মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৭

বিভাবসু দে



বিভাবসু দে

ব্যর্থ প্রেম

ঝরেছিল কি যেন
শব্দহীন নৈশব্দের অতলতায়,
বিশ্বামিত্রও কেঁদেছিল একদিন
মেনকার ভালোবাসায় ;
দেখছো কখনো আগুন জড়িয়ে ধরেছে
শিশির-নাওয়া শিউলি বালিকাকে ?
অথচ পোড়ায়নি তাকে,
পুড়েছে নিজেই প্রেমের দাহে ;
অসীম অন্ধকার নিংড়ে ওঠে
যে আর্তনাদ ,
শুনেছ কি তাকে কখনো হাসি হয়ে ঝরতে
বালিকার ঠোঁটের কোণায় ;
ঝরেছিল সেও একদিন |






সময় দৌড়

সময়কে কখনো থামতে দেখেছেন ?
থামা তার ধাতে নেই,
ছুটে যায় সে নিজের তালে,
আমরাও ছুটি তাল মেলাতে ,
সময়ের সাথে ;
আজন্ম সদ্ব্যবহার করে চলি সময়ের ,
সময় ফুরিয়ে যায় ;
পেটের ভাত-না-জোগানো স্বপ্নগুলো
শুধুই পচে মরে সময়ের দিগন্তরেখায় ,
জীবনজুড়ে শুধুই গড়ি ইটের ইমারত ,
কচিঘাস পিষে চলি সময়চাকায় |






মোনালিসা

ছবি এঁকেছিলাম ,
কার, তা তো মনে নেই আজ ,
বুকের রক্তেভেজা তুলির মুখে
উজাড় করে ঢেলেছিলাম
আত্মার রং ;
তার ঠোঁটের হাসি
মায়ার ইন্দ্রজাল গড়েছিল
আমার মনের স্বপ্নদিগন্তে ;
সে কি হেসেছিলো সত্যিই ?
জানিনা | লোকে বলেছিলো 
মোনালিসা |






ফিরে আসা

আগুন জ্বলে উঠেছে আমার চিতায় ,
আজ অগ্নিস্নানে জুড়াচ্ছে
আমার জন্মান্তরের প্রদাহ ;
শেষ আহুতি হয়ে চিতার কাঠ বেয়ে পড়ল,
আমার লক্ষজন্মের জমা পচা চর্বি ;
মাংস চর্বি গেল ,
এবার হাড়ের খাঁচায় ধরেছে আগুন ,
পাঁজরের সৌধ ভেঙে ভেঙে পড়ল
তপ্ত চুম্বনে ;
যা নিয়েছিলাম সব দিয়ে গেলাম ফিরিয়ে.....
তবু জানিনা কেন,
প্রাণের কোনো এক অজানা গুহায়
লুকিয়ে নিয়ে গেলাম ,
শিশিরভেজা হালকা রোদের
একটি শিউলি ফুল |






পথচলা

জন্মান্তরের জুতো পরেই গর্ভে ঢুকেছিলাম ,
ছুটতে হয়েছে ভূমি ছোঁয়ার আগেই ;
ছুটেছি , থামিনি কোথাও ,
পথটাও ছুটেছে আমার সাথে ,
থামেনি সেও ;
কখনো বেঁকে বেঁকে ঢুকেছে সে পাতালপুরে ,
মাটি ফুঁড়ে উঠেছে আবার, উঠেছি আমিও ;
কে যেন এসেছিল পাশে ,
শিশিরভেজা কোনো এক শিউলিবেলায়....
পথের বাঁকে পথ খুঁজে নিয়েছে সে ,
নিজের চলার ;
আমি থামিনি, ছুটছি আজও ,
পথটাও থামেনি,
ছুটছে সেও আমার পাশে ;
নোনাজলের শিশির ভিজিয়েছে তাকেও বোধহয় |