বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

শেখ সামসুল হক


শেখ সামসুল হক

যখন বসন্ত

হাওয়ায় নাচে দূরের বনোভূমি
নির্ঘুম রাতের বিরল দৃশ্যাবলি ছুঁয়ে
বসন্ত এসেছে এইতো একটু আগে
তাইতো এমন করছে মনোরাজ্য জুূড়ে
অন্য কিছু নয় তারপরও কিছু
একটা আলাদা ভাবের চলমান গতি
কানাকানি করে বেড়ায় খুব কাছে
দেখতে পাইনা বুঝতে পারি অনায়াসে
ভাল লাগে ভাল লাগেনা এমনটা
ভেতরে বাইরে চলছে ধূলি ঝড় তুলে
মজা করে কথা বলার ইচ্ছে জাগে
হঠাৎ এসব থেকে সটকে যাই যাই।






সুখ বসন্ত নিহত নিবাসে 

সুখ বসন্ত সুখের ছোঁয়ায়
মনো রাজ্যের বাণিজ্য বিহার
থর কম্পনে বাজায় নিকট ঝর্ণার কাঁকন
পরবাসের কথার ফুলেল আড্ডার আকুতি
থাকে ভাবের ভেতরে বাইরে
চলে দূরের আকাশ ভাবনা
ঘুম কাতর চোখের জ্যোসনা
ভেসে ওঠার ব্যস্ততা দেখায়
হেঁটে বেড়ায় রোদের প্রখর উদাসী উত্তাপ
জানবাজির এমন খেলার পর্বত চূড়ায়
একা দাঁড়িয়ে নিজেকে হারিয়ে
বিশ বসন্তে অবাক অশান্ত
লাল পিঁপড়ে তাড়াতে পারে না
দেহ মনের নিহত নিবাসে।





বসন্ত লাটাই ঘুড়ি

বসন্ত গণমনে নিরজনে অন্য রকম
কেউ দেখেনা কারোটা বুঝে না কিছুই
এভাবেই চলছে সেই অনাদিকাল থেকে
হেরফের নেই যে এমনটাই জনশ্রুতি
আনন্দ বর্ষায় দুঃখের আহাজারি নিয়ে
আবেগ অতুল মূর্ছনা অতীক ভেতরটা
জুড়ে থাকে চিত্তদহ রাত্রি দিন শুধু
কৃষ্ণচূড়া ঠোঁটে হাসির দম ফাটে না তবু
 অবাক ভূভাগ অস্থির নাচের মুদ্রা খুঁজে
অক্লান্ত ঢেউয়ের উচ্ছাস একদা হারায়
বসন্ত বকুল ঝিমায় জাবর কেটে মরে
আরেক বসন্ত প্রত্যাশায় উঠে আসে বিনাশ
চায় না অন্ত প্রান্তর বসন্ত সীমানা রেখা
আকাশ ফুঁড়ে খুশীর বিস্ফার লাটাই ঘুড়ি।





এই বসন্তে আসবে অচিন পাখি

এই বসন্তে আসবে অচিন পাখি
চেনা জানার উপায় কি আর হবে
ভালোবাসার অমর প্রদীপ জ্বেলে
বসে থাকবো চলন বিলের ধারে
আশা বৃক্ষের পাতায় উঠবে জেগে
সারা জীবন যুদ্ধের অসীম খেলা
মেঘমল্লার অবাক চোখের ভিড়ে
কোন দিক যায় ধেয়ে দুরন্ত কি যে
বিল ঝিলমিল জলে তুফান ছোটে
আসে বসন্ত আসেনা পরান পাখি
চেয়ে থাকি অপেক্ষায় আসবে বলে
জেগে আছি সারারাত দিনান্তে দিন
এই বসন্তে অচিন পাখির গান
গেয়ে ওঠার মাহেন্দ্রক্ষণ তার
আর পাবে না এমন মধুর ক্ষণ
স্বপ্ন শিশির ভিজাবে চরণ তল
এলে আর যেতে ইচ্ছে করবে নাতো
দেখে যাও না সুদূর দেশের পাখি
সত্যি বলছি প্রমাণ এবার পাবে
এই দেজল প্রাণের সজল পাখি।





ফাগুন মতিগতি

জল ছল ছল বাসন্তী
ছুঁয়ে আছে কাল মেঘধারা
দুর্দান্ত রকেট প্রহর সারাবেলা
মানে না শিকল পূজা
চৌচির চোখের ঘুমরাত
বিরুক্তির বাজনা ঘর থেকে
ভেসে আছে করুণ মিনতি
ফালগুন মতিগতি সহজের
বাটখারা হাতরে বেড়ায়
নির্বাক নভোচারী দেখে না কিছুই
সাহসের দৃশ্যমান
নাম জপে উচ্চকণ্ঠে
বসন্ত দোল খায়
হাতের মুঠোয় যখন তখন।






বসন্ত বিদায়

বসন্তে বসত কাহ্ন সুন্দর অজ নিশি নিদ্রায়
দুঃখের বেসাত ফেরী করার প্রয়োজন হয় না
নিজস্ব নিয়ম অতি মাত্রায় খাবি খায় নির্জনে
দৃশ্যের ভাষায় পাঠ মন্থর গতি পায় সহাস্যে
নিকট বৃক্ষের পাখি উড়ার স্বপ্ন খুঁজে পায় না
এ কেমন কথা তার উত্তর জানা নেই ভূ-ভাগে
মতিহার মালা হাতে দাঁড়িয়ে লাভ ক্ষতি দেখার
হিসাব মিলাতে শত কষ্টের বসে হাট বাজার
এখন সময় মাছ রাঙার প্রভাতের শিকার
ধরার দারুণ এক সুর্বণ সুযোগের শ্রীধাম
প্রতাপ অদৃশ্য কাছে হলুদ পাতা মাথা নাড়ায়
বসন্ত বিদায় নিয়ে সদয় সাজে চূড়া মাধব।