মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট, ২০১৮

পৃথা রায় চৌধুরী


পৃথা রায় চৌধুরী

এখানে বিগত বিদ্রোহী আসে

মুছে যাচ্ছে গোলাপী ওড়নার বিকেল,
দৈনন্দিন গ্যালাক্সিচারী হবার ইচ্ছেকে
চেপে ধরছি সেখানে ধর্ষকের মতো


চেষ্টা করে বিনোদনের ছলে দুর্বোধ্যকে
সাজিয়ে দিয়েছি শাস্তির ভয়ে
হুজুর, সন্দেহাবসরে আপনি থেমে যান
পরবর্তী অস্ত্রাঘাতের পরিকল্পনায়


আপনার আয়নাছবি ক্রমাগত
পাতালে নামিয়ে আনে চোখ
ঠোঁটের কানাচে জেগে থাকে আগ্রাসী প্রেম
হ্যাঁ, প্রেমই নাম দেবো তাকে...


কোপ, আঁচ, অথবা জ্বালাময়ী কথন ছাড়াই
আপনার সামনে বারংবার গেয়ে উঠি
"সজন রে ঝুঠ মত বোলো!"








এক শহর যুদ্ধশেষ

সাদা পতাকার ভোর আনে সমঝোতা
বিসমিল্লায় অক্ষত বাজে ক্ষত
বেহড় পেরিয়ে উল্লাসী পয়গাম
আগুনে লোহায় সেজেছি পেরেছি যত।


দেওয়াল দেখেছে পিঠের লুকোনো কাঁপ
পায়রাদুপুর মিথ্যে দুর্গ আঁকে
বর্গীহানায় দ্বীপবাসিনীর বাকল
ডুবিয়েছে নাও বেমালুম ঝাঁকে ঝাঁকে।


কঠিন কথার বিকেলে অসুখ দামী
এখন পর্দা রাজশাহী কিংখাব
নাটকের শেষে উদ্ভ্রান্তের দৌড়
মৃত সৈনিক দেখেছে নয়া খোয়াব।


আতসকাচে পৃথিবী শেকলবদ্ধ
দারুণ আদরে ঠকিয়ে ফেরার দায়
পাথরকুচি আঙ্গুল দিয়েছে ছুঁয়ে
অলিতে গলিতে ইতিহাস ভেঙ্গে যায়।








অবিশ্রান্ত বয়ে যাওয়া... তোমার জন্য

তোমার দরজায় শালুক শাপলা
তোমার নাড়ির গতি শুনছি


তোমার ইমারতের আশেপাশে যে পশলা কাঁদে
তুমি তাকে সান্ত্বনা দাও?
কি বলো, জানতে ইচ্ছে হয় বড়ো...


তাকে কখনো আলতো ছুঁয়েছো, তার স্নানচোখের কালে?
তোমার রাস্তায় কাদা জমাতে আসেনি সে...
সে অভিমানীকে দূরে সরিয়েছো, বেশ
দুঃখবিলাসী নিপাত যাক...


তোমার শহরে তুমি একা ঈশ্বর জানো
তোমার হ্রদের পদ্মপাতায় শৃঙ্গার ভাসিয়েছে
ভাসিয়েছে বসন ভূষণ...
মনোবিকারের ঈশ্বরী।
বৈকুণ্ঠ, উপশম দেবে?







শুদ্ধিকাল

আজান... ভোর রাত অন্ধকার
পুবের আকাশেই ধরবে সিঁদুর...
তবে কেন তার আঙ্গুল ছোঁয়
শাশ্বত উপেক্ষিতার পট!


তোমার মাটির ছাদের তেষ্টায়
মাটি হয়েছে শস্ত্র, বুঝিনি...
ভাঙ্গনে নিশ্চিহ্ণ বর্ম তোমার,
সাবধানে থেকো স্বপ্নসন্ধানী।







মুখোশধারীর উৎসব

গন্ধরাজের খেলা শুরু হলেই মনে হয় ভেসে আসবে গরম রুটির দেয়ালা
একান্নবর্তীর এক সমুদ্র উঠোনে গ্রাম দেশের আহ্লাদ,
সেখানে লুটোপুটি খাবে খান বিশেক অন্য অন্য মায়ের সন্তান সন্ততি...
এক পেটের।


জ্যৈষ্ঠ মাসের ব্রতকথার বই মুড়িয়ে ছোড়দি বলে উঠবে কোথাও থেকে
তিনবার জিজ্ঞেস করতে হয়, জয়মঙ্গলবার করা হলো?
একানে দুপুর নিজেকে প্রশ্ন করে বরং, হারিয়েছিলে... পেলে?


ব্রেস্ট ক্যানসারের মীরাদিদি, কেবল বাঁ দিকের সৌন্দর্য নিয়ে আসবে,
তালক্ষীর বানিয়েছি সবার জন্য... বলেই ডানদিক কপাটে চেপে দাঁড়াবে।
আহা দৃষ্টিরা বাড়িয়ে দেবে আহা'র তীব্রতা।


অল্প করে ভোর হাত বাড়ালে আসে নরম সবুজ ছেলেবেলা;
সামনে এসে দাঁড়ান আমার পুণ্যাত্মা ঠাকুরদা
ফিরে আসি নিজের ঘৃণিত তেজে... পুণ্যাত্মা সাজি আবার।