বৃহস্পতিবার, ২১ জুন, ২০১৮

সামসুন্নাহার ফারুক



সামসুন্নাহার ফারুক

উত্তরণের স্বরলিপি

উজান বেলার অধরা সুখের
সুশোভিত অঙ্গনে
প্রলুব্ধ সময় মশগুল ছিল
মহুল সম্মোহনে
নেশার খেয়ালে সোমরসে ডুবে
ছান্দিক উচ্ছ্বাসে
কেটে গেছে কত মাতাল প্রহর
আবিষ্ট অধিবাসে
আবেগ বিস্ফারে উতরোল মন
সুখের ঘরানা খোঁজে
উত্তরণের স্বরলিপিখানা
নাছোড় নিয়তি যোঝে

বিশুদ্ধ প্রণয় হরিণী দোলায়
আদি ঘোরে খেলে হোলি
তৃষিত হৃদয় বাসর সাজায়
প্রহসন দেয় তালি।
রাহুর বলয়ে দ্রোহে দিশেহারা
চর্যা নারীর অবয়ব
অভিজ্ঞানের ঋদ্ধ জমিনে
অগ্নি ঝরানো অনুভব।







জানালাটা খুলে দাও প্লিজ

পাতা ঝরার কাল সমাগত প্রায়
বসে আছি সূর্যাস্তের অপেক্ষায়
জীবনটা সত্যিই মোহময়
আমি নুতন ভোরের বিস্তার দেখতে চাই
পল্কা বাতাসে অরণ্যের গান শুনতে চাই
বাধা দিও না প্লিজ না বলো না।

শ্রাবণের ভরন্ত পেয়ালায় পাগলা আষাঢ়ী
নেমেছে দুর্দান্ত লয়ে
মৃত্তিকার শরীরে রূপালী কিংখাব
পার্কের বাতাসে উদাসী সন্ধ্যার কারুকাজ
ঘনায়মান অন্ধকারে মায়াবী আলোর রোশনাই
এমন অভুত সময় নিবিড় মমতায়
কে যেন ভালবেসে সুগন্ধি ছড়ায়
কে যেন ভালবেসে কবিতা শোনায়
আমার বড্ড ইচ্ছে করছে তাকে ছুঁয়ে যেতে।
ঝলমলে স্বপ্নেরা এখনো দ্যুতিময়
বাসন্তী পূর্ণিমা আমাকে জাগিয়ে রাখে
জীবনে আগামীকাল নাও আসতে পারে
এখনই সময়-
জানালাটা খুলে দাও প্লিজ
আমি বৃষ্টির গান শুনবো।







দীপ্তিময় ঠিকানায়

ইথারে ভেসে ভেসে
শব্দেরা নিঃশব্দে আসে
উঁকি দেয় পর্দার ফাঁকে
জুড়ে বসে লেখার টেবিলে
কলমের ডগায়
জোছনার সুগন্ধি সৌরভে
রাত্রির চারুকলায়
হিমাঙ্ক তাপমাত্রায়
একটুখানি উষ্ণতা পেতে চায়
খাতার পাতায় দ্রুত সেগুলো লিখি
লেখা হয়ে যায়

ভোরের উইন্ডস্ক্রীনে ডিম-কুসুম আলোক প্রভায়
ব্যঞ্জনার ইন্দ্রজালে সুন্দর অনুভূতিগুলো
হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত দ্যুতিময়
অভীষ্ট ঘোরে ডুবে যেতে যেতে দেখি
অপরূপ মুগ্ধতায়
শিল্পিত কবিতাটি নোঙ্গর করেছে
দীপ্তিময় ঠিকানায়।







আমি কবিতা হয়ে যাই 

অমন করে তাকালে
আমি কবিতা হয়ে যাই
শমিত আগুনে পুড়ি
স্মৃতির পসরা সাজিয়ে
রাত জেগে জেগে লিখি
লিখি পরম লিখি ভালোবাসা
সুনিবিড় সান্নিধ্য মুখোমুখি
নৈঃশব্দ্যের উচ্চারণে আঁকি
সমর্পিত হৃদয়ের নিখুঁত আলপনা
উষ্ণতার ইন্দ্রজাল মদির সম্মোহন
প্রতীক্ষার ফ্রেমে জলরঙা ছবি
প্রাণবন্ত বৈকালিক আড্ডায়
চিত্তহারী হৃদয়ের সৃজনী আভায়
তরঙ্গায়িত সুখ আছড়ে পড়ে
তুমল তীব্রতায়
দারুণ অগ্নিময় ক্ষণে নামে বর্ষণ
শুনি জীবনের কলধ্বনি
ভিতরে তোলপাড় উৎসব আয়োজন
সিক্ত হই তুমি আমি
আমরা দুÕজন
ধূমায়িত কফির পেয়ালায়
চোখে চোখ রেখে অমন তাকালে
ঘোর অমাতেও পুর্ণিমা ফোটে
আমি মনোময় কবিতা হয়ে যাই।







সুহিত লগন

প্রফুল্ল সঙ্গীতে
বিমুগ্ধ ভঙ্গীতে
গভীর প্রণয়
আদিম ঝড় তোলে নরম মুদ্রায়

সুহিত লগনে
সুগন্ধী স্বননে
নিভৃত আসরে
অজ্ঞাতে ভরে উঠি কানায় কানায়।