তুলে দেয় মাঝি
ও রাঙাবউ উতল হয়েই সাজাস ফুলের সাজি।

শুকতারা দিন স্বপ্নকাতর কেউ রাখেনা মনে
আত্মা হৃদয় আবেগ ছড়ায় মৌরি ফুলের বনে
 মন বিরহী গল্প নিয়েই ঐ বাজে একতারা
আহা জীবন বড্ড করুণ তোর হাসিমুখ ছাড়া।

বন কোকিলার কুহু ডাকে কাব্য লিখিস যদি
 বিষাদ ব্যথার বৈরি ধারা  ছুটবে নিরবধি
দুঃসময়ের সুতোয় বুনে স্মৃতিরেখার শাড়ি
কার সাথে বল কেমনে নিবি শক্ত কঠিন আড়ি?

কাল মহাকাল  বেশ দরদী রূপকথা দিন আনে
পরাবাস্তব  সময়  চলে  শুদ্ধ  প্রেমের  টানে  
সুখ আসে যায় কেউ বুঝে হায় মন বাঁধে সাতপাকে
নষ্ট বিবেক থমকে দাঁড়ায় দীঘল পথের বাঁকে।

নীতির মাঝেই অসংগতি চলছে চারিদিকে
বিদ্যাবোধের সঠিক নিয়ম নিচ্ছে না কেউ শিখে
দরবারী মন খামখেয়ালি দ্বন্দ্ব দ্বিধায় ভোগে
ও রাঙা বউ, জ্বলবি কতো ! মিথ্যে অভিযোগে!!