শনিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৮

পল্লবী দাস



 পল্লবী দাস

তমালিকা

চোখরাঙানো এক পলকে
পুরো ভবিষ্যৎ বদলে যাওয়াটাই
হয়ত টুঁটি চেপে ধরা ,
নিস্তেজ বসন্তে আর ফুল ফুটেনা,
শুষ্ক খুলা চুল উড়ে ,সঙ্গে চিঠিগুলোও
নামের আগে চন্দ্রবিন্দু বসে যায় ,
অতীতের মায়া কাটেনা ,
ক্ষতগুলো যে আজও অক্ষত ;
দাঁড়িপাল্লায় শুধু মাপঝোক চলে ,
সুখদুঃখের, তমালিকার গোছগাছের;
কোণার ঘরের তানপুরাটার তার ছিঁড়েছে
সে অনেকদিন ,
সুর উঠেনা , দিন চলে যায়,
নীল আকাশ কালো হয় ,সুর উঠেনা ;
বাপাশের ব্যাথাটারও কমতি নেই ,
এককাল ধরে একই তো সব ,
তুলসীর পাতা সব ঝরে গেছে ঝড়ে ,
আয়না ভেঙ্গে পায়ে বিঁধেছে ,
রক্তাক্ত চোখ ;
এর শেষ কোথায় ?
 






ভিটেমাটি

একটুখানি আগুনে হাত রাখো ,
তারপর পা দুটো,
আস্তে আস্তে তোমার সবটা আগুনে ঢেলে দাও ,
ঘিয়ের চিন্তা করো ন ,
অনেকেই আছে , ঢালবে ,

তুমি জলবে,
তোমার চুল থেকে শুরু করে তোমার স্বপ্ ,
তোমার হাজারটা দুর্ভোগের রাত ,তোমার বাস্তব,
তোমার তুমি ,সব জলবে ,
জলতে দাও -

যে ছাই হবে,
তা তোমার মাঠের  সার হবে,
এই  সার সোনা ফলাবে,
তোমার ভিটের সোনা,
তোমার আগামী !






মুঠোপ্রেম

তাকের উপর রাখা গ্রন্থগুলোর ব্যর্থতা
আর কেউ না জানুক,
মুদিওয়ালা বেশ জানে -
ইঁদুর আর ছাইপোকা ও জানে,
কত শব্দে কত দা ;
ভারে ভারে ডালা সাজিয়ে
 দিন ফুরিয়ে পান্তা আনে গ্রন্থের পাতাগুল ,
এক কালে বড্ড গ্রন্থপ্রেম ছিলো ,
প্রতি পৃষ্ঠায় প্রেম,
ঘুম আর আরশি ভাসত,
কিছুটা সাবেকিয়ানা পরকীয়া প্রেমের মত ;
আজকাল ওসব ছেয়ে গেছে দৌড়ের সাঁতারে ;
এখন তার চেয়ে বরং মুঠোফোনে
ইচেছরা দাপাদাপি করে,
ঘেমে নেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে!
            






নামহীন

কেমন যেন খটকা খটকা  লাগছে,
নো পার্কিংয়ে গাড়ি ঠেকিয়ে
চুরুটে দু একটা সুখটান দিয়ে
লোকে জীবন কমায়, হাসে,
এখানে ঘিমাখা ভাতেও থালা ফুঁটো,
জল চুইয়ে বন্যা আসে,
নিজেদের  অপারগম্যতা ভাসে;
বেসামালগুলো পূজোর বাহানায়
আরও দুএক পশলা বেসামাল হয়,
পারলে মন মস্তিস্ক সব থেঁতলে দেয়;
স্বপ্নে কবিতা লেখা হয়,
চোখ মেলে জলের ঝাপটায় স্বপ্ন ধুয়ে যায়;
গণিতের খাতার ভাঁজে ভাঁজে অগণিতের মেল ,
শুষ্ক বুকে আলতার প্রলেপ দেয় এরা;
এখানে ফুল ছিঁড়ে টাকার গাছ লাগিয়ে 
নিজেকে ভৃত্য প্রমাণ করা হয়,
চারধারে যে কৃষ্ণকলি উত্সব চলছে ,নাচ হচেছ ;
দুর্দশা, প্রচন্ড দুর্দশা!







ধ্রুবতারা

তিয়াসের আকাশে অক্ষত,
সোনালী ধ্রুবতার, অনড় অটল,
মৃত্যুর পরও গরিমায় ঘেরা,
ধ্রুবতারা নির্জনে রক্তাক্ত তর্জনীর 
নিরঞ্জন ঘটে, কোনো অধিবাসের সন্ধিকালে,
মুখ বন্ধ, হাঁটুতে জল,
গড়িয়ে যায় আগুন, চোখের সমান্তরালে -
প্রেয়সীর হাতের ছেঁড়া পাঁপড়ি
চিবুক জোড়া লাগাতে ব্যস্ত,
অপার প্রেম বইয়ের মলাটে মালতি চাঁপার গন্ধ,
হাতছানি দেয় দূরে বাধা ক্যাকটাসের শুকনো কাঁটাকে,
ব্যর্থ, স্পন্দন ব্যর্থ, রূপের পসরা দরদামেরর হাঁড়ি বানায়,
ঠুনকো তোমার স্থিতি ,ঠুনকো তুমি তার ,
ক্ষয় হতে হতে হাতের রেখা বিলীন,
নকল বাদামি রঙে হাত আঁকে,
রাতকে খামে ভরে ডাস্টবিনে ঘুম পাড়ায়,
ধ্রুবতারা ,আর ডেকোনা-
তুমি বিকলাঙ্গ, তিয়াসের আকাশে