বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

ইন্দ্রাণী সরকার


ইন্দ্রাণী সরকার

ভালোবাসি বলে

ভালোবাসি বলে একেবারে ছেড়ে চলে যেতে পারি না
ভালোবাসি বলে কষ্ট দিতে গেলে আঙুল আঁকড়ে ধরে
যেমন ওই কচি ঘাসের ওপর শিশিরবিন্দু ঝলসে যায়
যেমন সূর্য্যমুখীর রঙে তোমার ভালোবাসা মিশে যায়
তেমনি তোমার পাতলা ঠোঁট থেকে গোলাপের পাপড়ি
একান্ত আপন মনে এক একটা করে ঝরে ঝরে পড়ে
আমি দুহাতে পাপড়িগুলো তুলে নিই তোমায় সাজাতে
বেলি আর রজনীগন্ধা ছুঁয়ে পাপড়ির মালা পড়িয়ে দিতে
তোমায় অঞ্জলি দিই প্রিয়তম নবারুণ সূর্য্যের আলোতে
তোমায় আলিঙ্গনে বাঁধি প্রিয়তম রঙিন আবেশে ভরাতে |






ভাবনায় ভাবনায়

তোমায় ভেবে ভেবে সারাটা রাত কেমন করে যায়?

আমার ঘুমটাও কি তুমি নিয়ে গেলে?

এক অচেনা শহরে মনটা ছুটে যায়

মন কাকে খুঁজে বেড়ায় বুঝি না ।

একা একা হয়রান হয়ে যাই ।

তুমি আমার সেই স্বপ্নের রাজপুত্তুর যে বারে বারে

সামনে এসে দাঁড়াও আর কি যে বলো ?

এত বিশাল জায়গায় আমি যে

ভয় পেয়ে যাই একা একা

শুধু তোমায় ভেবে ভেবে  |

রাতের আকাশে তারার মালা ভেসে ভেসে যায়

তুমি এলে তোমার গলায় পড়াব বলে

রাতের আঁধারে আমার চোখদুটি

ভেসে যায় তোমার অপেক্ষায়

তুমি কি আসবে আজ হেথায় ?

আজকাল বড্ড বেশি মনে পড়ে তোমাকে যেন

বড্ড বেশি মনে পড়ে কোমল মায়ায়

ঘোর লাগা অন্ধকারে রোজ বিহনে

বড্ড বেশি মনে পড়ে স্বপ্নকথা

দেখা না দেখার কল্পরেখায় ।






কন্দর্পকান্তি

তুমি আমার সুখ পাখি তুমি আমার আকাশ নীল

তোমার মুখ যেন পদ্মফুলের কলি মুখে ফাটে কালীপূজোর তুবড়ি

বিধাতা পুরুষ তোমাকে দেখেই কি কন্দর্পকান্তি বানিয়েছিলেন ?

নাছোড়বান্দা তোমার নাক রোজ আমার পায়ের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যায় |

তুমি অনাহুত না রবাহূত তুমি আসলেই কে?

তোমার বয়স আমার পাড়ে আটকে থাকে তোমার ময়ূরীরা রোজ ধিঙ্গি নাচে |

তুমি কি তবে রোদে ধোয়া জল?যাকে খালি কাঠামোয় দেখা যায় ?

তুমি কি তবে চন্ডীদাস তাই কি আমার রামী জন্ম ?






চতুর্পদী নবসম্ভার

সংশয় আর ভাবনায় ভরে থাকে মন অনুমতি প্রত্যাশী
যতই প্রেরণা দেওয়া যাক না কেন দ্বিধা জড়িয়ে রাশি

দূরগামী সারস পথের নিশানা পায় না নিজেকেই চেনে নি
ছেঁটেকেটে ওপারে গিয়ে বায়নাকুলার শান্তি আনতে পারে নি

চর্যাপদ কবি পুরোনোয় ভ্রান্তি খোঁজে নতুন কেন আসে না
চরণে চরণে পাথরের কাঠিন্য ভরা মিঠে বুলি আর জাগে না

কবিতা দিদির হাতছানি যেন দু:খের কর্ষিত এক শস্যক্ষেত্র
নিজের সুখের কথা আজকাল আসে না বোনেতেই তাই মিত্র |





সাহিত্যচর্চার নিত্যকড়চা

#

বারবার ডাকা সত্ত্বেও যুগান্তরী ভালোবাসা

ভিখিরীর বেশ ধরে জানলায় উঁকি মেরে

কথা বলতে চায় মাছের ভাষায়

প্রপিতামহ চরিত্রদের বিছানায় শোয়ায়

পাশে নাতি দাঁড়িয়ে লোকের মাথা কাটে

নিজের মাথা কোনোদিন দেখা যায় নি

#

গোঁফ দাঁড়িয়ে আছে ট্রেনের জানলায়

পাশে পড়ে আছে অজস্র পাথর

মাথা ঝুঁকে পড়ছে গবেষণার টেবিলে

চশমা ধরে আছে চাদরের খুঁট

সনৎ সিংহের রকমারি ভূত ধরা গানের মত

রকমারি ভূতেদের কুষ্ঠি নিয়ে আদালতে যায়

#

পূর্ণিমার চাঁদ আদেখলে স্বভাব

কেউ তাকে চেনে নি, জানে নি

আর পাঁচটা দেবদূত ও দেবদূতীর মত

বায়নাকুলার লাগিয়ে একমুখো দৃষ্টি

ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখে আশপাশ

রোজ ঘড়ি ধরে দেখে কটা প্রেমিক এল কটা গেল