শনিবার, ২১ মে, ২০১৬

সাঈদা মিমি




আমাদের বৈশাখ
সাঈদা মিমি
আমাদের বৈশাখ জলশূন্য-
মেঘদেবতার গীত গেয়ে
চাল-ডাল-নুন-তেল ভিক্ষা করি
পরমান্ন রাঁধি, খোলা মাঠে
পাতার ডালিতে রেখে
অভূক্ত কুকুরদের ডাকি।
আমাদের বৈশাখে মেঘঘ্রাণ আসে
কোনদিন বলবো না
মানুষকে বিশ্বাস দাও,
বিশ্বাসে অন্ধ বাঁচো;
বাঁচার কান্না শোনো






বাবার সাইকেল
সাঈদা মিমি

শখ ছিলো সাইকেল চালানোর---
টি বি' মাঠে অনুশীলন,
ওখানে দু'টো টি বি হাসপাতাল
মাঠের কোনায় হাঁড়জাগা
মানুষগুলো সারাদিন কাশতো, সঙ্গে অপেক্ষা...
'
এখন যক্ষা হলে মানুষ মরে না!'
নিশিকান্ত কাকা কে বলেছিলাম.....

সাইকেল চালানো শেখা হলো না, কব্জি
ভাঙলো, বাবার সাইকেলের অন্তিমদশা...
দস্যিপনা ছাড়বি? ছেড়ে দিয়েছি

বাবা সাইকেল চালিয়ে বাজার রোড
হয়ে চকবাজার যাচ্ছেন,
আমি সাইকেলের রডে; দিনগুলি ঘুমিয়েছে...




চৈত্র সংক্রান্তির মেলায়
সাঈদা মিমি

চৈত্র সংক্রান্তির মেলায়
অস্থির যে মানুষটা এসেছিলো,
আমি তাকে
বুঝে উঠতে পারিনি
এমন নয় যে,
বসন্তের বাতাস
রেণু বয়ে আনেনি!
এমনও নয়, যেন
আমি নেহায়েত বালিকা!
কেবল,
ঘুড়ি ওড়োনোর নেশায়
মত্ত ছিলাম






সাঈদা মিমি
পোস্টাপিসটা
ছয়টা সংযোগপথ ফেলে
আরো কিছু দুর
বয়স্ক গলির মুখে, পোস্টাপিসটা কই?
চিঠিটা হাতে নিয়েই ঘুরতে থাকি

মনের ফেরিওয়ালা হাসপাতালের
বার্ণ ইউনিটে ধুকছে, প্রভুদর্শনে
যাই, এখানে বড্ড স্বজনপ্রীতি! বেলাগুলি
এত তাড়াতাড়ি খসে যায়? মতিভ্রম রাত...

চিঠিটা! ফেরেশতা এসে মনোলোভা
কথা বলেন, তখন কি যে হয়! একটি
দগদগে তাতাল কিংবা কয়লার উনুনে
ঝলসানো তামার ডেকচি, সব ভস্ম করে দেবো

হায় ঈশ্বর, আমিতো কেবল একটা শরীর নই!






নিরুত্তাপ ঈশ্বর বিশ্রামাগারে
সাঈদা মিমি
(এলী এলী লামা শবক্তানী:
ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার,
তুমি কেন আমায় পরিত্যাগ করিয়াছ?
:
মথি)

ঘর নয়, পূনর্বাসন-- সীমান্তের
মানুষেরা অস্থায়ী জঞ্জাল থেকে
তুলে নেয় শঙ্কা হাজার, ভাঙা ভাঙা
নিঃশ্বাস
কেঁপে ওঠে বর্গীর ক্রোধে, প্রতিমার
চোখে কোন ভাষা নেই! নরকদর্শনে!!
জল পুড়ে ভস্মমেঘ
নিরুত্তাপ ঈশ্বর বিশ্রামাগারে






নাচঘর 
সাঈদা মিমি
নাচঘরের কিছু রহস্য থাকবে--
জানালায় লাল-নীল কাচ,
সুরুপা ঝালর, অর্ধেক আলোর
ঝাড়বাতি, নর্তকীর গাঢ়
প্রলেপের খাঁদ বোঝা যাবে না...
বাবুর তাকিয়ার পাশে
আঙুরের শরাব, ব্যাকগ্রাউণ্ডে
ঝংকার, "মোহে ছে-এড়, ছেড় পিয়া"
তিনশ বছরের ধূলোয় পিতলের
নূপুর পড়ে ছিলো; অগ্রন্থিত.....