বৃহস্পতিবার, ২১ জুন, ২০১৮

মোঃ সরোয়ার জাহান



মোঃ সরোয়ার জাহান

পুণ্যময় জীবনের যাত্রাপথে

বৃষ্টি তোমার অজস্র বিন্দু নামাও
দিগন্তে এঁকে দাও সীমানা
বৈশাখী রাতে সেই যে নীরব নিথর জলে
ভালোবাসা গেছে সমুদ্র ডিঙিয়ে
হাওয়ায় ভেসে ভেসে অন্য অচেনা সীমানায়!
তবু ও বুকের মধ্যে পাগল পাগল খুশি
তোমার শরীরের উত্তাপ আমার শরীরের উত্তাপে
হয়েছিল কিছু পুণ্যময় জীবনের যাত্রাপথে যেতে যেতে!
তবু তো মরে না তৃষ্ণা বুকের খাঁচার মধ্যে
বাতাসে বৃষ্টি নেই এক বিন্দু জল নেই কোথাও
নারী তুমি যদি বৃষ্টি হয়ে আমার দুচোখ ধাঁধাও
কোমল বুকে আঁকি যদি আলপনার বাহারি রঙ
নখের দাগে রক্তে ওঠে যদি তুফানের ঝড়
মেঘরা যদি ঝুকে পড়ে খুব কাছে তবে তো
দুচোখে লাগবে দুঃখের কাজল
এ কেমন বেঁচে থাকা বলো ?
যার কেন্দ্রে থেকে যায় জীবনের বিমুখতা শুধু !
তবু যেতে হবে বহু দূরে নিজেকে ছাড়িয়ে
জানি অসীমার কাছে
নারী তবু এসো আর একটি বার শুধু
রক্ত মাংসে,যে রকম আসে ফুল গন্ধে গন্ধে মদির রাত্রি !






উচ্ছিষ্ট এই জীবন

শরীরে স্পর্শের স্বাদ মুছে নেয়
দিবসের চোখ
শোধ করি
স্পর্শের ঋণও
বিষের মতোই তীব্র
নারীর সেই স্থির ভালোবাসা !

অবুঝের মতো মন বলে ওঠে
মিথ্যে সব মিথ্যে
বেদনাকে রূপান্তর করি
আনন্দ স্মৃতিতে
খুশির খেয়ালে স্মৃতির মৌন করি পূর্ণ
জনারণ্য উপহার দেয় শুধু অতৃপ্তির জ্বালা !
ভুলে যাবার চেষ্টা করতে করতে 
তোমাকে  মনে রাখতে চাই
চলে যাই নিজের ঘরে সঙ্গে নিয়ে বৃষ্টি
তোমার বুকের উপর উত্তপ্ত উৎসুক আমার হাতের স্পর্শে
আবার বসন্তের সেই হুলুস্থূল, আবার অনিশ্চয়তার অন্বেষণ
এখন বিনা  আক্ষেপে 
সহ্য করতে পারে সব কিছু  , অবশিষ্ট  এবং উচ্ছিষ্ট এই  জীবন  !






পা মাটিতে নেই

প্রভাতের অবগুণ্ঠন হতে
প্রকৃতির পরম প্রশান্তি হয়ে
দূরে আরো দূরে উড়ে যাব
কাব্যের অদৃশ্য পাখনায় ভর করে
ঠিক পৌছে যাবো তোমার কাছে !

বুঝিনা কেন যে
দুর্দান্ত গতিশীল বাতাস
তার তীক্ষ্ণ নাকে
কার গন্ধ গেঁথে ছুটে যায়
তীব্র তীক্ষ্ণ শিসের মতো
একটি প্রলম্বিত লয় হয়ে !
তুমি কি সূর্যের অধরা
তেজ চাঁদের শিশির কি তুমি?
আমার ইচ্ছাকৃত স্পর্শ আর
ছোঁয়ার বাইরে
রয়ে যাবে অনন্ত কাল ;
পা মাটিতে নেই তবুও
জীবন নেমেছে প্লাবনে
বাতাসে উড়িয়ে নিতে
আমার সকল নিস্তব্ধ নিঃশ্বাস !






ইতিকথা

সমুদ্রপারের যতো নীল নীল দিন
তোমার যতো নীল নীল ভালোবাসা
বিবশ উরুতে লীন হতে হতে
ক্রোধ গুলো চাপা পড়ে যায়!
এখন ওসব প্র্রজাতি খুঁজে কী লাভ বলো
পরম ও ক্রমহীন মুহূর্তগুলো
থাক না হয় সংজ্ঞার অতীত
অনন্ত তৃষ্ণা দিক সূর্যাক্রান্ত অত্যুজ্জ্বল দিবা !
ধমনীর রক্ত ঠেলে দুর্দান্ত পাখা মেলে 
উঠে আসুক জীবন
সশব্দ রূপান্তরে
সকল অতীত ইতিকথার মতো .…!





খেলা ঘরে

দাহ শেষে সব অশ্রু উড়ে যায় বর্ষার বাতাসে
পড়ন্ত জীবনে পড়ে থাকে অপরূপ চলে যাওয়া
কলঙ্ক তুমি প্রদীপ আর প্রদীপের বাটিই দেখলে
তুমি দেখলে না চিরজ্বলন্ত ভালোবাসা
কেমন মিশে গেছে দিন-রাত্রি !
এখন শরীর ভরা আগুন নিয়ে সাঁতরে যাচ্ছি
দিগন্তের দিকে অথচ আমার সীমান্ত পারেই
শুনেছি ঝরে নাকি নীল নীল হৃদয় !
চুপ করে পানিতে ঘাপটি মেরে শুয়ে থাকি প্রতিক্ষায়
ওহে নীল হৃদয় তোমার জন্মানোর আর কত দেরি ?
তুমি কি ঝড়ের মধ্যে ছুঁয়ে যাবে সর্বস্ব শিকড়হীন সন্ধ্যায় আমায়
যখন মেঘ ও রৌদ্রের প্রভুরা মেতেছে মেঘ ও রৌদ্রের কনামাছি খেলায়
তখন দুচোখের বিস্ময়ে ভেঙ্গে যাবে অসম্ভব শব্দ,ভুলুণ্ঠিত জ্যোৎস্নায়
রৌদ্রের বিপরীতে ঝিলিকে ঝিলিকে উঠবে জীবনের চোখ হৃদয়ের অলিন্দে !
হঠাৎ ঝমঝম বৃষ্টির রাত্রি এলো নেমে রূপালি পর্দার মতো বৃষ্টিও ওড়ে 
বৃষ্টি আমার আঙুলের প্রতিটি ডগার দুঃখ মুঠোয় নিয়ে চলে যায় উড়ে 
রক্তের মতো বয়ে যায় জীবন অবিরাম অবিকল শব্দে ও শব্দহীনতায়!
কি দুরন্ত দেখ ভাঁজ খেয়ে উঠে আসছে হিমালয়, বুকের ভেতরে যেন
কেঁপে উঠছে অন্য এক বুক
দেখছি নিথর ফিরে আসছে ভালোবাসা দেখছি জন্ম নিচ্ছে নীল হৃদয়েরা
অতঃপর আসছো তুমি  জলের প্রপাতের মতো জীবন যৌবনের খেলা ঘরে !