শনিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৮

মিজান ভূইয়া



মিজান ভূইয়া

জলের যোগাযোগ

সংখ্যায় বেঁধে রাখা
নদীটাকে কেউ হয়তো
আকাশে বসে ডাকে.....
হয়তো নাম তার চাঁদ,
দু'চোখে জলের যোগাযোগ

সেইসব ডাকে ডাকে
মাঠের বিকেলে জ্বলে
পুরনো আগুন
চৈত্রের বাতাস বয়,
আমি ঝরা পাতা থেকে
তুলে আনি স্মৃতি!
চারিদিকে ভাঙনের গান.....
পৃথিবীর সিঁড়িগুলো
ডানা মেলে উড়ে যায়,
তখন পথের সন্ধ্যায় পাখি ডাকে
জীবনের জানালা দিয়ে
আমি শুধু কুয়াশা দেখি,
বেঁধে রাখা নদীটাকে দেখি।






নদীহীন ঘর

মাটির ঘরে
জলে ভেজা
আমারও কিছু দিনরাত ছিল।
চোখের খুব কাছে
ছিল পুঁইয়ের মাচা।
একটি ছোট পাখি
সারাদিন ডেকে ডেকে
ক্লান্ত হতো। এইরকম 
আমার কিছু ছেলেবেলা ছিল।
মাঠ ছিল। সূর্য ছিল.....!
মেঘের কম্পনে
বিজলী ও বিদ্যুতে
সন্ধ্যায় আমি নদীহীন হয়ে
ঘরে ফিরতাম!
তারপর
বহুদিন গেছে
সেই মাঠে আমি নেই,
সেই ফুল ও ফেরীঘাটে নেই। এ
খন আমার ঘর আছে।
ফুল, পাখি,
নদীহীন তুমিময় এক ঘর।








স্মৃতি ছুঁয়ে ভাল থাকি

শাড়ী পরিহিতা সেই এক নারী
গ্রীষ্মের বাতাসে রেখে যায়
কিছু দীর্ঘশ্বাস.....
তারপর থেকে নিজের নাম বদল করে
হৃদয়পালিত চাঁদ
বারান্দা ও বাগানে নামে আত্মঘাতী সন্ধ্যা,
বৃষ্টির ফোঁটায় জ্বলে
সাদা কিছু ফুল;
যদিও চোখের চেতনে পাখি ডাকে
কিছু দূর হেঁটে গেলে
আর কোন অভিমান থাকে না
শুধু শ্বাসকষ্টে পাতা উল্টাই
পুরনো জীবনে দেখি পুরনো নদী,
মন খারাপের শস্য তুলি ঘরে
এইভাবে নিজের ছায়া ছুঁয়ে ভাল থাকি,
স্মৃতি ছুঁয়ে ভাল থাকি
আর বদলে যাওয়া মানুষটাকে ডাকি।







রাত বাড়ে চাঁদ দেখি

ছড়িয়ে পড়া শহরে
শারীরিক সীমানা খোঁজে 
লাল একটি ফুল,
এতো দালানকোঠা
এতো চিন্তার ইট,
তাকালেই বেড়ে যায়
শ্বাসকষ্ট .....!
কে আমি ঘুমিয়ে থাকি
শহরের মোড়ে একা?
টের পাই পরিচিত গন্ধে
ফল বাজারে বৃষ্টি পড়ে
হেঁটে গেলে নদী বয়ে যায়,
বৈদ্যুতিক তারে বসেও
আর হয় না দেখাদেখি।
আকাশ মেঘলা হয় বসে থাকি
প্রাচীন যোগবিয়োগ মেনে
নিয়ে বসে থাকি, রাত বাড়ে
চাঁদ দেখি, ব্যথার ঔষধ খেয়ে শুয়ে থাকি।







বুকের বসন্তে

সামুদ্রিক জল গায়ে জড়িয়ে বসি,
বেলা চলে যায়।
রংধনু পাথরগুলো ডাকে।
মেয়েমূর্তির ছায়া হয়
উজ্জ্বল কিছু সময়।
ছেলেটা চলে যায়।
চোখ মেলে তাকিয়ে থাকে
পাহাড়ি ঝর্ণা।
হলুদ বিকেলের হাত ধরে
পাতা ঝরে।
মনের বয়স হয়।
ঝোপঝাড়ে পাখি ডাকে,
আমি তুমি একা হয়ে যাই।
দু'জনের চোখে থাকে সন্ধ্যার চাঁদ।
তবু বুকের বসন্তে  আজও
ফুল ফোটে, খুব কাছে নদী বয়ে যায়।