শনিবার, ২১ মে, ২০১৬

পৃথা রায় চৌধুরী




স্পৃহা
পৃথা রায় চৌধুরী
জীবন্ত ভিসুভিয়াস কোলে বসে আছি
দশ মাস অপেক্ষারত নারী,
আঁচলে জড়িয়ে ধরেছি তিলতিল বেড়ে ওঠা
কন্যা রক্ত, কন্যা মাংস, কন্যা মজ্জা,
কন্যা স্পন্দন, কন্যা ধমনী।


ছোট্ট ছোট্ট দুহাতের বেড়ে দেখেছ মায়া?
কন্যা মুখের খই ফোটা বুলি,
প্রতি শ্বাসে মরুঝড়,
ঢেকে যায়... ঢেকে যায় মাতৃদায়
আলো হও আঁধার, শুধু একবার...
যদি চীৎকার করে বলি?


সদ্য একাদশী বাক্‌হারা দৃষ্টি
মেলে দেয় প্রশ্নপত্র
বিশ্বাস করতে পারি?


হে পরমপিতা,
"বাঁচতে চা মেয়ে", বলে মারলে...
... কেন?






ফলাফল
পৃথা রায় চৌধুরী
শব্দ শব্দ করে তোমার প্রতিটা বাক্য মুখস্থ করায়
অনেকখানি জুড়ে শুন্যের চিন্তায় জমাট রক্ত
যেখানে খাদের গভীরতা খুঁজতে উন্মুখ নিঃশ্বাস,
চূড়ায় বসে কিছু অবাক মেঘ গুনগুন করে ওঠে
আত্মাহুতির অপর নাম আঁকড়ে থাকা।


বুড়ো বটের নিচে বিকেল হয়ে আসা রঙ
ক্রমশঃ সেপিয়ায় বদলে যেতে যেতেও
বন্ধ চোখের পাতায় লেখে,
এটুকুই মনে আছে, বাকি গান ভুলে গেছি;
পরিপূরক এক ঝলক চৈতালি
কানে শন্‌শন্‌ পরিয়ে ধরা দিয়ে গেছে মোবাইল রেকর্ডারে।


এক হাতে ক্যামেরা, অন্য হাতে অচেনা হবার অঙ্গীকার...
এক যুগান্তকারী দুর্ঘটনার অপেক্ষায় ধরেছি অবরোহণ।







রণ বসন্ত
পৃথা রায় চৌধুরী
বেশ ছড়ানো ছেটানো নারকেল পাতা করে ফেলেছি নিজেকে
ওপর দিকে মুখ তুলে নামিয়ে এনেছি হাট ভরা চাঁদ;
শেকল বাকল পরিপক্ব হয়ে এলে, তাদের ঢেউ গুনে গুনে
খামে ভরে, খুঁজি ফেলে আসা কোন কালচে সাদা দেওয়ালের
পোস্ট অফিস, কিছু গঁদ চিটচিটে আঙ্গুল ছাপে মায়ার ফাঁদ।

শেকড়বাকড় জলপ্লাবন দেখতে চেয়ে ফুটপাথে ফিরি হয়ে
এখন তাবিজ, এক্সেল শিট ভর্তি জীবন পেলাম ক্রমিক...
ঈশ্বর, জীব অথবা জিভ যা হোক একত্র করে বলতে পারো
আজও কিভাবে তোমার মরুভূমি জুড়ে বৃষ্টি নামানোর স্পর্ধা
একমাত্র ধরে আছি? খাঁজে খাঁজে বয়ে চলো শূন্য সৈনিক।

ঝুলবারান্দার একাংশ জুড়ে তাকাও পুনর্বার...
চেয়ে দেখো, নিশ্চিহ্ন ছাপ আকাশী স্রোত ধরে
সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে,
ধ্বংস নগরীর পলাশ।






আপেক্ষিক
পৃথা রায় চৌধুরী
হালকা পায়ে উড়ে এসেছি
সামান্য টানেই,
পড়ন্ত বিকেল সতর্ক করে গেছে
আলো রাখ কিছু সন্ধ্যের কোলে।


জায়গা বদল কোন অচিন ডাকের
কাণ্ডারি, তোমার আদেশ মানে কে?


কখনো ঘাসফুল মাঠ
গড়িয়ে ট্রামলাইন, সাথে
দৌড়ময় বসন্তগন্ধ...


শহরস্মৃতি ছিল না কস্মিনে
কিছু খাপছাড়া হঠাৎ কুড়িয়ে
এক খুশি নির্জন ভরে তুলি।


সহস্র বছর সমুদ্রে বসে
স্থবির সময় দেখি,
হাত নেই পা নেই;


জন্মকান্না বসন্তেও সমান
সেই সপ্তম অষ্টম ঋতুর
মরণকালীন।






আগুন সুর
পৃথা রায় চৌধুরী
সমস্ত মাঠ চেনা গাছে ভরে গেছে
অচেনা হবো বলে একফোঁটা দীর্ঘশ্বাসও
সাহায্যের জন্য ঝড়তিপড়তির দলে নেই
কোনো মানে হয়, কোনো মানে হয়
ধার না ধেরে, প্রতি ঠোঁটের বাঁকে
আগুন খুঁজে নেওয়া।


এই যে এলে, নাকি এলে না,
বুঝে ওঠাকে মুহূর্তে সাবাড় করে
চাঁদ এক থালা রোদ আগলে বসে থাকে;
পুড়তে পুড়তে বলতে থাকো
আহা জোছনা! শরীর বেয়ে নামো
এহ বাহ্য... সবই প্লেটোপনা।


বসন্তরাগ বায়নাক্কা খামচে

সরাসরি চোখজ্বালা গেয়ে যায়...