বৃহস্পতিবার, ২১ জুন, ২০১৮

নাসির ওয়াদেন



নাসির ওয়াদেন

আমার বর্ষারাণী

বর্ষা তুই কাঁদিস্ কেন যখন তখন
গভীর জলে সাগর আঁকে  বৃষ্টি মিছিল
দখিন বাতাস বসছে এসে পুবের দ্বারে
ভিজল মাটি আবেগ খোলা জানলাগুলো
কালো মেঘের ক্ষতগুলো ওই রঙিন ছটায়
নগ্ন গরীব মাঠগুলো সব হাঁপিয়ে বাঁচে --

স্বার্থস্রোত ঢেউ তুলে যায় বাসযোগ্য খেলাঘরে
আবেগ এসে জড়িয়ে ধরে সোহাগ বালিশ
অলস দুপুর বিড়াল চোখে হাই তোলে
মেঘকন্যা ফেসবুকে ওই আকাশ আঁকে

বিচ্ছিন্ন পাটাতন খেলা করে আহ্লাদী জলে
সুখ স্থায়ী হলে মুছে যাবে কান্না-ধ্বনি
বর্ষারাণী আয় না দুঃখীর কান্না ধুয়ে
সুখের হাসি খিলখিলয়ে উঠুক জালে

চিলেকোঠা রোদ জেগে থাক মেঘের দেশে
বৃষ্টিধারা ঝড়ুক বুকের ক্লান্তি নাশে


          



নন্দিনীর প্রিয় চিঠি

সকাল থেকেই সোনাবৃষ্টি ঝরছে দেখে
ভাল্লাগেনা, আমার কিছুই ভাল্লাগে না
আকাশ বুঝি রাগ করেছে গুমরোমুখো
মৌসুমী গান গাইছে ডালে শালিকছানা
আমার ভাল্লাগে না, না, ,,,

আলের পথে শ্বেতবলাকার পদচিহ্ন
আঁকছে ছবি চোখের তারায় কাদামাটি
বৃষ্টি-বারুদ ঝরেই যারে পাথর বুকে
ধর্মজলে জোয়ার আসে, পাথরবাটি
ধানের আঁটি, সোনার কাঠি ----

নন্দিনী তোর ভালবাসার প্রথম চিঠি
উড়িয়ে দিল কালবৈশাখীর মিষ্টি ঝড়ে
মেঘদূত তুই আয় না বাছা কাগজ হাতে
আনলি খুঁজে এই সময়ে বৃষ্টি ভরে
প্রাণ অন্তরে ,অন্ধকারে ,,,,,,

বৃষ্টি চোখের অশ্রুধারা মাঠের উপর মাটির কোলে
লুকিয়ে থাকা হারানো সেই প্রেমের চিঠি
হাওয়ায় হাওয়ায় মিলিয়ে গেল সুখের বাসর
হাসছে চিঠি রোদ মাখানো বৃষ্টিচ্ছায়ায়
ঈশান কোণে ঝড় জমেছে, বাজা কাঁসর
প্রেমপত্র বৃষ্টি হয়ে শুধুই ঝরে -----

              





হারিয়ে যাওয়া

আমি হারিয়ে গেছি মনের কাছে মেঘের সাথে
যেখানে অনৈতিক যুদ্ধ লেগে আছে অন্ধকারে
বিশ্বাসের ভাঙা তরি বইছে নিয়তির উজানে

জগত মায়ার হলে বাস্তব কঠিন কীভাবে
পৌঁছে গেছে আলোরঙ ভোরের সকালে?
আলোছায়া সুতোর বুননে বাঁধি ভাগ্যের ভবিষ্যত   
হাওয়া ধরতে বেড়িয়েছে রুগ্ন ভাঙা চাঁদ --

বনেদি বাতাস এসে ব্যাকুল ভালবাসা ঘরে
সিঁদ কেটে চুরি করে তোমার পবিত্রতা
যেভাবে জোৎস্না চুরি গেছে মেঘের কাছে

একটু একটু করে স্মৃতির চারাগাছ বাড়ে
হারিয়ে যাওয়া শৈশবের মৃত মাটিপথে,,,,
                  
               





অন্তর্লীন কথা

ফিরে আসে মৃত্যুরা জীবনসাগর তীরে
ভারী বর্ষণ শুধুমাত্র ভুলায় পিপাসিত চোখ
গোধূলি বাতাসে ঝড়োআগুন জ্বলে
কেতকী, কদম্ব, কেয়ার বুকে বৃষ্টির সুখ

চারপাশে কোলাহল, সন্ধ্যা খোঁজে রাতের পিলসুজ
সাপের চোখের মতো পান্নারদ্যুতি ছড়ায় বর্ষার রাতে
ভোরের কুয়াশা যতো গভীর খাদে ভাসে
যন্ত্রণার ভাঙনের ইতিহাস হয়ে
রাধার আকুতি বাড়ে রাত্রিঘন পিচ্ছিল পথে

তেঁতুল গাছের গন্ধে অসুখের জিন গিলে আছে
মন খুলে কথা কেবলই বলতে পারো শিশুদের কাছে ।

           





চেতনা শরীরে উষ্ণতা

এসোআধফোটা গোলাপ,আমার উদ্বেগ
নিগীর্ণ জোৎস্নার আলো অম্লান হোক
তোমার বিষন্ন চুল উড়ুক এলোমেলো জলে

বাতাসের প্রতিবর্ত ডাকে রমিত যুবতী মেঘ
লাগামবিহীন বৃষ্টির ঘোড়া
দুঃখ দুর্ভর জীবনে দুর্যোগের তরবারি হানে --

অভাবের লাগাম টেনে ধরে ক্লান্ত শব্দগুলো
তোমার ছবি আঁকে রোদের স্বয়ম্ভর সভা
আমার অশরীরী শরীর যৌবনপাখির দেহে
অন্তর্লীন ভালবাসা খোঁজে, মেঘের ভাঁজে ভাঁজে

বৃষ্টিবাদল দিনে সখি চল্ তুলে আনি ব্যথাজল
বিজলি ঝরুক ফুলবনে, সারুক মনের অসুখ
শরীরে কী শুধুই আশ মেটে, চোয়ালে চোয়াল

যুবতীবৃষ্টি সাথে যাবি তুই, সাহচর্যে মিলনের সুখ