বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

তৈমুর খান


তৈমুর খান
            

অন্য এক অবকাশে
 __________________
কোনও অবকাশ ছিল না যদিও
                 তবুও এক অবকাশে চলে যাচ্ছিলাম
                     জলোচ্ছ্বাস থেকে উঠে আসছিল
                                         জলের সন্তানেরা

আবেগের তীব্র ধ্বনি
        শিস দিতে দিতে
        আবার নেমে যাচ্ছিল জলে

তেপান্তর পেরিয়ে চলে যাওয়া
       কোনও রাজপুত্র হচ্ছিলাম মনে মনে
           ঘোড়াটিও ছুটছিল দুরন্ত গতি

রাজকন্যার মুখ মনে ছিল
      চোখে মুখে তীব্র আলোর ঝলকানি

কোন্ শক্তি জেগে উঠছে এমন  ?
       সমস্ত সীমানা ভেদ করে
       চলে যাচ্ছি , চলে যাচ্ছি দূরে.....







    
আমাকে যেতে হবে
       _________________
     চোখে শুকনো অশ্রু নিয়ে এসেছি
                 কলামন্দিরের পাশে তুমি দাঁড়িয়ে আছ
                           তোমার মাথায় নেমেছে বিকেল

          এখনও আমি বৈরাগ্যকে খুঁজছি
              কেউ চিৎকার করে ডাকেনি আমাকে
                   অপেক্ষার দিনরাত পার হয়ে
                     একটি নিজস্ব আয়নায় এসে দাঁড়িয়েছি

               তুমি কলামন্দিরের পাশেই রূপক
                   ডানে বামে ঘাড় ঘোরাচ্ছ অতীত ও ভবিষ্যত
                                    মাঝখানে স্বর্ণময়ী রোদ
                                        তোমার মুখের আলো

তীব্র নিয়ন্ত্রণের ভেতর ছুটে যাচ্ছে ট্রেন
         আমাকে যেতে হবে অন্ধকারের দিকে
            নিশ্চুপ কথারা সব ছুটোছুটি করে
            কিছু কি বলতে চায় শেষ কথা তোমাকে  ?


            




কাঁপন
          _________

একটি কাঁপন লিখি
কাঁপন কি লেখা যায়  ?
হুহু শব্দের কাছে দীর্ঘশ্বাস রাখি
দীর্ঘশ্বাস কি রাখা যায়  ?

যারা গোপন আলো জ্বালে
নিজেদের মুখ দেখবে বলে
আয়নার সামনে দাঁড়ায়
আমি তাদেরই কেউ হই

বাদাম ভাজা খাইনি কোনওদিন
যাইনি গড়ের মাঠে
মাটির দাওয়ায় ভাঙা সূর্য পেলে
কুড়িয়ে নিয়েছি তপ্ত রোদের ঢেউ

বিষাদের স্বাদ যতই তেতো হোক
দুর্ভিক্ষে খেয়েছি তাই
ক্রীতদাসের মতো চাবুক খেয়ে
রাত জেগে বাজিয়েছি বাঁশি

আগুন আমার কাছে এসে
ভিজতে ভিজতে ফিরে গেছে
কথা চলে গেছে বহুদূর
  কাঁপন ঢেউ তুলেছে আকাশে

                    
   




নিশিবেলায়
   ____________

পাখির মতো ক্লান্ত দিন
চলে যায়

যেতে যেতে ডাকে
ডাকার সংকেতে
নিভে যায় আলো

আঁধারের চুলগুলি জড়াই
প্রিয়ার মতোন চোখেমুখে


  



আমার ঘর
  ____________

এখানে শহর নেই
মাটির বাড়ির দাওয়ায়
নিঃস্ব পিতার ছায়া পড়ে আছে
মায়ের নিকোনো উঠোনে বৃষ্টির দাগ
আমাদের কিশোরবেলা আজও ছুটোছুটি করে

অদূরে মাটির কলসি ঠাণ্ডা জল নিয়ে বসে আছে
পিপাসা পেলে যাই তার কাছে
পাতার জ্বালে সেদ্ধ হয় ভাত
নতুন ধানের গন্ধে ঘর ভরে আছে