মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০১৬

তৈমুর খান



তৈমুর খান

জলীয় প্রশংসায় ভিজে গেছে নৈঃশব্দ্য মৈথুন
________________________________________
বহু যৌবন খরচ হয়ে গেছে নদীর
এখন শুধু বালি
বালিতে আমরা পদচিহ্ন রেখে যাই

হাহা নৌকা অপেক্ষায় আছে
মাঝি ভেসে গেছে
সমস্ত সকাল জুড়ে কুমারী রোদের দুধ ঝরে

কোথাও শ্লেষ নেই
নির্মেদ শরীরে আমাদের বাক্যগুলি
যাতায়াত করে

যদিও ঘরকন্না আছে
তবু কারও ঘর নেই
ভাত ফুটছে মেধাবী তাপে
আমরা আগুন বলে ডাকি

এসো ঠোঁট, উপোসী কাজল
চোখে চোখে বসো
আজ চুম্বন আসবে
রাস্তা ছাড়ো,
রাস্তায় কোনো বৃংহণ রেখো না

জলীয় প্রশংসায় ভিজে গেছে
আমাদের নৈঃশব্দ্য মৈথুন
প্রসবকালের সংবাদ ঘুরেফিরে আসে  ।







অসম্ভবকে সম্ভবের আয়নায় দেখা
_______________________________
শত্রুর ঘরে এসে বসেছি বন্ধুর মতো
শত্রু কি জেনে গেছে সব  ?
আলোতে দেখা যাবে না আমাকে
আমার ভেতরে বেঁচে আছে নষ্ট অভ্যাস

বাঁকা চোখ , ঝাপসা বিকেল
বৃষ্টির উপক্রম
সুস্বাদু কথার পর যদি চা জুটে যায়  !

কিছু বিরল সাধনা খুঁটে খুঁটে
দার্শনিক হয়ে যেতে থাকি
সেখানে শত্রুও বন্ধু
মৃত্যুও ভালোবাসার গান

বাদবাকি যেটুকু সময়
যেটুকু বাঁচার বিনয়
অসম্ভবকে সম্ভবের আয়নায় দেখা
যা থেকে সত্য ও মিথ্যার দূরত্ব মুছে যায়

রাত্রির অন্ধকারে যদিও রঙের জলবায়ু
খেলা করে
আত্মারা পরে তাদের নিজস্ব পোশাক

স্বয়ংক্রিয় বিশ্বাসের ঘরবাড়ি থেকে
আমাদের হুলোহুলি  অলৌকিক বিলাস
সৌজন্যের বহির্মুখে হাসির ফোয়ারায়
আমরা নিষিক্ত হতে থাকি ঝরনার মাছ   ।







আকাঙ্ক্ষার ঘরের জানালা
__________________________
স্বপ্ন সব স্বপ্নে থাকুক
রোজ রাতে ক্ষুধার্ত বেড়াল ডাকে
আকাঙ্ক্ষার ঘরের জানালা খুলে দেখি
কৃষ্ণ পক্ষের চাঁদ গলে গলে নামে
আকাশে পেন্সিল দিয়ে কারা গেছে লিখে
সহানুভূতির জ্বর
শুনশান ঘরদোর কাঁপে

প্রেমিকা পরিরা সব উড়ে যাচ্ছে দূরে
তাদের গোলাপি ঠোঁটে মাধুর্য ঝরে
জ্যোৎস্না লেগে থাকা ডানায় ঘুমের আভাস
কুয়াশায় ঢেকে যায় স্বপ্নের উল্লাস  ।







আমাদের গল্প শুরু হোক
______________________
ভাঙা নৌকায় জীবন বিকশিত হতে চাইছে
একখণ্ড মেঘ মাথার ওপর উড়ে এসেছে আজ
আমাদের গল্প শুরু হোক

এপার ওপার নদীতীর
মুঠো মুঠো কোলাহল ছড়িয়ে দিচ্ছে
সময়রঞ্জিনী
নৌকা ভাসাও জলে
যতদূর যেতে পারে যাক

ঘোমটার আড়ালে সব মুখ
কথা বলতে চাইছে এখন
কিছুটা সাহস দাও
স্বাবলম্বী ছায়া দীর্ঘ হয়ে পড়েছে জলে
ভাঙা নৌকা ভেসে যাচ্ছে মনসামঙ্গলে
চারিদিকে থইথই সাপ
ফণা তুলে দুলছে জলঢেউ
বৈরাগ্য চাইনি তো কেউ
বাসা বেঁধে নিচ্ছে সবাই মরীচিকাতেও

যতটুকু গল্প হবে হোক
গল্পের বহু সন্তানসন্ততিতে ভরে যাচ্ছে দেশ   ।






দু একটা আলোর ইচ্ছারা মোরগ হয়ে ডাকে
_____________________________________
অসুখবিসুখ এসে দৈর্ঘ্য প্রস্থ মেপে নিচ্ছে
কোথায় আমার ঘর হবে
কোথায় বসবে আমার পোষা পাখি
আর না থাকা শূন্যতাগুলি কোথায় গড়াবে
সব আলোচনা করে নিচ্ছে তারা এসে

আমি সস্তা হয়ে যাচ্ছি এখন
আমার দৈব এসে খড়কুটো পেতে দিচ্ছে আমাকে

জিরিয়ে নিতে নিতে দেখি
কত জল গড়ছে
জলে ভেসে যাচ্ছে একান্ত ছায়ারা
কোথাও সতর্ক বাঁশি নেই
ইশারা অস্পষ্ট হয়ে গেছে
কে কাকে বোঝে  ?

অবুঝ শব্দেরা প্রণয়-প্রণয়়ী
অনন্তের বারান্দায় পাঁয়চারি করে
দু একটা আলোর ইচ্ছারা মোরগ হয়ে ডাকে
সমস্ত অসময় ধরে বাজতে থাকে ভোরের ব্যঞ্জনা   ।