মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০১৬

মঈন চৌধুরী




বৃষ্টিতে বর্ষায়
মঈন চৌধুরী
ভেসে যাচ্ছেতো সব, ভাসছে পৃথিবী বৃষ্টি হয়েছে খুব
খরকুটো, পথ, বৃক্ষের শাখা বিড়ালের পচা লাশ,
দুধের কৌটা, তরিতরকারি বিষ্ঠা মেশানো পানি
ভেসে যাচ্ছেতো সব, ভাসতেই হবে বৃষ্টি হয়েছে খুব।

হঠাৎ করেই খুঁজে পাচ্ছি না পাইনি যাহাকে খুঁজে
তবে কি তাহাও ভেসেই গেল বৃষ্টিকে ভালবেসে ?
হতে তো পারেই, ভেসেই গেছে আমারই অবিশ্বাস
পাইনি খুঁজে যে বায়ু তরাসে ভেসেছে তাহারই লাশ।

ভেসে গেল সব, ভাসতেই হবে ভাবছি বিলাপে হায়,
আমিও কি তবে ভেসেই গেলাম বৃষ্টিতে বর্ষায়?







হঠাৎ বৃষ্টি এই দুপুরে
মঈন চৌধুরী

এই বৃষ্টি, এই দুপুর বেলায় তুমি আবার এলে
আজ মনে হয় ভালবাসার সমুদ্র নিয়ে নেমেছো,
হঠাৎ প্লাবনে ভাসিয়ে নিচ্ছ সব
কী যে তুমি! আমার বাগানের ফুলের পাপড়িও
অযথা ঝড়িয়ে দিলে।

শোন বৃষ্টি, একটা কাজ করতে পারবে?
আমাদের সব বাগানের আশেপাশে
কতক ডাইনী আর দানব এসে বাসা বেঁধেছে,
ওরা বলছে বাগান তাদের বাবার আমল থেকে।
তুমি কিছু করতে পারবে?
আমরা সবাই আমাদের বাগানের জন্য কাঁদি।

বৃষ্টি মেয়ে, তুমি বঙ্গোপসাগর চেন?
যদি চেন তবে এইসব ডাইন ও দানবদের
ভাসিয়ে নিয়ে যাও জলজ মৃত্যুর দ্বীপে,
আমরা আমাদের বাগানে রুমঝুম শুনে ভিজি
তুমি ইচ্ছে করলে ভালবাসায়
দুএকটা ফুলের পাপড়ি ঝরাতে পার।







ঝড়ের আগে
মঈন চৌধুরী

একটু পরে আসবে ঝড়, চুল খুলে দাও
উড়তে থাকুক স্বপ্নমেঘ প্রিয় রাত্রির মত,
যদি জল পড়ে পাতা নড়ে টুপটাপ তবে
ভিজে যেতে রাজি আছি সমুদ্রে আমার ।

চুল খুলে দাও তুমি এই সুনামির আগে
উড়ন্ত অক্টোপাসের নৃত্য দেখি আজ,
সমুদ্র গহীনে ঐ শেওলা নিবাসে থেকে
ঋদ্ধ মাছের চোখে দেখি প্লাবিত আকাশ।

দেখাও রাত্রি আরও, দেখি জোনাকির নাচ
উড়াও সুখ, তুমি চুল খুলে দাও,
ঝড়ের আগেই দেখি মেঘ আঁধারের সুখ
প্রতীকের মাঝে থেকে তুমি জীবন দেখাও।







বাংলাদেশের মেয়ে
মঈন চৌধুরী

তুমি বাংলাদেশের মেয়ে,
কতো ঝড়, কতো টর্নেডো, কতো সাইক্লোন আর কতো যে প্লাবন দেখেছ।

এখন আমি নিজেই যখন এই শ্রাবণে ভাঙতে চাইছি, ডুবতে চাইছি, ভাসতে চাইছি
তুমি চুপ করে আছ চৈত্রের মতন!

কি আশ্চর্য তুমি!






অতিপ্রাকৃতিক
মঈন চৌধুরী

অতিপ্রাকৃতিক হয়ে গেছি।
বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করি,
বৃষ্টিও নামে,
ভিজে যায় পথঘাট, নষ্ট শহর,
রক্তের দাগ মুছে যায়,
কিন্তু তুমি আর আমি ভিজতে পারি না।

সত্য বলে, আমরা এখন এমন একক
চোখের জল ছাড়া আর কোন প্লাবনে ডুবি না।