মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট, ২০১৮

শ্রাবণী সিংহ


শ্রাবণী সিংহ

ম্যানিকিনের পাশে

পরস্পর নিঃশ্বাসের শব্দ শুনি, কানে তালা ধরে
এত শূন্যতা --কোলাহলেরই নামান্তর!
চুপ থেকেও সবাই কিছু না কিছু বলছে, মুখে পুরছে
সুগন্ধি পানমশলার মত
যান্ত্রিক শুভেচ্ছা বার্তা
ভেসে আসছে নিউরোস্রোতে
''পাশে আছি, থাকবও ম্যানিকিনের পাশে।''
...............

বহুদূরে
লাল টিপের করমচা খেত ...
সূর্যাস্তে চৌষট্টিকলায়
নিজেকে মেলে ধরেছে কৃষক-রমনী!

 





অসীমের খেলা

ফুল ফোটানো তো অসীমের খেলা।
আমি  মালি।
সমুদ্রতীর অব্দি যেতে পারি না।
ফেটে যাওয়া শিমবীজের কবজে দেখে নিই  সূর্যডুবি,
বর্ণালী ভোর।






গ্রহণ আলোয়

রেটিনার মৃত্যু হয় না সহজে।
অন্ধের আলো প্রতিফলিত হয় যে বন্ধঘরে--
          তার নাম চোখ,
এক কাঁচ-রঙ বিকেলে
বলয়গ্রাস গ্রহণ আলোয় তাকে দেখি।
অন্ধকারে পরস্পরের মুখের জিওগ্রাফিতে মুখোমুখি,  ভীত হই...
এই আয়নায় বেঁচে গেলে মরে যাই বারংবার।

অতএব
ফুলস্টপে না-বলা শব্দটিই  অর্ধেক জীবন।

অধিবৃত্ত আঁকছে যারা ,
বৃত্তকে এক বিন্দুতে মেলাতে না পেরে।

মুঠোয় ভাগ্যরেখা , তবু ভাগ্যকে কি করে ফেরাতে হয় জানি না।
বিড়ালের ভাগ্যে শিঁকে ছেঁড়া উঠে গেছে কবেই।
যতিচিহ্নের ভুলে এলোমেলো হেঁটে যাই কত
বান্ধবহীন নির্জনতায়...

নীল ধনেখালি নদীর সীমানা।

জানি না কোনো ভুল পথে আজও  চলে যাব কি না।






বন্দী আমি

নিঃসঙ্গতা আর পরাজয় নিয়ে ভাবি না,
দিনের তিক্ততাকে শস্যের মেঝেতে
        উপুড় করে দিই।
প্রতিটি নতুন দিন জন্মদিন ভাবি,
দূরত্বকে মোমবাতি বানিয়ে  জ্বালিয়ে রাখি।
বিনিদ্র রাতের কিছুটা সময়ের অভিশপ্ত অন্ধকার
মুছে ফেলতে এই-ই কিছুটা স্বস্তিদায়ক।



স্থিতধীও নই,
কখনও অসহ্যরকম অসহিষ্ণু হয়ে  ভেতর ভেতর
ঝিনুকখোলে কেন বন্দী হয়ে যাই আমি
      
             .....জানলে না তো!






পারতাম যদি

ক্ষীণ আলো থেকে গড়িয়ে পড়ছে ঈশ্বরকণার ছাই ...
নির্জনতা পাঠ্য নয়,
অন্ধকার আমাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় নিভৃত গরল আকর্ষণে!



আলো বড় বালাই
পারতাম যদি চিরায়ত আঁধারকেই আরেকটু টেনে নামাতে
পারতাম যদি  লোডশেডিং য়ের সেসব অধরা সন্ধ্যা ফিরিয়ে আনতে


পারতাম যদি
কবিতা ও কলমে ইতি টানতে .........।