বৃহস্পতিবার, ২১ জুন, ২০১৮

শুক্লা মালাকার



শুক্লা মালাকার

কুপ্রস্তাব

পলাশরঙা বসন্ত পেরিয়ে

অভিমান থৈ থৈ বুকে শীত ভাসে

প্রথামাফিক জঞ্জাল পেরোচ্ছে সময়

স্তুপাকার হয়ে আছে

মেকি হাসি আর বনসাই প্রেম, 

নিজেকে উজাড় করে যাপন আঁকছে

বালিতে কচি কাঁকড়ার চলার ছবি।



এইসব নিয়ে যখন মন ভেঙে যাচ্ছে-

গাঢ় নীল আকাশে জীবন্ত স্থাপত্য হিমালয়

জীবনকে বেঁচে থাকার কুপ্রস্তাব দিয়ে গেল।



                          


ভাঙার শব্দ

কত বসন্ত পেরিয়ে তুই এলি

আমার চারপাশে কাঁচ ভাঙার শব্দ

টুকরো সময় জুড়ে জুড়ে যে সুর তুলেছিলাম

ভেঙে দিয়ে গেলি

বাক্সবন্দী রূপকথাদের ভাসিয়ে

গোপন খামে লুকিয়ে লুকিয়ে ভরছিলাম

বাস্তবতা

বৈশাখী ঝড় তুলে ছিঁড়ে দিয়ে গেলি।



এত কোলাহল, এত কলরব,

ভাঙার শব্দে জেগে উঠেছে লোকায়ত

নোনতা ঢেউয়ে ভেসে গেছে ভালোবাসা

এত টুকরো টুকরো কাঁচ, রক্তের ঝরে পরা

কুঁচিকুঁচি ছেঁড়া সম্মান, আলপিন, ভুলভাল করুণা

আমি একা জুড়বো কি করে?






ভালো

শেষমেশ চলেই গেল সে

সামাজিক ফাটলে দিব্যি বেঁচেবত্তে আছে

জাতিভেদ হিংসা নারকীয় উল্লাস

গোটা মানবতা জুড়ে ভীষণ আগুন,

অবশ্য কিছু সময় সে অপেক্ষায় ছিল

ভিতরের নদী, গান, ভেজাভেজা উৎসবী জীবনের

কিন্নর কন্ঠ শোনার আশায়

অপেক্ষায় ছিল,

অপেক্ষায় ছিল কোনো এক সূর্যরঙা দিনে ফুল ফোটাবে

বহু যত্নে যন্ত্রমানবদের শরীরে পুরে দেবে

রহস্যময় ভালোবাসা।

অথচ বিনাশহীন বর্বরতা অনু পরমাণুটুকুও ভাসিয়ে নিল



তাই, ডুবন্ত মানবিকতার ভাঙচুরের ছবি দেখতে দেখতে

সব ভালো একদিন চলেই গেল

চিনহটুকুও না রেখে হাজার বছরের পারে

চলেই গেল।





ডুবুরি


শরীরের প্রতিটি কোনায় বাজে পিয়ানো

কাধেঁ, ঠোঁটে, চিবুকে সপ্তসুর

ভিতরের বুনো ঝোঁপে তীব্র রেষারেষি

স্থুল কাম,অন্ধ ক্রোধ আর

উলঙ্গ ক্ষোভ

ডুবুরি সর্দার তোমার

অবিশ্বাস্য রূপান্তরের লোভ।






উত্তরাধিকার

হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল শৈশব

রক্তস্নাত দু পা ছড়িয়ে আতঙ্কে কাঁপছে কৈশোর-

একটা দূর্দান্ত রহস্যময় বদলের আভাস

একটি অনাকাঙ্খিত পার্থিব দোতারা এবার

সুরে সুরে জাগিয়ে তুলবে মাতৃত্ব,

অদ্ভুতভাবে বদলে যাবে পরিচিত সব দৃষ্টি

অবাধ্য রাক্ষসের মতো জীবন গিলে খাবে মেয়েবেলা

বনেদী উত্তরাধিকার সূত্রে গমরঙা শরীরে

মিশে যাবে নারী নারী গন্ধ-