শুক্রবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

জয়ন্ত বাগচী


জয়ন্ত বাগচী

বুকের ভিতর

যে পথে  মিশে গেছে অনেক পথ 
সেখানেই হারিয়েছি আমি
দীর্ঘ বনচ্ছায়া  আমাকে নিবিড় করেছে
ছায়ায়  মায়ায়
অভাবী মনের সবটুকু যন্ত্রণা বুকে নিয়ে
সেখানে অবিচল
কেউ এসে তুলে নিলো
ভালোবাসার গোলাপ ।
রইলাম চেয়ে
গলির ভিতর একান্ত নীরবে ।
সেখানে পড়ে আছে বাতাস
নেই কোন বৃষ্টির আভাস
আমার বৃষ্টি আছে
আমার মুঠিতে
অনন্ত ভালবাসায় বুকের গভীরে 






অপেক্ষায় 

টুংটাং  শব্দ এলোমেলো
রাতের শেষ ট্রামটাও ডিপোয় ফিরলো  
অবনী কি আর আজ আসবে এ রাতে
কোন কিছু হিসাবটাই মেলেনা আজকাল ।

জলে ভাসা শালপাতার মতো জীবন ছিলো
অবনী তাকে গৃহস্থ রমণী বানালো
এক  আশ্চর্য  মানুষ বটে সে 
বুঝি না সে কিসের কাঙাল ।

বানভাসিদের সাহায্য তোলায়  থাকে সে 
আবার বিকট শব্দে হাসে পরিহাসে
ভালোবাসা  নাকি  দায় তার কাছে
জানার ঘরটা ফাঁকা এমনই আকাল ।

শব্দগুলো আর তো আসেনা
অবনি আজ আর আসবে না 
এখন মেতেছে  বানভাসিদের নিয়ে 
আর একটা রাত কেটে আসুক সকাল 






বৃষ্টি

মনটা ছটফট করে
শুধু তোমার একার নয়
ভেবোনা অনুভূতি শুধু তোমারই
যে অনভূতি ভাসিয়ে নিয়ে চলে
যে অনুভূতি দোল দিয়ে যায়
ঘটনার ঘাত প্রতিঘাতে
সেখানে আমিও একজন
জেগে থাকি ঠিক তোমার মতন
একটা অদ্ভুত  সমাপতন   !
বৃষ্টি আর আকাশ
সমান্তরাল এগিয়ে চলা 
রেলের লাইন
কাছাকাছি তবু মিশে যেতে পারেনা
আকাশ বৃষ্টিকে বুকে নিতে গেলেই
ঝরে পড়ে গভীর আবেশে ।
আকাশ তার ঝরে পড়া দেখতে দেখতে
ফিসফিস করে বলে ঝরে গেলেও
বৃষ্টি তুমি আমারই





        
লজ্জা বস্ত্র

হাজার রঙের ফুলঝুরি জ্বালিয়ে
যে প্রেম ডানা মেলেছিল আকাশে
সীমানার গণ্ডি দুর্বিসহ হয়নি কোনদিন
তবুও মুঠো মুঠো ভাবনা উড়েছিল 
শিমূলের ফেটে পড়া তূলোর মতোই ।
অর্দ্ধ নগ্ন শরীর  ছুঁয়ে গেছে উত্তাপ
জ্বলন্ত মোমবাতি কাউকে পায়নি
জ্বালিয়ে দেবার নিপাট আনন্দ  ,যদি 
সবটুকু ডালিমের দানা কুড়িয়ে নিতে
তবুও কি থাকতো রঙের উন্মাদনা ?
চাপা  কান্নার মিছিলে ভিজেছে পতাকা
বারুদের স্তূপে অনির্বান দিশাহীন
একটা লজ্জা বস্ত্র উড়ে এসেছে বাতাসে
এবার তোমার মুখটুকু চাপা দাও  ! 





    
স্বপ্ন বাতায়নে

রাতের গভীরে কত রাত জেগে থাকে
অবসন্ন মায়াবী হেথালে জাগে সুর
ক্ষণকাল জেগে ওঠে হারানো বিক্ষেপ
সীমানা পেরিয়ে  যায় দূর বহুদূর ।
কৃষ্ণ সায়রে জেগে ওঠে আর এক দোসর
পশ্চিম বাতায়নে আমোদিনী সৌরভ
তোমার পল্লবে জেগে থাকে রাত
প্রতিটা রোমকূপে কম্পমান মসৃণ অনুভব ।
সবুজ শৈবাল স্নিগ্ধ ভরন্ত বুকে চেপে
রিরংসার আঁকাবাঁকা সর্পিল পথ
মেরুদণ্ডী কিছু ঐ মুখ টিপে হাসে
তাদেরই মাঝ দিয়ে চলে মৈনাক রথ ।
নীল তারা ছুঁয়ে এসে তোমাকে দেখেছি
দেখেছি জোনাকির ডানা বুকে জুড়ে
ভাবনায় জারিত রেণু নিশ্চয় দেব
দ্রাঘিমা  রেখা ধরে একটি একটি করে ।
রাতের গভীরে যে রাত জেগে থাকে
স্বপ্নের বেড়াজালে তারা  হাঁসফাঁস করে
তবুও একটিবার  তাকে কাছে টেনে
এঁকে  দেব তার নাম চুম্বন আখরে ।