মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট, ২০১৮

শ্রীপর্ণা চ্যাটার্জী গাঙ্গুলী


শ্রীপর্ণা চ্যাটার্জী গাঙ্গুলী

মনকেমনের গল্প

অল্প অল্প মনকেমন করলে সজনে গাছে
এসে বসবে পাখিটা,যার পালক গুলো
হলদে আর কালো। আরো একটু  মন কেমন
করলে  ইলেকট্রিকের তারে  এসে বসে যাবে 
ছোট ফিঙে পাখি, লম্বা লেজটি
যার ফিতের মতন ; সূর্য  ডোবার পরে 
একান্তে ,একাকী ।  সামনের
উঁচু  গাছটার পাতার আড়ালে
জ্বলবে জোনাকি যার সংখ্যা  গোনাই যাবেনা।
মন কেমন  আরো গাঢ় হলে
ভিজে দিনে উঠোন পেরিয়ে
যেতে হবে সেই ঘরে,চলে গেলে
যে ঘরে  আসন খানি একা হয়ে পড়ে ।
উঠোন ,বারান্দার মন কেমন করে।


                            





আশ্রয়

একটি নিবিড় আরক্তিম  সম্পর্কের জন্য
আমি একটা  শিমুল গাছের কাছে যাই।
সেই গাছটা আমায় চেনে না ।
আমি তার  রাঙা রাঙা  ফুল দেখি  ,
ফল  দেখি , বীজের ভিতর ।
আমি তার বাতাসে  ভাসার দিন গুনি ।
সে ফুল থেকে তুলো হয় ।
কান্নাকাটি মুছিয়ে দেবার তুলো।
নরম পেলব তুলো
কান্নার নিবিড় আশ্রয় ।

                         





জলজ

নীলাভ  সবুজ জলে  ডুবে থাকা  
হংসীর চোখে  জল এলে
জেগে ওঠে শস্যক্ষেত অগাধ অপার ।
নিঝুম জোৎস্নালোকে অচেনা সঙ্গীত
দূর থেকে দূরবর্তী হয় ।তারপর
মিশে যায় অনন্ত নিশায় ।
নিশাচর শুষ্ক অমসৃণ চোখে
পেলব  শিকার খোঁজে ।
জলজ গন্ধ খোঁজে উঁচু নীচু লুব্ধ চোখ
ধানজমি ,শস্যক্ষেত ।
অশ্রু অসহায় ।

                         





নুড়ি ঘর

নিরঞ্জনা  নদীজলে  ডুবে আছে নুড়ি।
জলের গভীরে  ঝুঁকে চাঁদ দেখে মধ্যরাতে 
নুড়িগুলি  লাল ,নীল ,হলদে সবুজ ।
দুলে দুলে  নদীর আঙুল  ধরে
হাতের পাতায় বালির আঁচড় কাটে ।
বুকের সুগন্ধে  মুখ গুঁজে  গুমরে গুমরে কাঁদে ।
ছুঁয়ে থাকে উন্মুক্ত চুল ।
চাঁদ চুপি চুপি দেখে মধ্যরাতে
নুড়িগুলি একান্ত নিবিড়ভাবে ছুঁয়ে থাকে নদী ।
কল্লোলিনী আনমনে  প্ৰবাহিত হয়।
চোখে জেগে থাকে তার পরমা আশ্রয়।

                           






সাধ

ভিজে ভিজে থাক আঁখিপল্লব
                ভিজুক  শব্দাবলী
শুধু ভেসে থাক ,ভাসমান থাক     
                  অপূর্ণ সাধ গুলি।