শুক্রবার, ২১ জুন, ২০১৯

শ্রীকণ্ঠ


শ্রীকণ্ঠ

রেনিডে এ্যান্ড ক্লাউডি মাইন্ড

                    ১)
                    
ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এলেই আমার মনে বিরহ জাগে
ল্যাটেরাইট মনে চকমকি ঠুকে অলস আলোয়
অনুভব করি তোমার উপস্থিতি
প্রত্যাশা গেঁথে মালা করে ঝুলিয়ে দিই তোমার মূক পিকচারে

                      ২)

বৃষ্টির কণা অশ্রু হয়ে গড়িয়ে পড়ে চিবুকে
ঝুলবারান্দায় বৃষ্টির ফোঁটা মুছতে মুছতে
মুছে ফেলছি তোমার চৌকাঠ পেরোনো পা
                        
                          ৩)
                            
মেঘ করলেই মনের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ওঠে
ল্যাম্পপোস্ট ভেঙে অন্ধকার ডেকে আনে মাথার নীচে
বজ্রপাতে পায়ের মাটি সরে যায়
কার্যত তারপর আমি ঢুকে যাই বৃষ্টির ভিতর








আক্ষেপ
                 
দমকা হাওয়ায় হঠাৎ নিভে আসে দুপুর
এলোমেলো মনে শ্রাবণের দারুণ বর্ষণ

মুহূর্তের ফালাফালা আলোয় ভেসে ওঠে তোমার শরীরী বিভঙ্গ
তুমি ভিজতে থাকো জানলার চতুষ্কোণ বর্গক্ষেত্রে

দরজা হাঠ করে মেঘ নিতম্ব ছড়িয়ে রাখে গোমরা ঝুলবারান্দায়
সিলিং বেয়ে তোমার চুল থেকে ঝরে পড়ে গুমোট চিকুর

পা দুটোকে কার্নিশে তুলে এনে তোমার মেঘলা কবন্ধ
খাড়া হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টিচ্ছায় চৌকাঠে

এলোমেলো মনে শ্রাবণের দারুণ বর্ষণে
আমি দেখতে পাই তুমি ক্রমশ মেঘ হয়ে উঠছো
আর তোমার পুঞ্জীভূত আক্ষেপগুলো
বৃষ্টি হয়ে ভিজিয়ে দিচ্ছে আমার অন্তরের চারণক্ষেত্র



                   





কল্পতরু

কল্পতরু হয়ে তুমি ঝরে পড়ছো
জ্যৈষ্ঠ যে ভাবে জিরাফের মতো ঘাড়ের কাছে শ্বাস ফেলছিল
তুমি তাকে অনেকটাই স্তিমিত করেছো
ধরণিধর লেনে
সানস্ট্রোক হয়ে পৃথিবী যখন মূর্ছিত
তুমি এসে গালে জল দিলে
তার বুকের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক করলে

তোমাকে এত ঘনিষ্ঠভাবে কখনো দেখিনি
আর দেখিনি বলেই তুমি যখন আমার বাড়ির পাশ দিয়ে
নূপুর বাজিয়ে কচি কলাপাতা রঙের শাড়ি পরে হনহনিয়ে চলে যাও
কাদা প্যাচপ্যাচে মনে আমি তোমায় শাপ-শাপান্ত করতে থাকি
অথচ কখনো তোমার ভিতর দিয়ে দৃষ্টি চালানোর কথা ভাবিনি
যেমনটা ভাবিনি তোমার কারণেই ধরিত্রী এত ঘনঘন দীর্ঘশ্বাস ফ্যালে
কিংবা বনস্পতি অপলক ভাবে চেয়ে থাকে মেঘপরিদের দিকে

আজ এই দুপুরে সূর্য সেন ক্রশ করে যখন বাদল সরকার লেনে পৌঁছলাম
দেখলাম তুমি কচি কলাপাতা রঙের শাড়ি পরে ঠায় দাঁড়িয়ে আছো
আর তোমার ভিতর দিয়ে দৃষ্টি চালিয়ে দেখি
ধরিত্রী, বনস্পতিরা নিরাময় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে