মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৭

বৈদূর্য্য সরকার




বৈদূর্য্য সরকার

জীবন মানে অনন্ত বিরহ
স্মৃতির বদল

আগে যে মেয়েটাকে কাজল মনে হত 
কার্তিক বিকেলে সে নিতান্ত কেজো,
আমি কিশোর থেকে রফিবেলায় এসে
বুঝতে পেরে গেছি জীবনে কঘন্টা ।

হেমন্ত এসেছে হেবি স্মার্টনেসে
পাখিরা উড়ে যায়, সৌরভ ফটো তোলে ।
মুগ্ধ করে দেওয়া ব্যাগপাই দলের
ব্যান্ডমাষ্টার এখন ফল বেচে ।

কৈশোর স্বপ্ন নাটক বন্ধুতা
লিটলম্যাগেরা ... হারিয়েছিল বলেই
কোনও স্বীকৃতি না পাওয়া লোকেরা
অযথা বিনয় না, রাগ দেখাতে চায় ।

পুরনো সে কবিতা সুরেলা হাসি ছাড়া
ব্যাঙ্ক ব্যালান্স নিয়ে ভাবতে হয়,
মিসফিট সংসারে ঢুকে পড়েছি বলে
সমন্বয় রাখি পাখা খোলা বন্ধে ।





পতন

দুই বিনুনি তরুণী শিরশিরে সারাহায় ডাকেনি কোথাও
গঙ্গা এসে বাঁক নিলে অতীত প্রেমিকা বলেছিল,
প্রকৃত বিশুদ্ধ বলে যদি কিছু তা হল অবিকৃত অতীত !
অতীতের আকর্ষণ কমে আসে বলে মানুষ নিজের মতো
পৃথিবীর আকার যেমন নিজের মতো হয়েছে ।
জীবন মানে যে শুধু ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকা
রবীন্দ্রসঙ্গীত নয়, প্রেমে যে প্রবল আঁচড়কামড়
তা জানতাম না বলে বুঝতে পারিনি...
তোমার নখে কি ছিল, ম্যানিকিওর নাকি ম্যাজিক !
ভুলতে পারিনি কৈশোরের সেই অবোধ ছবিটা,
চোখের সামনে দিয়ে- পথ  চাওয়ার সে আনন্দে
আমরা যেতে চেয়েছিলাম চিরযৌবনেরর দেশে ।
কোথাও বিশেষ সুবিধা না করতে পেরে  শেষে
এসে পড়লাম বসন্ত পেরিয়ে বৈশাখের কামনায়।






বিশ্বাস

হেমন্ত আসছে বলে সব ভোলা যায় - নিজেকেও
বাতাসের শিরশির মাখি খোলা জানলায়,
জীবন সাজানো মানে অন্য কিছু নয়
নিজের ছবিটা ভাল ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার ব্যবস্থা ।

অচেনা শহরে যেমন রিক্সা ভ্রমণ
বহুদিন আগে থেকে ঠিক হয়ে আছে,
এসময় ঠিক এভাবেই  নিজের কাছে নিজেকে
জোর করে বারবার বলি সব ঠিক হয়ে যাবে  ।

আগে যেখানে ছিলাম নির্জন প্রান্তরে
ফিরে যেতে হবে যদিও পথ অজানা,
ব্যক্তিগত উত্তেজনা -কিসের মেমরি মনে নেই
পাকদণ্ডি বেয়ে জীবন ড্রিবল করে যুব বিশ্বকাপ ।






সামান্য

সাধনে যেমন ঘটে
এ সামান্য উপহারে ভরে থাকে মন,
সিগন্যাল না পাওয়া সুপারফাস্টের পাশ দিয়ে কখনও
বয়ে যায় লোকাল জীবন ।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে এলে বিএসেনএল নাম ফিরে আসে
বুকের মধ্যে যেমন জমে থাকে কবিতার ঘাম,
আমরা যে সবাই আসলে বিভ্রান্ত বলে ভেবেছি
আমাদের সবার শরীর ভাড়া নেয় পদাবলী ।

আসলে কিছুই নয় শুধুমাত্র ধূধূ  - ধ্বংসকে সামনে নিয়ে
বসে আছে যারা চোখে ভবিষ্যৎ মেখে,
দারিদ্র দেখাতে নেই যে কারণে ঠিক তেমনই
বিষণ্ণতা ঢাকি ঝকঝকে প্রোফাইল পিকচারে ।






সন্ধিপ্রস্তাব

একটা সকাল বিকেল গিললে সন্ধেবেলা হাই ওঠে
কোথাকার সব অসংলগ্ন কথা
আলো মরে এলে, রঙ মাখানো ব্যস্ততা
ঘাই মেরে যায় মাথার ভেতর ।

জীবন আসলে এক পর্যাবৃত্ত গতি
ডাকনামে চোরাবালি কোথায় ডুবেছি,
নিম্নচাপে ভাসতে থাকা শহরে রাতে ফিরে আসি
সকালের রোদে লেখা থাকে স্বাগতম  ।

সো হোয়াটবলে ভুলে যাচ্ছ এ সৌজন্য বিনিময়
কতটা কাছের ছিলে ভেবে দেখা আশ্চর্য অতীত,
কতদূর যেতে হবে কার কাছে ঠাঁই
ব্যর্থ মানুষের অহংকার
        ছাড়া কি বা থাকে !